সেবা ডেস্ক: আসছে রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নৌকা প্রতিক নিয়ে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের নির্বাচনী ইশতেহার:
ক. কর্মসংস্থান: গ্যাস সংযোগের মাধ্যমে গার্মেন্টস শিল্প, বিশেষ অর্থনৈতিক জোন প্রতিষ্ঠা ও বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্ক দ্রুত বাস্তবায়ন করে লক্ষাধিক মানুষের নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা। ঐতিহ্যবাহী রেশম কারখানা ও রাজশাহী টেক্সটাইল মিলস পূর্ণাঙ্গ রূপে চালু করা। রাজশাহী জুটমিল সংস্কার ও সম্প্রসারণ করা। কৃষি ভিত্তিক শিল্প স্থাপন করা- আম, টমেটো, আলু প্রক্রিয়াজাতকরণ ও পাটশিল্প আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষে কুটির শিল্প (এসএমই ফাউন্ডেশনের সহায়তায়) উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত ও সহায়তা করা।
খ. শিক্ষা: রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় দ্রুত বাস্তবায়ন করা। রাজশাহীতে পূর্ণাঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা। শিক্ষানগরী রাজশাহীতে মান সম্পন্ন নতুন একাধিক বালক ও বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজ স্থাপন করা। রাজশাহীতে পূর্ণাঙ্গ সঙ্গীত, আয়ুর্বেদিক ও ইউনানী চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় স্থাপন করা। রাজশাহী হোমিওপ্যাথিক কলেজ ও হাসপতালের উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ করা। রাজশাহী নগরীতে অবস্থিত সকল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ ও মান উন্নয়ন করে শিশু শিক্ষা ও ভর্তি সমস্যা সমাধান করা। রাজশাহীতে অনগ্রসর বস্তিবাসী ও বিদেশে চাকরী পেতে আগ্রহীদের জন্য জনশক্তি রপ্তানীমুখী বিশেষ কারিগরি প্রশিক্ষণকেন্দ্র স্থাপন করা। সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে ইংরেজি, আরবি, স্প্যানিশ, চায়নিজসহ বিশ্বের প্রধান প্রধান ভাষা শিক্ষার জন্য সার্টিফিকেট কোর্স চালু করা হবে।
ইতোপূর্বে সাবেক মেয়র লিটন প্রতিষ্ঠিত ফ্রি ওয়াইফাই জোন পুনরায় চালু করা। ক্রমান্বয়ে সমগ্র মহানগরীর নাগরিক কেন্দ্রগুলোকে ফ্রি ওয়াইফাই নেটওয়ার্কের অর্ন্তভূক্ত করা। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক কলেজে উন্নীত ল্যান্ড সার্ভে ইন্সটিটিউটকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করা। রাজশাহী নগরীতে আগত শিক্ষার্থীদের আবাসিক ও নিরাপত্তা সমস্যা সমাধানে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে উদ্যোগ গ্রহণ করা।
গ. স্বাস্থ্য: রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতাধীন এক হাজার বেডের হাসপাতাল দ্রুততার সঙ্গে বাস্তবায়ন ও চালু করা। নগরীর প্রতিটি ওয়ার্ডে নগর স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও মাতৃসদন স্থাপন করে নগরবাসীর স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করা। লিটন প্রতিষ্ঠিত রাজশাহী শিশু হাসপাতালের নির্মাণাধীন নতুন ভবনের কাজ দ্রুত শেষ করে চালু করা।প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে প্রস্তাবিত পানি শোধনাগার প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়নের মাধ্যমে নগরবাসীর জন্য বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবারহের ব্যবস্থা করা। বস্তিবাসীর জন্য স্বাস্থ্যসম্মত খাবার পানি, পায়খানা, ড্রেন, রাস্তা, বিদ্যুৎসহ অন্যান্য নাগরিক সুবিধা বৃদ্ধি করে জীবনমানের উন্নয়ন সাধণ করা।
