
সেবা ডেস্ক: গাজীপুরসহ বাকি তিনটি সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে প্রকাশ্য দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েছে ঢাকা ও লন্ডন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। ঢাকায় অবস্থানকারী সিনিয়র নেতারা সিটি করপোরেশনগুলোতে অংশগ্রহণ করতে নিষেধ করলেও লন্ডনে পলাতক তারেক রহমান কড়া নির্দেশ দিয়েছেন নির্বাচনে অংশ নিতে। নির্বাচন নিয়ে গোপন বৈঠকে টেলিফোনে তারেক রহমানের সাথে তর্কে জড়িয়ে পড়েন কয়েকজন সিনিয়র নেতা। তারেক রহমানকে নেতা মানতেও অস্বীকার করেন তারা। গুলশান কার্যালয় সূত্রে বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিএনপি নেতা বলেন, ২৩ জুন রাতে আসন্ন সিটি করপোরেশনগুলোর নির্বাচনে নিজেদের অবস্থান, কার্যক্রম ও খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলন নিয়ে চেয়ারপারসনের গুলশান অফিসে জরুরি এক বৈঠকে বসেন মির্জা ফখরুল, মওদুদ আহমেদ, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র এবং আবদুল আউয়াল মিন্টু। বৈঠকে লন্ডন থেকে টেলিফোনে অংশ নেন তারেক রহমান। বৈঠকে প্রথমেই হইচই শুরু করেন গয়েশ্বর চন্দ্র ও মির্জা আব্বাস। নির্বাচন নিয়ে তাদের কোনো দায়িত্ব না দেওয়ায় পরিবশে গরম করে দেন তারা। তারেক রহমানের কড়া ঝাড়িতে চুপ করেন তারা। গাজীপুর নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর ভঙ্গুর অবস্থা, সাবেক মেয়র মান্নানের গাদ্দারি, নেতা-কর্মীদের ডিগবাজী মনোভাব নিয়ে আলোচনা হয়। একটা পর্যায়ে মওদুদ আহমেদ নির্বাচন বর্জন করার আহ্বান জানালে টেলিফোনে ক্ষেপে যান তারেক রহমান। মওদুদ আহমেদকে মাতব্বরি বন্ধ করে দলের জন্য কাজ করার হুকুম দেন তারেক। মির্জা ফখরুল, মির্জা আব্বাসও সিটি নির্বাচনগুলোতে নিজেদের সম্ভাব্য পরাজয় নিয়ে মনোভাব প্রকাশ করলে তাদের প্রচণ্ড রকমের গালিগালাজ করেন তারেক। দলের নির্দেশ না মানলে পদ কেড়ে নিয়ে শায়েস্তা করাও হুমকি দেন তিনি।
তারেক বলেন, তিন সিটি নির্বাচন বাবদ ৩০ কোটি টাকা নেওয়া হয়ে গেছে। প্রার্থী জিতুক আর হারুক তা নিয়ে মাথা ব্যথা নেই তার। অর্থ দরকার। অর্থাভাবে লন্ডনে জীবন যাপনে কষ্ট হচ্ছে। তারেকের এমন মন্ত্যবে চিৎকার শুরু করেন উপস্থিত নেতারা। হেডম থাকলে দেশে এসে পরিস্থিতি স্বচক্ষে দেখারও চ্যালেঞ্জ করেন তারা। বিদেশে বসে বেডরুম রাজনীতি বন্ধ করার জন্য হুমকি দেন তারা। সিটি নির্বাচনগুলোতে হারলে নিজেদের পিঠের ছাল থাকবে না বলেও হুশিয়ার করেন তারা। টাকা খাওয়া বাদ দিয়ে যোগ্য ও পরীক্ষিত নেতাদের নতুন করে মনোনয়ন দেওয়ার জন্য বিশেষ অনুরোধ করেন মওদুদ আহমেদ। পরবর্তীতে কোনরকম সিদ্ধান্ত ছাড়াই বৈঠক শেষ হয়। বৈঠকের পর নেতারা সিটি নির্বাচন বাবদ উঠানো পয়সার ভাগের গরমিল হওয়ায় নিজেদের মধ্যে তর্কে জড়িয়ে পড়েন।
ঘটনার পর ২৪ জুন ঢাকার একটি অনুষ্ঠানে তারেক রহমানের কড়া নির্দেশ অমান্য করে গাজীপুরসহ অন্যান্য সিটি করপোরেশন নির্বাচন বর্জনের আভাস দেন মওদুদ আহমেদ। প্রয়োজন হলে তারেক রহমানের নির্ধারিত প্রার্থীকে বাদ দিয়ে যোগ্য প্রার্থী নির্বাচন করারও আভাস দিয়েছেন তিনি।