সুন্দরগঞ্জে তোফা-তহুরা পেল সুখের নীড়

S M Ashraful Azom
0
সুন্দরগঞ্জে তোফা-তহুরা পেল সুখের নীড়
গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি: দেশব্যাপী আলোচিত কোমরে জোড়া লাগানো থেকে আলাদা করা জমজ দু’বোন তোফা-তহুরার জন্য নির্মিত সুখের নীড় আজ মঙ্গলবার উদ্বোধন করা হলো। জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে সাথে নিয়ে মা শাহিদা বেগমের কোলে চরে সুখের নীড়ে প্রবেশ করে তোফা-তহুরা।

দুপুরে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার দহবন্দ ইউনিয়নের পশ্চিম ঝিনিয়া গ্রামে তোফা-তহুরার বাবা রাজু মিয়ার বাড়িতে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের আর্থিক সহযোগিতায় তোফা-তহুরার জন্য নির্মিত হয় টিন সেড বিল্ডিং- সুখের নীড়। এ বাড়িটি উদ্বোধন উপলক্ষ্যে আয়োজন করা হয় এক আলোচনা সভা। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. সোলেমান আলীর সভাপতিত্বে তোফা-তহুরার বাড়ির উঠোনে এ উপলক্ষ্যে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক আবদুল মতিন। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা আওয়ামীলীগ আহবায়ক টিআইএম মকবুল হোসেন, যুগ্ম আহবায়ক সাজেদুল ইসলাম, দহবন্দ ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম কবির মুকুল। পরে জেলা প্রশাসক তোফা-তহুরাকে সাথে নিয়ে ফিতা কেটে নতুন ঘর সুখের নীড়ে প্রবেশ করে।

জন্মের পর থেকে তোফা-তহুরা তার নানার বাড়ি রামজীবন ইউনিয়নের কাশদহ গ্রামে বাস করছিল। তোফা-তহুরার বাবার বাড়িতে কোন প্রকার ঘর ছিল না। ডাক্তারের পরামর্শ মোতাবেক তোফা-তহুরাকে আলো বাতাস বয় এমন ঘরের মধ্যে রাখতে হবে। কিন্তু তোফা-তহুরার বাবার সাধ্যছিল না এমন একটি ঘর নির্মাণ করা। সে মোতাবেক তোফা-তহুরার মা-বাবা গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক মোঃ আবদুল মতিনের কাছে ঘর নির্মাণ করে দেয়ার জন্য আবেদন করেন। এরই পরিপেক্ষিতে জেলা প্রশাসকের নিদের্শে উপজেলা নির্বাহী অফিসার তোফা-তহুরার জন্য ঘর নির্মাণ করে দেয়। 
 
তোফা-তহুরার বাবা রাজু মিয়া ঘর উদ্বোধনকালে ওই বাড়িতে ছিল না। প্রধান মন্ত্রীর নির্দেশে স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় তোফা-তহুরার বাবা হতদরিদ্র রাজু মিয়াকে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি দেয়া হয়। বর্তমানে রাজু মিয়া চাকরিস্থলে কর্মরত রয়েছে। তোফা-তহুরার মা শাহিদা বেগম জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে ঘর নির্মাণ করে দেয়ার জন্য ধন্যাবাদ জানান। শাহিদা বেগম জানান, বর্তমানে তোফা সম্পন্ন সুস্থ তবে তহুরা এখন কিছুটা অসুস্থ রয়েছে। তহুরা স্বাভাবিক অবস্থায় প্রসাব করতে পারছে না। ক্যাথেটরের সাহায্যে ৩ ঘন্টা পর পর প্রসাব করাতে হয়। তিনি আরও বলেন, ঘর পাশাপাশি প্রশাসন একটি নলকুপ ও একটি ল্যাট্রিন তৈরি করে দিয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ সোলেমান আলী জানান, জেলা প্রশাসকের নির্দেশনায় আমি ঘর নির্মাণ করে দিয়েছি। এজন্য নিজেকে ধন্য মনে করছি।

উলে­খ্য, ২০১৬ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর কোমরে জোড়া লাগানো অবস্থায় গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার রামজীবন ইউনিয়নের কাশদহ গ্রামে নানার বাড়িতে তোফা ও তহুরার জন্ম হয়। মিড়িয়ায় বিষয়টি আলোচিত হলে প্রধান মন্ত্রীর নির্দেশনায় তাদেরকে ওই সালের ৭ অক্টোবর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর ১৬ অক্টোবর তাদের  প্রথম অস্ত্রোপচার করা হয়।

 ২০১৭ সালের ১ আগষ্ট তাদেরকে আলাদা করার জন্য করা হয় দ্বিতীয় অস্ত্রোপচার। পরে সুস্থ হলে সে বছরেরই ১০ সেপ্টেম্বর রাতে ঢাকা থেকে গাইবান্ধায় ফেরে তোফা-তহুরা। আবারও তহুরা অসুস্থ হলে ২০১৭ সালের  ৮ অক্টোবর তহুরাকে ঢাকায় নেওয়া হলে সাড়ে চার মাস চিকিৎসা শেষে গত ২৪ ফেব্রæয়ারি বাড়ীতে ফেরে জমজ দু’বোন তোফা-তহুরা। সর্বশেষ চিকিৎসা শেষে ২০১৮ সালের ৫ ডিসেম্বর বাড়িতে ফিরে আসে তোফা-তহুরা। 


⇘সংবাদদাতা: গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি
ট্যাগস

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top