
লিয়াকত হোসাইন লায়ন, জামালপুর প্রতিনিধি।। জামালপুর সদর উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নের রঘুনাথপুর গ্রামে বিয়ের দুই মাসের মধ্যে সন্তান প্রসবের ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এই ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। শনিবার দুপুরে শিক্ষা অফিসার মাজেদুল ইসলামকে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে সদর উপজেলার রঘুনাথপুর এলাকায় বিক্ষোভ করে এলাকাবাসী। ধর্ষনের শিকার কিশোরী বাদী হয়ে জামালপুর সদর থানায় মামলা দায়ের করেছে।
ধর্ষনের শিকার কিশোরী জানায়, প্রায় ১ বছর আগে সদর উপজেলার শরিফপুর ইউনিয়নের রঘুনাথপুর গ্রামের আব্দুল মোতালেব মাস্টারের ছেলে মাজেদুল ইসলামের বাসায় গৃহকর্মীর কাজ নেয় সে। মাজেদুল ইসলাম মেলান্দহ উপজেলা শিক্ষা অফিসের সহকারী শিক্ষা অফিসার হিসেবে কর্মরত রয়েছে। তার স্ত্রী নাজমা আক্তারও একজন স্কুল শিক্ষিকা। কিছুদিন কাজ করার পর থেকেই গৃহকর্তা মাজেদুল ইসলাম স্ত্রীর অনুপস্থিতিতে প্রতি শনিবার তাকে নানাভাবে যৌন হয়রানী করে। এক পর্যায়ে তাকে হাত ও মুখ বেঁধে জোরপুর্বক ধর্ষণ করে এবং এ ঘটনা ফাঁস না করার জন্য প্রাণনাশের হুমকি দেয়। এরপর থেকেই প্রতি শনিবার সরকারি ছুটি হওয়ার সুবাদে বাসায় অবস্থানকালে স্ত্রী স্কুলে চলে যাবার পর
নিয়মিত তাকে ধর্ষণ করে আসছিল। এ অবস্থায় কিশোরীর শাররিক গঠন পরিবর্তন দেখা দিলে সহ শিক্ষা অফিসার মাজেদুল ইসলাম দুই মাস আগে জামালপুর সদর উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নের পিঙ্গল হাটি গ্রামে রোকন নামে এক যুবকের কাছে বিয়ে দেয়। এদিকে বিয়ের দুইমাস পরেই ৭ মাসের একটি মৃত ছেলে সন্তান প্রসব করে ওই কিশোরী।
বিয়ের দুই মাসের মাথায় ৭ মাসের বাচ্চা প্রসব করায় এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়। লোকলজ্জার ভয়ে স্বামী রোকনের পরিবার সদ্য ভূমিষ্ট মৃত সন্তানসহ আকলিমাকে বাবার বাড়িতে রেখে যায়। এ ঘটনা জানাজানির পর আকলিমা প্রতিবেশীদের কাছে গৃহকর্তা মাজেদুলের পাশবিক যৌন নির্যাতনের কাহিনী খুলে বললে এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। এক পর্যায়ে এলাকাবাসী মাজেদুলের বাড়ি ঘেরাও করে বিচারের দাবি করে। ঘটনা ফাঁস হওয়ার পর থেকেই মাজেদুল পলাতক রয়েছে। জামালপুর সদর থানা অফিসার ইনচার্জ জানান, গৃহকর্মী উপর পাশবিক যৌন নির্যাতনের ঘটনায় মাজেদুল ইসলামকে আসামী করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা নেয়া হয়েছে। মৃত সন্তানের ময়নাতদন্ত ও শিশুটির ডিএনএ পরীক্ষার জন্য জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এছাড়াও গৃহকর্তা মাজেদুলকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। এ বিষয়ে জামালপুর জেলা শিক্ষা অফিসার শহিদুল ইসলাম বলেন, ন্যক্কারজনক এই ঘটনার জন্য ওই সহকারী শিক্ষা অফিসারের বিরুদ্ধে অবশ্যই বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। এই বিষয়ে অভিযুক্ত মাজেদুল ইসলামের সাথে তার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
⇘সংবাদদাতা: লিয়াকত হোসাইন লায়ন
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।