
জহুরুল ইসলাম, বেলকুচি প্রতিনিধি: দফায় দফায় ব্যবহার হচ্ছে সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার দৌলতপুর বহুমুখি উচ্চ বিদ্যালয়ের সাধারন ছাত্রছাত্রী।
স্কুলের ম্যানেজিং বোর্ডের কমিটির অন্ত:কোন্দলে দুই পক্ষই নিজেদের ফায়দা লুটতে মানববন্ধন সহ নানা কর্মসুচিতে ব্যবহার করছে স্কুলের এই কোমলমতি ছাত্রছাত্রীদের। স্কুলের ক্লাস বন্ধ রেখে করানো হচ্ছে এই সকল কর্মসুচি।
চলতি মাসে স্কুলের শত বছর উদযাপন অনুষ্ঠান ও দপ্তরি নিয়োগকে কেন্দ্র করে স্কুলের ম্যানেজিং বোর্ডের দুই পক্ষের দ›েদ্বর সৃষ্টি হয়। আর এরপর থেকেই নিজেদের সুবিধা ও অবস্থান জাহির করতে দুই পক্ষই নানা কর্মসুটিতে ব্যবহার করছে ছাত্রছাত্রীদের।
যার ফলে ব্যাহত হচ্ছে ছাত্রছাত্রীদের ক্লাস ও লেখাপড়া। তবে এসব বিষয়ে প্রধান শিক্ষক বলেন, শিক্ষার্থীদের ক্লাশে ফেরাতে শীঘ্রই বৈঠক করা হবে।
স্কুলের ম্যানেজিং বোর্ডের সভাপতি ও পৌর মেয়র আশানুর বিশ্বাস জানান, একটি পক্ষ রাজনৈতিকভাবে আমাকে হেনস্থা করতে এই সকল কাজ করছে। এই স্কুলে লেখাপড়া নষ্ট হোক এমন কোন কাজ মেনে নেওয়া হবে না। আর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জানালেন, স্কুল কর্তৃপক্ষকে অভ্যন্তরীন দ্বন্দ মিটিয়ে ফেলার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। অন্যথায় ম্যানেজিং কমিটির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানাও তিনি।
আর শিক্ষার্থীরা জানায়, এভাবে অচলাবস্থা চলায় পড়াশোনা বিঘিœত হচ্ছে তাদের।
ম্যানেজিং বোর্ডের বিদ্যুত সাহী সদস্য হাজী পিয়ার আলী ও অভিভাবক সদস্য শাহীন রেজা অভিযোগ করে জানান, চলতি বছরের এপ্রিল মাসের ২০ তারিখে স্কুলের শত বছর উদযাপন অনুষ্ঠান বন্ধ সহ দপ্তরি নিযোগে অনিয়ম ও কমিটির কারো সাথে সমন্বয় না করে সিদ্ধান্ত নেয় বর্তমান সভাপতি আশানূর বিশ্বাস ও প্রধান শিক্ষক তাপস কুমার মন্ডল। এরপর থেকেই এই পক্ষটি দপ্তরী নিয়োগটি বৈধভাবে হয়নি, এমন অভিযোগ তুলে শিক্ষার্থীদের নিয়ে প্রতিবাদে নামে। এ পক্ষটিও এ সময় মানববন্ধন সহ বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। মানববন্ধনে ছাত্রছাত্রীর পাসাপাশি বহিরাগতদেরও দেখা মেলে। এসময় বন্ধ থাকে ৩ দিন ক্লাস। ব্যাহত হয় সাধারন ছাত্রছাত্রীদের লেখাপড়া। স্কুলের ম্যানেজিং বোর্ডের আরো কয়েক জন সদস্যরা অভিযোগ করে জানান, প্রতি মাসে মিটিং করার কথা থাকলেও তা হয় না। আর এসকল বিষয়ে সভাপতি কারো সাথে সমন্বয় পর্যন্ত করে না। অথচ এই স্কুলটি অত্ব অঞ্চলের পরাতন ও মান সম্মত একটি প্রতিষ্ঠান।
এরই ধারাবাহিকতায় ২৭এপ্রিল তারিখ শনিবার স্কুলের ম্যানেজিং বোর্ডের সভাপতি আশানূর বিশ্বাসের অনুসারীরাও এই স্কুলের শিক্ষার্থীদের নিয়ে মানববন্ধনে নামে। এসময় তারা অভিযোগ করেন, তাদের দেওয়া নিয়োগ প্রক্রিয়া বৈধ। আর শত বছর উতযাপন না হবার পিছনে অপর পক্ষকে দায়ী করেন তিনি। শনিবারের এই কর্মসূচিতে ব্যাবহার করানো হয় এই স্কুলের সাধারন ছাত্রছাত্রীদের। বন্ধ রাখা হয় ক্লাস। তাদের এই দাবী মানতে ঘন্টা ব্যাপি করা হয় এই স্কুলের শিক্ষার্থীদের নিয়ে মানববন্ধন সহ প্রতিবাদ। এদিনের মানববন্ধনে ছাত্রছাত্রীর পাসাপাশি বহিরাগতদেরও দেখা মেলে।
শিক্ষার্থীরা জানায়, এই প্রতিবাদ আর মানববন্ধন যেদিনই হয় সেদিন ক্লাশ বন্ধ রেখেই করা হয়। স্কুলের এই অরাজকর পরিবেশের কারনে স্কুল খোলা থাকলেও ক্লাশ ঠিকঠাক মতো হচ্ছেনা। অধিকাংশ শিক্ষার্থীই স্কুলে আসতে ভয় পাচ্ছে। দু’পক্ষের দ্বন্দের বলির পাঠা হচ্ছে এই কোমলমতো শিশুরা।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক তাপস কুমার মন্ডল জানান, কোন অবস্থাতেই শিক্ষার্থীদের ক্লাশে বিঘœ ঘটতে দেয়া যাবেনা। সেজন্য দ্রæতই ম্যানেজিং কমিটির সদস্য সহ স্কুলের শিক্ষার্থীদের নিয়ে বৈঠক করা হবে।
স্কুলের সভাপতি ও বেলকুচি পৌরসভা মেয়র জানায়, স্কুলের ম্যানেজিং বোর্ডের একটি পক্ষ রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্যই স্কুলের বিশৃংঙ্খলা সৃষ্টি করছে। আর দপ্তরী নিয়োগে কোন অনিয়ম করা হয়নি।
বেলকুচি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জানান, দুপক্ষকেই নিজেদের দ্বন্দ মিটিয়ে ফেলার জন্য পরামর্শ দেয়া হয়েছে। দ্রæত সমস্যার সমাধান করা না হলে ম্যানেজিং কমিটির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
⇘সংবাদদাতা: জহুরুল ইসলাম

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।