দলীয় মতবিরোধের জেরে ভেস্তে গেল বিএনপির বিক্ষোভ কর্মসূচি

S M Ashraful Azom
দলীয় মতবিরোধের জেরে ভেস্তে গেল বিএনপির বিক্ষোভ কর্মসূচি

সেবা ডেস্ক: বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবিতে ২১ জুন বৃহস্পতিবার সারাদেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলটি। উল্লেখ্য এতিমের টাকা আত্নসাৎ করে গত ৮ ফেব্রুয়ারী থেকে আদালত কতৃক সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কারাবন্দি আছেন বেগম জিয়া। ইতোমধ্যে খালেদার জামিনের জন্য উচ্চ আদালতে আবেদন করেও বেগম জিয়ার আইনজীবীদের ব্যর্থতায় জামিন পাননি বিএনপির চেয়ারপারসন। এছাড়া খালেদা জিয়া কারাবন্দি হওয়ার পর থেকেই বিএনপির পক্ষ থেকে খালেদাকে গুরুতর অসুস্থ দাবি করা হচ্ছে। যদিও কারা কতৃপক্ষ বিএনপির এই অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছে।

তবুও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির অভিযোগের প্রেক্ষিতে খালেদাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো হয়েছে কারা কতৃপক্ষের পক্ষ থেকে। বেগম জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষার রিপোর্টেও উদ্বিগ্ন হওয়ার মত কিছু নেই বলে জানিয়েছে কারা কতৃপক্ষ।

অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষকের মতে রাজনৈতিক সুবিধা আদায়ের লক্ষ্যেই মূলত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি এই বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল।

এদিকে বিক্ষোভ কর্মসূচি নিয়ে দলের মতবিরোধের জের ধরে তা সফলতার মুখ দেখেনি। দলীয় সূত্রে জানা গেছে তারেক জিয়ার পরামর্শে রিজভীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির সিনিয়র নেতাদের একটা গ্রুপ বিক্ষোভ কর্মসূচির বদলে সহিংস আন্দোলনের পক্ষে মত দিয়েছিল, কিন্তু দলটির মহাসচিব ফখরুল সহিংস আন্দোলনের পরিবর্তে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচির পক্ষে মত দেন। এসময় ফখরুল উল্লেখ করেন ২০১৪ সালে সহিংস আন্দোলনের নাম পেট্রোল বোমা মেরে মানুষ হত্যা করার কারণেই জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বিএনপি। এখন আবারো সহিংস আন্দোলনের নামে জ্বালাও পোড়াও কর্মসূচি হাতে নিলে জনগণ সম্পূর্ণরূপে বিএনপিকে প্রত্যাখ্যান করবে। ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশের রাজনীতি থেকে বিলুপ্ত হয়ে যাবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি।

এসময় রিজভী ফখরুলকে তারেকের নির্দেশের কথা স্মরণ করিয়ে দিলে ফখরুল তারেকের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, তারেক সাহেবের পরামর্শমত কর্মসূচি গ্রহণ করার ফলেই আজ দলের এই দূরবস্থা। এসময় দলের অধিকাংশ নেতারা ফখরুলের কথায় সম্মতি প্রকাশ করলে তারেকের নির্দেশ অমান্য করে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনের নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় দলীয়ভাবে।

এদিকে দলের বৈঠকে মতবিরোধের খবর তৃণমূল পর্যায়ে ছড়িয়ে পড়লে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় তাদের মধ্যে। দলের এই মতবিরোধের ফলে অনেক নেতাকর্মীদের মনোবল ভেঙ্গে পড়ে। একাধিক তৃণমূল কর্মীর সাথে কথা বলে জানা যায়, তারা যেখানে দলের চেয়ারপারসনের মুক্তির লক্ষ্যে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য কেন্দ্র থেকে সুনির্দিষ্ঠ দিক নির্দেশনা পাওয়ার অপেক্ষায় ছিল, সেখানে কেন্দ্রের নেতারা নিজেদের মধ্যে কোন্দল নিয়ে ব্যস্ত। দলের জন্য এটা খুব হতাশাজনক।

এদিকে রাজধানী সহ সারাদেশের গণমাধ্যম কর্মীদের বরাত দিয়ে জানা যায়, চোখে পড়ার মত জনসমর্থন ছাড়াই এক প্রকার ঢিলেঢালাভাবেই বিএনপির বিক্ষোভ কর্মসূচি শেষ হয়েছে। বিএনপির অধিকাংশ নেতাকর্মীরাই সক্রিয় ভাবে এই বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেনি। শুধুমাত্র বিএনপির কিছু নেতাকর্মীকে ফখরুল এবং রিজভীর নেতৃত্বে দলীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে দেখা গেছে।

এদিকে তারেক জিয়ার ঘনিষ্ঠ সূত্র থেকে জানা যায়, তার নির্দেশ অমান্য করে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করায় ফখরুল সহ দলের সিনিয়র নেতাদের উপর ক্ষোভ প্রকাশ করেন।



ট্যাগস

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top