আশরাফুল ইসলাম রনি,তাড়াশ(সিরাজগঞ্জ)প্রতিনিধি: প্রতি বছরের ন্যায় এবছরও শীতের শুরুতে চলনবিল অঞ্চলের বিভিন্ন উপজেলায় অসাধু শিকারীরা ফাদঁ পেতে বকসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি শিকারের করছে।
চলনবিল অঞ্চলে বর্ষা পানি নেমে যাওয়ার পর এবং শীত আসার সঙ্গে সঙ্গে সাদা বক, বালিহাঁস, সারস, পানকৌরীসহ দেশি বিদেশি অসংখ্য পাখি আসা শুরু করে। খাল-বিল, জলাশয়গুলোতে পুঁটি, খলসে, দারকেসহ মাছ খাওয়ার লোভেই নানা প্রজাতির অতিথি পাখি ঝাঁকে ঝঁকে আশ্রয় নিতো চলনবিলে। অপরূপ রূপে সেজে উঠতো প্রকৃতি। কিন্তু একশ্রেণির অসাধু ব্যাক্তিরা পাখির এমন অবাদ বিচরণে কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তথ্যনুসন্ধ্যানে জানা যায়, সিরাজগঞ্জের চলনবিল বিধৌত তাড়াশ উপজেলার বারুহাস ইউনিয়নের ফসলি মাঠে অসাধু ব্যাক্তিরা বিষটোপ-বড়শিসহ নানা প্রকার ফাঁদ পেতে নির্বিচারে শিকার করছে এসব অতিথি পাখি। বাঁশের খুটি, কলা পাতা, খেজুর ডাল বেতের পাতা। এসব উপকরণ দিয়ে বিশেষ কায়দায় তৈরি করা ফাঁদ ৬ থেকে ৭ ফিট উঁচু। ফাঁদের সামনে বাঁশের মগডালে রাখা বক হাতে শিকারি দল বেঁধে উড়ে যাওয়া বক শিকার করছে।
এভাবেই প্রতিদিন শিকারিরা চলনবিলের বিতৃর্ণ ফসলের মাঠে সারি সারি করে ফাঁদ পেতে এবং বিষটোপ-বড়শি দিয়ে সাদা বক, বালিহাঁস, , পানকৌরীসহ নানা প্রকার অতিথি পাখি শিকার করছে। প্রতিদিন বিকাল থেকে গভির রাত আর ভোর থেকে সকাল পর্যন্ত এসব পন্থায় পাখি শিকার চলছে।
রোববার ও সোমবার সকালে উপজেলার বস্তুল বাজারে দেখা যায়, একই এলাকার জামাল নামের শিকারির জালে বন্দী অর্ধশতাধিক বক। প্রকাশ্যে বাজারে বিক্রি করছেন। কেউ কেউ হাট-বাজারে ফেরি করেও বিক্রি করছে এসব পাখি। প্রতিটি বক ১০০টাকা থেকে ১৫০ টাকা, বালিহাস ৪শ থেকে ৫শ টাকা এবং এবং চাকলা পাখি প্রতিটি ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি করছেন।
কয়েকজন পাখি শিকারি জানান, তারা চলনবিলের তাড়াশ-চাটমোহর, গুরুদাসপুর, সিংড়া, উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ফসলের মাঠে মাঠে খুঁটি পুঁতে কলাপাতা, খেজুর ডাল দিয়ে বিশেষ কায়দায় তৈরি করা ফাঁদের সামনে একটি বাঁশের মগডালে রাখা হয় শিকারি বক। আকাশ দিয়ে বকের ঝাঁক নির্মিত ফাঁদের ওপর দিয়ে দল বেঁধে উড়ে যাওয়ার সময় শিকারি তার শিকারি বকটিকে নাচাতে থাকে। এক পর্যায়ে শিকারি বকটি ডাকাডাকি শুরু করলে উরন্ত বকের ঝাঁকটি বিশেষ ভাবে নির্মিত ঘরের (ফাঁদ) ওপর বসে। এসময় তারা ভেতর থেকে একে একে বকগুলোকে ধরে ধরে খাঁচায় ভরে। এছাড়া বিশেষ কায়দায় বিষটোপ দিয়েও এসব অতিথী পাখি শিকার করা হচ্ছে।
তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস.এম ফেরদৌস ইসলাম বলেন, পাখি শিকার জীব বৈচিত্রের জন্য দীর্ঘ মেয়াদী ক্ষতি। পাখি শিকার রোধে অভিযান চালানো হয়েছে। তাছাড়া কোথাও পাখি শিকার করা হলে তাৎক্ষনিক অভিযান চালানো হবে।
⇘সংবাদদাতা: আশরাফুল ইসলাম রনি
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।