
সেবা ডেস্ক: গত মাসের ২৯ জুলাই ঢাকায় বাস চাঁপায় নিহত দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার ঘটনায় ও নিরাপদ সড়কের দাবিতে সম্প্রতি স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের আন্দোলন নিয়ে আন্তর্জাতিক একটি মিডিয়ার কাছে অযৌক্তিক ও উস্কানিমূলক বক্তব্য প্রদান করায় আলোকচিত্রী শহিদুল আলমকে ৫৭ ধারায় গ্রেফতার করেছে বাংলাদেশ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তাকে গ্রেফতারের পরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে অনেক রকম মন্তব্য দেখা যায়। অনেকেই শহীদুলকে অসুস্থ দাবি করে এই গ্রেফতারের নিন্দা জানান, আবার অনেকেই চতুর শহীদুল আলমের গ্রেফতারে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। কেননা তার বিতর্কিত বক্তব্য বহির্বিশ্বে বাংলাদেশকে ছোট করেছে।
সাধারন জনগনের মনে প্রথমত প্রশ্ন জাগে একজন অপরাধী অসুস্থতার অজুহাতে কি আইনকে এড়িয়ে যাবে? অসুস্থ হলে তাকে পুলিশ হেফাজতে চিকিৎসা দেয়ার দেয়ার নিয়ম, যা ইতোমধ্যে দেয়া হচ্ছে।
অসুস্থতা নিয়ে কথা বলার আগে সংক্ষেপে জানা যাক এই শহিদুল আলমের পরিচয়। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সরকারি কোনো সংস্থার অনুমোদন ছাড়াই দেড় যুগ ধরে চলচ্চিত্র ও ফটোগ্রাফির সার্টিফিকেট কোর্স চালিয়ে যাচ্ছিলেন এই আলোকচিত্রী, দৃকের প্রতিষ্ঠাতা শহিদুল আলম। নিজস্ব বিবেচনায় স্নাতক, ডিপ্লোমা, শর্ট কোর্স, লং কোর্সসহ বিভিন্ন নামে সনদ দেওয়া হচ্ছে তার প্রতিষ্ঠিত পাঠশালা সাউথ এশিয়ান মিডিয়া ইনস্টিটিউট থেকে। বিদেশে লবিং করে নিয়ে আসছেন কোটি কোটি টাকার অনুদান। সেই অনুদানের টাকা স্থানান্তর করছেন নিজের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে। এ জন্য তাকে কোথাও জবাবদিহি করতে হচ্ছে না।
এছাড়াও আরো অসংখ্য কারণে শহীদুল আলম বিতর্কিত। জানা যায়, কুখ্যাত রাজাকার সবুর খানের ভাগ্নে এই শহীদুল আলম। বর্তমান সরকার যখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া শুরু করেন, শহীদুল আলম তখন প্রকাশ্যে এর বিরোধিতা করেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বেশ কিছু সূত্রে বের হয়ে আসে আরো চাঞ্চল্যকর তথ্য, জানা যায় শহিদুল আলম মলূত পাকিস্তানী গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই এর এজেন্ট!
গত ৫ ই আগস্ট রোববার গ্রেফতারের পরই চতুর শহীদুল আলম শুরু করেন তার অসুস্থতার নাটক। এটিকে পুঁজি করে বেশ কিছু সংবাদ মাধ্যমও শহীদুল আলমকে অসুস্থ দাবি করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সমালোচনায় মুখর হয়। আর এই সমালোচনায় অংশ নিয়ে আইনজীবী ড. কামাল হোসেন এবং তার অনুসারীরাও শহীদুল আলমকে অসুস্থ দাবি করেন। এক প্রসঙ্গে আইনজীবী সারা হোসেন বলেন, “তিনি (শহীদুল আলম) নাকে আঘাতপ্রাপ্ত। একদম খালি পায়ে তুলে নিয়ে আসা হয়েছে। উনি হাঁটতে পারেন না। আর আমরা তো অন্য কোনো বিষয়ে এখন আদেশ চাচ্ছি না। দ্রুত চিকিৎসার জন্য আদেশ চাচ্ছি।”
পরবর্তীতে এর প্রেক্ষিতে আদালত শহিদুল আলমকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেলে স্থানান্তরের আদেশ দেয়।
![]() |
| শহিদুল আলমের মেডিকেল রিপোর্ট |
কিন্তু কয়েকঘন্টা আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায় সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র। ভিডিওতে শহিদুল আলমকে দেখা যায় হাসপাতালের করিডোর ধরে দিব্যি হাঁটছেন আরো দুজন ব্যক্তির সাথে। কেবল হাটঁছেনই না, শহীদুল আলম গল্প করছেন এবং অট্ট হাসিতে ভেঙে পড়ছেন। তার সাথের দুজনকেও দেখা যায় গল্পে অংশ নিতে। ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে অনেকেই মন্তব্য করেন, ‘শহীদুল আলম এখন হাঁটছেন কিভাবে? আর এসব নাটকের মানে কি!’
বিভিন্ন আইডি এবং পেজে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটি ইতোমধ্যে লক্ষাধিক বার দেখা হয়েছে। উস্কানি মামলার পাশাপাশি আদালতের সাথে প্রতারণা করার জন্যেও শহীদুলের শাস্তির দাবি জানান অনেকেই।

