
সেবা ডেস্ক: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হেরে দিশেহারা না হয়ে ২০২৪ সালের নির্বাচনের জন্য বিএনপির গঠনতন্ত্রসহ প্রতিটি বিভাগকে নতুনভাবে গঠন করার পরামর্শ দিয়েছেন গণফোরাম তথা ঐক্যফ্রন্টের প্রধান সমন্বয়ক ড. কামাল হোসেন।
শুক্রবার (১১ জানুয়ারি) ড. কামাল হোসেনের মতিঝিল চেম্বারে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুলকে ডেকে এনে এ কথা বলেন তিনি।
বিএনপির মহাসচিবকে ড. কামাল বলেন, ‘নির্বাচনে কারচুপি যদি হতো তাহলে অবশ্যই আন্তর্জাতিক মহল বিএনপির প্রতি সহানুভূতি দেখাতো। কিন্তু দেখাচ্ছে না এর কারণ হলো বিএনপির সমন্বয়হীন রাজনীতি।’
ড. কামাল হোসেন বলেছেন, ‘আন্তর্জাতিক সমর্থন পেতে হলে আগে বদলাতে হবে বিএনপিকে। তা নাহলে, আন্তর্জাতিক মহল আওয়ামী লীগকেই সমর্থন দেবে’।
যার কারণেই ড. কামাল হোসেন বিএনপিকে পাঁচ পরিবর্তনের পরামর্শ দিয়েছেন বলে বিএনপিরই একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। এগুলো হলো:
১. উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার সুস্পষ্ট ঘোষণা: আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আওয়ামী লীগের গ্রহণযোগ্যতার সবচেয়ে বড় কারণ অর্থনৈতিক উন্নয়ন। গত ১০ বছরে আওয়ামী লীগ সরকার বাংলাদেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করেছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় মনে করে বিএনপি এই উন্নয়নকে স্বীকৃতি দেয় না। উন্নয়নের ধারাকে এগিয়ে নেওয়ার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা নেই বিএনপির কোনো বক্তব্যেই। আন্তর্জাতিক মহলের আশঙ্কা, বিএনপিকে সমর্থন দিলে বাংলাদেশের অর্থনীতি গতি হারাবে। এজন্য ড. কামাল হোসেন বিএনপিকে কৌশল পরিবর্তনের তাগিদ দিয়েছেন। উন্নয়নের পক্ষে বিএনপিকে অবস্থান নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
২. জামায়াতের সঙ্গ পুরোপুরি ত্যাগ করতে হবে বিএনপিকে: বিএনপিকে আনুষ্ঠানিকভাবে জামায়াতের সঙ্গ ত্যাগ করার পরামর্শ দিয়েছেন ড. কামাল। বলেছেন, জামায়াত যতদিন বিএনপির সঙ্গে থাকবে ততদিন আন্তর্জাতিক বিশ্ব বিএনপিকে আস্থায় নিতে পারবে না। এবার নির্বাচনে জামায়াতকে ২২ আসন দেয়াটা ছিলো চরম ভুল ছিল বলে মনে করেন ড. কামাল। এজন্যই আন্তর্জাতিক মহল বিএনপি থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়।
৩. তারেককে বিদায়: আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান গ্রহণযোগ্য নন। মার্কিন দূতাবাস এবং ভারতীয় দূতাবাস আনুষ্ঠানিকভাবে তারেকের ব্যাপারে তাদের আপত্তি জানিয়েছিল। কিন্তু বিএনপি সেই আপত্তি আমলে নেয়নি। ড. কামাল বিএনপিকে আপাতত তারেক রহমানমুক্ত করার পরামর্শ দিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, ড. কামাল হোসেন বিএনপি মহাসচিবকে বলেছেন, তারেক থাকলে বিএনপির কিছুই হবে না।
৪. বিএনপিতে শুদ্ধি অভিযানের তাগিদ: মার্কিন দূতাবাস নির্বাচনের সময়ই বিএনপির প্রার্থীদের মধ্য থেকে ৪৭ জনের একটি তালিকা হস্তান্তর করেছিল। এদের ব্যাপারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আপত্তির কথা বলেছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছিল, এরা জঙ্গিবাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। ড. কামাল হোসেন বিএনপিতে শুদ্ধি অভিযানের তাগিদ দিয়েছেন। জঙ্গিবাদের সঙ্গে যাদের নূন্যতম সম্পৃক্ততা আছে, তাদের বাদ দেয়ার প্রস্তাব করেছেন।
৫. বিতর্কিতদের দল থেকে বাদ দেয়া: দুর্নীতি এবং সন্ত্রাসের সঙ্গে যুক্ত অনেক বিএনপির নেতা এবার দলের মনোনয়ন পেয়েছিলেন। এটা বিএনপি সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণার তৈরি করেছিল। ড. কামাল আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায়ের জন্য বিতর্কিতদের দল থেকে বাদ দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
⇘সংবাদদাতা: সেবা ডেস্ক
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।