
সেবা ডেস্ক: খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আগেই বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি তাদের ভরাডুবি বুঝতে পেরেছিলো। নির্বাচনী ফলাফলে তাদের ধারণা সত্য প্রমাণ হয়। এমতাবস্থায় খুলনার মতো গাজীপুর সিটি নির্বাচনে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এনে কেন্দ্রীয় ও গাজীপুর বিএনপির শীর্ষ নেতারা নির্বাচনে পরাজয়ের শঙ্কায় ভীত বলে জানা গেছে। পরাজয় আতঙ্কেই নেতারা গাজীপুর সিটি নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে নানা রকম বক্তব্য দিচ্ছেন বলেই মনে করছেন রাজনীতিবিদরা।
বিএনপির অনেক নেতাই বলেছেন, গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন দেখে বিএনপি সিদ্ধান্ত নেবে- তারা সংসদ নির্বাচনে যাবে কি না। অন্যদিকে সম্প্রতি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ বলেছেন, গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন যদি খুলনা স্টাইলে করা হয়, তার পরিণতি ভয়ংকর হবে। যদিও খুলনা নির্বাচনে পরাজয়ের পর বিএনপির নির্বাচন কেন্দ্রীক অনিয়মের অভিযোগ ধোপে টেকেনি। কেননা, গণমাধ্যমের নিরপেক্ষ বিভিন্ন সংবাদে খুলনা নির্বাচন সুষ্ঠু নির্বাচন হিসেবেই বর্ণিত হয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, খুলনা নির্বাচনে বিএনপির পরাজয় তাদের অন্তঃকলহের ফল। খুলনায় নির্বাচনী প্রচারণার শুরুতে বিএনপি অভিযোগ তোলে, তাদের নেতাকর্মীকে আটক করে নিয়ে যাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সে অভিযোগ পরে মিথ্যা প্রমাণিত হয়। পরে তারা অভিযোগ করে, নেতাকর্মীরা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ভয়ে বাড়িতে থাকতে পারছে না, কীভাবে তারা নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেবে? সেই অভিযোগেরও সত্যতা পাওয়া যায়নি। এর ফলে বিএনপির অভিযোগগুলো থেকে তারা কোনো ফায়দা হাসিল করতে না পারলেও দলের তৃণমূলের কাছে সেগুলো আতঙ্কের কারণ হয়ে দেখা দিয়েছে। আর তাই নির্বাচনে তার একটি বড় প্রভাব পড়েছে।
এ প্রসঙ্গে একজন রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেন, খুলনায় যে ভুলগুলো বিএনপি করেছে সেই একই ভুল করছে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে। মেয়র পদে মনোনয়ন প্রার্থী হিসেবে দলের অভ্যন্তরে দুই নেতার অন্তর্দ্বন্দ্ব নির্বাচনকে প্রভাবিত করছে। নিজেদের ভুলে যে তারা নিজেরাই বিপদগ্রস্ত হচ্ছে তারা বুঝেও বুঝতে পারছে না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গাজীপুর বিএনপির একজন নেতা বলেন, আমরা বারবার ভুল কৌশলে পরাজিত হচ্ছি। দলের সমন্বয়হীনতা ও নেতাদের ভিন্নমত দলের ঐক্যকে মারাত্মক হুমকির মুখে ফেলেছে। আর এ সবই হচ্ছে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের ভুল।
প্রসঙ্গত, আগামী ২৬ জুন গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। নির্বাচনকে ঘিরে আন্তর্জাতিক সংগঠন The Association of World Election Bodies (এডব্লিউইবি) একটি জরিপ করেছে। যেখানে ৬২ ভাগ জনগণই আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. জাহাঙ্গীর আলমকে সমর্থন করে।