ঘ. আবাসন: নিম্ন আয়ের মানুষদের বসবাসের জন্য বহুতল বিশিষ্ট ফ্ল্যাট নির্মাণ করে সহজ কিস্তিতে মালিকানা প্রদান করা। মুক্তিযোদ্ধা, সম্মানিত শিক্ষক, আলেম ওলামা ও সাংবাদিকদের জন্য পৃথক আবাসিক এলাকা গড়ে তোলা।
ঙ. অবকাঠামো: নগরীর চারদিকে রিং রোড ও লেক নির্মাণ করা, নগরীর বিভিন্ন স্থানে প্রয়োজনীয় সংখ্যক গণশৌচাগার স্থাপন করা, নগরীর অনুন্নত রাস্তাঘাট ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন করা। নগরীর বসতবাড়ি সমূহে শতভাগ গ্যাস সংযোগ স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করা।
সিটি করপোরেশনের অধিনে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) প্রজেক্টের আওতায় অসমাপ্ত প্রকল্পগুলি দ্রুত বাস্তবায়ন করা।
যানজন নিরসনে তালাইমারী থেকে সিঅ্যান্ডবি মোড়, সাহেববাজার অন্যদিকে নিউমার্কেট হয়ে স্টেডিয়াস, বর্ণালী মোড় থেকে কামারুজ্জামান চত্বর হয়ে ভদ্রার স্মৃতি অম্লান পর্যন্ত ফ্লাইওভার নির্মাণ ও নগরীর ব্যস্ততম মোড় এবং রেলক্রসিং গুলোতে ওভারপাস নির্মাণ করা। হযরত শাহ মখদুম রূপোশ (রহ.) এর মাজার কমপ্লেক্সসহ নগরীর ঐতিহাসিক স্থানগুলোকে পর্যটন বান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি করা।
নগরকেন্দ্রে ভূতপূর্ব ল্যান্ড সার্ভে ইন্সটিটিউটের জায়গায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও পূর্ণাঙ্গ সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্স স্থাপন করা। মসজিদ. মন্দির, গীর্জা, গোরস্থান শ্বশানগুলো সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন অব্যাহত রাখা। নগরীর পুরাতন বাজারগুলোর অধুনিকয়ান ও এবং নগরীর সম্প্রসারিত অংশের উপযুক্ত স্থানে বাজার কাঠামো গড়ে তোলা। প্রতিটি ওয়ার্ডে কমপেক্ষে একটি করে খেলার মাঠ স্থাপন করা। শিক্ষা ও চিত্রবিনোদনে বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটার এর নির্মাণ কাজ দ্রুত সম্পন্ন করে চালু করা। রাজশাহীতে পূর্নাঙ্গ টেলিভিশন কে্ন্দ্র চালু করা। নগরীর জন্য প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক প্রস্তাবিত আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত দৃষ্টিনন্দন দুইটি মডেল মসজিদের কাজ দ্রুত বাস্তাবায়ন করা।
চ. পরিবেশ: বিশ্বের পরিচ্ছন্ন দূষণ মুক্ত শান্তির নগরী হিসেবে খ্যাত শিক্ষা নগরী রাজশাহীর গৌরব পূনরুদ্ধার করা। বৃক্ষ শোভিত রাস্তার ডিভাইডার স্থাপন অব্যাহত রাখা। নগরীর খাস পুকুর সমূহ উদ্ধার, উন্নয়ন ও সংরক্ষণ করা। প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে পুকুর/দীঘি/জলাশয় সংরক্ষণ করা। গ্রীণ সিটি খ্যাত রাজশাহী নগরীর ব্যাপক বৃক্ষরোপন কর্মসূচি অব্যহত রাখা। প্রতিটি সরকারি ভবন চত্বরে সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য নানা প্রকার ফলজ, বনজ ও ঐষধি বৃক্ষ রোপন করা। নগরীতে অধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও রিসাইকেল প্ল্যান্ট স্থাপন করা।
ছ. যোগাযোগ: রাজশাহী- ঢাকা রুটে বিরতিহীন ট্রেন সার্ভিস চালু করা। রাজশাহী কোলকাতা ট্রেন সার্ভিস চালু করা। রাজশাহী বিমান বন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে উন্নীত করা এবং এতদাঞ্চলে উৎপাদিত পণ্য রফতানির লক্ষে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো স্থাপনে উদ্যোগে গ্রহণ করা। রাজশাহীর প্রাণ পদ্মা নদীকে ক্যাপিটাল ও ড্রেজিংয়ের আওতায় নিয়ে আসা। প্রতিটি আন্ত:নগর ট্রেনে রাজশাহী থেকে কৃষিজাত পণ্য পরিবহনের জন্য লাগেজ ভ্যান যুক্ত করা। দেশের গুরুত্বপূর্ণ জেলা ও নগরের সঙ্গে সড়ক পথে যোগাযোগ ব্যবস্থা সুগম করার জন্য সংযোগকারী মহাসড়কগুলোকে চার লেনে উন্নীত করার উদ্যোগ গ্রহণ করা।