
সেবা ডেস্ক: জোটগত অনৈক্য, মতপার্থক্য এবং একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শোচনীয় পরাজয় বিবেচনায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট অব্যাহত রাখতে ৭টি শর্তারোপ করেছে বিএনপি। জানা গেছে, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পরবর্তী স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠকে এই শর্তগুলো বিএনপির পক্ষ থেকে উপস্থাপন করা হবে।
সূত্র বলছে, বিএনপি জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রধান দল হওয়া সত্ত্বেও সংসদ নির্বাচনকালীন সময়ে ঐক্যের শরিক দলগুলো বিএনপির চেইন অব কমান্ডে থাকেনি। ফলে এ নিয়ে বিপাকে পড়তে হয়েছে বিএনপির। বৃহত্তর ঐক্যের স্বার্থে বিএনপি এসব মুখ বুজে সহ্য করলেও যাবতীয় বিষয়ে নিজেদের অবস্থান সুস্পষ্ট করতে শর্ত দিচ্ছে বিএনপি।
সম্প্রতি ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম নেতা ডা. জাফর উল্লাহ চৌধুরীর এক বক্তব্য নিয়ে বিএনপির মধ্যে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, দুই বছরের জন্য তারেক রহমানের নেতৃত্ব থেকে সরে যাওয়া উচিৎ। এদিকে ডা. জাফরুল্লাহর বক্তব্যের প্রতিবাদ করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন ডা. জাফরুল্লাহর এই বক্তব্য তাঁর নিজস্ব, ব্যক্তিগত মতামত। তিনি বিএনপির কেউ নন। ডা. জাফরুল্লাহর বক্তব্যে বিএনপির নেতাকর্মীরা ক্ষুব্ধ বলেও জানা গেছে। এছাড়া বিএনপি-জামায়াত সম্পর্কসহ বিভিন্ন ইস্যুতে বিতর্ক সৃষ্টি হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপি জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সামনে ৭ দফা শর্ত উপস্থাপন করেছে। শর্তগুলো হলো-
১. জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট অন্যদলের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে নাক গলাবে না। কোন দলের কে নেতা হবেন, কে অবসরে যাবেন সেসব ঐক্যফ্রন্টের বিষয় নয়।
২. ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক এবং সমন্বয়কারী ছাড়া ঐক্যফ্রন্টের বিষয় নিয়ে অন্য কেউ কোন আনুষ্ঠানিক বক্তৃতা বা বিবৃতি দেবে না।
৩. ঐক্যফ্রন্টের বাইরে যদি কোন রাজনৈতিক দল কোন জোট করে তাহলে তা নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করা যাবে না। যেমন, ঐক্যফ্রন্ট থাকা বিএনপি ২০ দলীয় জোটে রয়েছে। যেটি সম্পূর্ণ আলাদা। ওই জোটের সঙ্গে যেহেতু ঐক্যফ্রন্টের কোন সম্পর্ক নেই ফলে ওই জোট নিয়ে তাদের প্রশ্ন তোলা কিংবা কথা বলা যাবে না।
৪. ঐক্যফ্রন্ট যেহেতু একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছে, তাই ওই নির্বাচনে জয়ী ঐক্যফ্রন্টের শপথ নেওয়া এবং সংসদে যোগ দেওয়া নিয়ে কোন পরামর্শ দেওয়া যাবে না।
৫. ঐক্যফ্রন্টকে একটি সুনির্দিষ্ট কর্ম পরিকল্পনা গ্রহণ করে ধাপে ধাপে আন্দোলনের কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে।
৬. ঐক্যফ্রন্টের কোন দল আলাদাভাবে সরকারের সঙ্গে সংলাপ বা শুভেচ্ছা বিনিময় করতে পারবে না।
৭. ঐক্যফ্রন্টের প্রধান নেতা হিসেবে বেগম খালেদা জিয়াকে স্বীকৃতি দিতে হবে। তার মুক্তির দাবি সামনে আনতে হবে।
সূত্র বলছে, বিএনপির প্রদত্ত শর্তগুলো যদি ঐক্যফ্রন্টের অন্য শরিক দলগুলো মানতে অনাগ্রহী হয় তবে বিএনপি ঐক্যফ্রন্টে থাকার বিষয়টি নতুন করে ভাববে।
⇘সংবাদদাতা: সেবা ডেস্ক

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।