জামালপর প্রতিনিধি ॥ জামালপুরের বিভিন্ন উপজেলায় বেসরকারী ও অনুমোদনবিহীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অভিনব কায়দায় বিক্রি হচ্ছে সরকারী বিনামুল্যে বিতরণকৃত বই। প্রশাসনের নাকের ডগায় এসব বই বিক্রি হলেও ব্যবস্থা নিতে পারছে না সংশ্লিষ্ট প্রশাসন।
জামালপুর শহরসহ বিভিন্ন উপজেলায় ব্যাঙের ছাতার মত গড়ে উঠেছে কেজি স্কুল। পাঠদান ও পাবলিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণে অনুমোদন না থাকলেও এসব স্কুলের শিক্ষার্থীরা বছর শেষে বিভিন্ন স্কুলের নামে পিএসসি, জেএসসি, এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়।
অনেক শিক্ষার্থীই জানে না যে সে কোন স্কুলের ছাএ/ ছাত্রী। বছর শেষে বই বিতরণের নাম করে অভিভাবকদের নিকট মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে এসব প্রতিষ্ঠান । প্রতিষ্ঠানের সরবরাহকৃত রশিদসমুহে বই বিক্রির বিষয়টি না থাকলেও অন্যান্য খাত দেখিয়ে এসব টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
এ বিষয়টি বন্ধে সম্প্রতি মাধ্যমিক শিক্ষকরা একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে বলেও জানা গেছে। সরজমিনে দেখা যায়, টাঙ্গাইলের সুনামধন্য প্রতিষ্ঠান সাহিন স্কুল। এই স্কুলের নাম ভাঙ্গিয়ে জামালপুরের বকশীগঞ্জে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিসের সামনেই বিনা অনুমতিতে এর একটি শাখা খোলা হয়েছে। শাখা খোলার অনুমোদন দেখতে চাইলে দেখাতে পারেনি প্রতিষ্ঠানটির প্রধান জুলহাস উদ্দিন শিকদার।
বকশীঞ্জে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ের সামনেই এর অবস্থান থাকলেও বিষয়টি জানেন না মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারসহ শিক্ষার সাথে কর্মরত কর্তা ব্যক্তিরা। পরে বই প্রাপ্তির বিষয়টি জানতে চাইলে শাখার পরিচালক জুলহাস উদ্দিন শিকদার জানান, স্থানীয় হালিমা সুরুজ নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় হতে এসব বই সংগ্রহ করা হয়।
বিনিময়ে এ স্কুলের শিক্ষার্থীরা ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সেজে পাবলিক পরীক্ষায় অংশ নেয়। তবে বই বিক্রির বিষয়টি এড়িয়ে যান তিনি। পরে সরজমিনে হালিমা সুরুজ বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, বিগত বছর যাবত বিদ্যালয়টি তালাবদ্ধ থাকলেও এর শিক্ষার্থী সংখ্যা ৩৪৬ জন। এ মধ্যে গত বছর জেএসসি পরীক্ষায় প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নিয়ে ১৮ জন জিপিএ পেয়েছে। বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের কক্ষে নেই কোন চেয়ার টেবিল।
প্রধান শিক্ষকের কক্ষেই রাখা হয়েছে ধানের স্তুপ |
প্রধান শিক্ষকের কক্ষেই রাখা হয়েছে ধানের স্তুপ। শ্রেণী কক্ষে গোবরের খড়ি রাখা। স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুর রহমান জানান, বিগত দুই বছর কোন শিক্ষক ও শিক্ষার্থী দেখা যায়নি এই বিদ্যালয়টিতে।
এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুল আহাদের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। বিদ্যালয়টি ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মাওঃ শাহাজাহানের সাথে যোগযোগ করলে তিনি বিষয়টি স্বীকার করলেও বিস্তারিত কিছু বলতে চাননি।
এ বিষয়ে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সানোয়ার হোসেনও বিষয়টি অকপটে স্বীকার করেন, বিদ্যালয়টি পাঠদানের অনুমোদন থাকলেও এমপিও ভুক্ত না হওয়ায় কোন ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব নয়। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার দেওয়ান মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম জানান, এ বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন পেশ করার আদেশ দেওয়া হয়েছে।
⇘সংবাদদাতা: সেবা ডেস্ক
⇘সংবাদদাতা: সেবা ডেস্ক
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।