আনসার আলী, মধুপুর প্রতিনিধি: টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীতে বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম নিয়ে ভ্যান যোগে বাড়ীতে বাড়ীতে যাচ্ছেন বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। মাইকিং করে ফেরি করছেন নতুন বিদ্যুৎ সংযোগ। গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী সাথে সাথেই দেওয়া হচ্ছে পল্লী বিদ্যুতের মিটারসহ নতুন সংযোগ। যা এর আগে কেউ ভাবতেই পারেননি। আর প্রশংসানীয় এ কাজটি করছেন ময়মনসিংহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি- ১ এর ধনবাড়ী সাব-জোনাল অফিস। ব্যাতীক্রমধর্মী এ উদ্যোগের নাম দেওয়া হয়েছে “আলোর ফেরিওয়ালা, পল্লী বিদ্যুৎ দুয়ার মিটারিং”।
জানা যায়, বিদ্যুৎ বিভাগের ‘আলোর ফেরিওয়ালা’ ভ্যান গাড়ীতে মিটার, বিদ্যুতের তার ও অন্যান্য সরঞ্জাম নিয়ে দু‘ তিনজন লাইনম্যান, একজন ওয়ারিং পরিদর্শক প্রতিদিন সকাল থেকে গ্রামে-গ্রামে ঘুরছেন আর মাইকিং করছেন। এ সময় কোন গ্রাহক বিদ্যুৎ নিতে চাইলে মাত্র ৫ থেকে ১০ মিনিটের মধ্যেই পেয়ে যাচ্ছেন নতুন সংযোগ। নেই কোন হয়রানী, দিতে হবে না বাড়তি কোন অর্থ।
এ প্রকল্পের উদ্যোক্তা ময়মনসিংহ পল্লী বিদ্যুত সমিত- ১ এর ধনবাড়ী সাব-জোনাল অফিসের এজিএম মো. শাহিনুর রহমান জানান, গত ৭ জানুয়ারী সোমবার থেকে শুরু হওয়া এ কার্যক্রম উপজেলার সব বাড়ীতে বিদ্যুৎ সংযোগ না পৌঁছানো পর্যন্ত চলবে। শুরুর পর ‘আলোর ফেরিওয়ালা’ গতকাল বৃহস্পতিবার বিকাল পর্যন্ত চার দিনে প্রায় ৫০টি নতুন সংযোগ দিয়েছে।
এজিএম শাহিনুর রহমান আরো জানান, দেশে এখনো বিদ্যুৎ সংযোগ নিতে গিয়ে গ্রাহকরা নানাভাবে হয়রানীর শিকার হন। একটা সংযোগের জন্য ঘুরতে হয় দিনের পর দিন। খরচ করতে হয় বাড়তি অর্থ। যা মোটেও কাম্য নয়। কাজেই তিনি মানানীয় কৃষি মন্ত্রী ড. মো. আব্দর রাজ্জাক স্যারের নির্দেশে গ্রাহক হয়রানী কমাতে বিকল্প এ উদ্যোগ নিয়েছেন। এটাকে তিনি “আলোর ফেরিওয়ালা, পল্লী বিদ্যুৎ দুয়ার মিটারিং” কার্যক্রম নাম দিয়েছেন।
বিদ্যুৎ বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ভ্যানে মিটার-তার থেকে শুরু করে সব ধরনের সরঞ্জাম নিয়ে লাইনম্যান ও ওয়ারিং পরিদর্শক গ্রামে-গ্রামে ঘুরছেন। গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী তাৎক্ষণিক আবেদন নিয়ে সাথে সাথে বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে দিচ্ছেন। আর এজন্য গ্রাহকদের মিটার প্রতি দিতে হচ্ছে সদস্য ফি বাবদ ভ্যাটসহ ১১৫ টাকা, জামানত বাবদ ৪০০ টাকা এবং বানিজ্যিক হলে ৮০০ টাকা। এছাড়া পল্লী বিদ্যুতের লোকজন গ্রামে-গ্রামে ঘুরে বেড়ানোর কারণে পুরোনো বিদ্যুৎ গ্রাহকদেরও কোন সমস্যা থাকলে সেটাও সমাধানের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
বাড়ীতে বসে নতুন সংযোগ পাওয়া উপজেলার মুশুদ্দি গ্রামের মো. মঞ্জুরুল ইসলাম, পাইস্কা গ্রামের মো. আ. হাকিম ও পৌর শহরের মিয়াপাড়া গ্রামের মো. কামরুল ইসলামসহ অন্যান্য গ্রাহকরা জানান, পল্লী বিদ্যুতের এ কার্যক্রম তাদের অনেক সুবিধা এনে দিয়েছে। সংযোগ নেয়ার জন্য অফিসে গিয়ে ধরনা দিতে হচ্ছে না। টাকা জমা দেওয়ার জন্য লাইনে দাড়ানো লাগে না। দিনের পর দিন ঘুরতে হচ্ছে না। সাথে সাথে সংযোগ পাওয়া যাচ্ছে। এটা কখনো ভাবতেও পারেননি তারা। পল্লী বিদ্যুতের এ কার্যক্রম দেখে মনে হচ্ছে সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাছ থেকে জনগণ প্রকৃত সেবা পাচ্ছেন।
⇘সংবাদদাতা: আনসার আলী
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।