![]() |
| ইঞ্জিনিয়ার জাহিদুল ইসলাম ওরফে লুলু |
রেখরি মন্ডল বিভিন্নভাবে সমুদয় করের টাকা পরিশোধ করেন এবং কোষাগারে অর্থ উদ্বৃত্ত দেখান। এরপর থেকেই জমিদার রেখরি মন্ডলকে মনে প্রাণে বিশ্বাস করতেন। এই রেখরি মন্ডলকে স্মৃতিময় করে রাখতেই রেখরিপাড়ার নামকরণ করা হয়।
পরবর্তীতে জমিদার রেখরি মন্ডলকে জোতদারী দিয়ে যান। এই রেখরি মন্ডলের নামানুসারে রেখিরপাড়ার নামকরণ হয়। রেখিরপাড়া জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার অন্তর্গত ফুলকোচা ইউনিয়নে অবস্থিত।
ইঞ্জিনিয়ার জাহিদুল ইসলাম ওরফে লুলু জন্মসূত্রে প্রত্যন্ত এই গ্রামের পরিবেশে বেড়ে ওঠেছেন। সামাজিক বন্ধনের মধ্যে বেড়ে ওঠা জাহিদ গ্রামের মানুষের সুখ-দু:খ-হাসি-কান্নার সাথে মিশে থাকেন।
সবসময় নিজেকে মানুষের সেবাদানের মধ্যে রাখতে পছন্দ করেন। পিছিয়ে পড়া তাঁর সমাজকে এগিয়ে নিতে গড়ে তোলেছেন-অটুট কলেজ-বিশ^বিদ্যালয় ছাত্র সংগঠন। রেখিরপাড়া গ্রামের একমাত্র প্রাথমিক বিদ্যালয় ছাড়া কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নেই।
ছাত্র সংগঠনের কর্মীদের নিয়ে জাহিদ রেখিরপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে নির্মাণ করেছেন বিশালাকার শহীদ মিনার।
গ্রামীণ-সামাজিক অনুষ্ঠানগুলো হয় এই শহীদ মিনারকে ঘিরে। পল্লী জনপদের অসচেতন মানুষগুলোর মাঝে ছড়িয়ে দেন ভাষা ও স্বাধীনতা আন্দোলনের গুরুত্ব।
জাতীয়-আন্তর্জাতিক দিবসও পালিত হয় এই শহীদ মিনার কেন্দ্রিক। অসহায়-দরিদ্র এবং নি:স্ব প্রবীণদের শীতবস্ত্র বিতরণসহ গরিব শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনামুল্যে বস্ত্র বিতরণ করেন। এতেই শেষনয়, গরিবদের ঈদ সামগ্রিও বিতরণ করেন নিজেদের অর্থায়নে।
ছাত্র সংগঠনটি শিক্ষার মানোন্নয়নে কাজ করে থাকে। শিক্ষক-ছাত্রদের মাঝে প্রায়ই শিক্ষামূলক প্রতিযোগিতার আয়োজন করে থাকে।
বিজয়ীদের পুরস্কারও প্রদান করে অটুট ছাত্র সংগঠন। সাম্প্রতিককালে দৈনিক ইত্তেফাক এবং অটুট ছাত্র সংগঠনের উদ্যোগে ব্যতিক্রম ধর্মী শিক্ষামূলক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়েছিল।
গ্রামের মানুষের সমস্যার কথা ভেবে রেখিরপাড়ায় গ্রামীন বাজার প্রতিষ্ঠার কথা ভাবা হয়। গ্রামের আশ পাশে হাট-বাজার নাথাকায় গ্রামের মানুষকে প্রায় ৩/৪ কি: মি: পথ ঘুরে বাজার করতে হয়।
কৃষিপণ্য বেচা-কেনার জন্য কৃষকদের অনেক দুর্ভোগে পড়তে হয়। অবশেষে জাহিদ সিদ্ধান্ত নিলেন-রেখিরপাড়ায় গ্রামীণ বাজার গড়বেন। যেই কথা সেই কাজ। এলাকাবাসির সাথে পরামর্শ করেন।
একপর্যায়ে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন; এপ্রিল মাসের প্রথম থেকেই রেখিরপাড়ার বাজার প্রতিষ্ঠা করবেন। সিদ্ধান্ত মোতাবেক রেখিরপাড়ায় একটি বাজার গড়েছেন জাহিদ। এলাকাবাসিও জাহিদকে সম্মানে জাহিদের নামে বাজারের নামকরণেরও প্রস্তাব দেয়া হয়। কিন্তু তাতে জাহিদ রাজি হন নি।
বরং তিনি এলাকাবাসিকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে বাজারের নাম দেন; একতা বাজার। বর্তমানে বাজারটি রেখিরপাড়া একতা সকাল বাজার হিসেবে পরিচালিত হয়ে আসছে।
গ্রামবাসির পক্ষে নূরুল ইসলাম, আজিজুল হক কালু, আব্দুর রাজ্জাক, ফজলুল হক জানান-একশ’ টাকার বাজার করতে যাতায়াত বাবদ ৫০ টাকাই খরচ হয়। ইঞ্জিনিয়ার জাহিদ প্রায়ই গ্রামের মানুষের কথা কষ্টের কথা প্রায়ই ভাবতেন। ফলে বাজার প্রতিষ্ঠা করা হয়।
⇘সংবাদদাতা: মো. শাহ্ জামাল


খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।