ধুনটে সফলতা পাচ্ছে না ভিক্ষুক পুনর্বাসন কর্মসূচি

S M Ashraful Azom
0
ধুনটে সফলতা পাচ্ছে না ভিক্ষুক পুনর্বাসন কর্মসূচি
রফিকুল আলম, ধুনট প্রতিনিধি: বগুড়ার ধুনট উপজেলায় ভিক্ষাবৃত্তিতে নিয়োজিত জনগোষ্ঠীকে পুনর্বাসনের মাধ্যমে রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে সম্পৃক্ত করতে সরকারের ভিক্ষুক পুনর্বাসন কর্মসূচির সফলতা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে ।

ইউএনও অফিস সূত্রে জানা যায়, একটি পৌরসভা ও ১০টি ইউনিয়ন নিয়ে এ উপজেলা গঠিত। ভিক্ষার হাত হোক কর্মের হাতিয়ার- এ শ্লোগান সামনে রেখে সরকার সারা দেশের ন্যায় এ উপজেলাতেও ভিক্ষুকমুক্তকরণ কর্মসূচি গ্রহণ করে।

পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে ভিক্ষাবৃত্তিতে নিয়োজিত নারী-পুরুষের তালিকা করা হয়। সেই তালিকা অনুযায়ী এ উপজেলায় ৯৮৩ জন ভিক্ষুক রয়েছে। উপজেলা পরিষদের সভায় ১৪ জন ভিক্ষুককে পুনর্বাসনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরমধ্যে ১০জন নারী ও ৪ জন পুরুষ।

ভিক্ষাবৃত্তি ছেড়ে কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে ২০১৮ সালের জানুয়ারী মাসে এসব ভিক্ষুকের মধ্যে কেউ পেয়েছে গরু, কেউ ছাগল-ভেড়া আবার কেউ পেয়েছে ভ্যানগাড়ি। উপজেলা পরিষদ থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে তাদের প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা মূল্যের সরকারি এসব সহায়তা দেওয়া হয়। কিন্ত এক বছরে ভিক্ষুক পুনর্বাসন কর্মসূচি সফলতার মুখ দেখেনি।

সরেজমিন অনুসন্ধানে জানা যায়, উপজেলার চরধুনট গ্রামের প্রতিবন্ধী আনজুয়ারা বেগমকে ১০ হাজার টাকা মুল্যের ২টি ছাগল কিনে দেওয়া হয়। সরকারের দেওয়া ২টি ছাগল পালনের মাধ্যমে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখেছিল আনজুয়ারা বেগম। কিন্ত ছয় মাস আগে অসুস্থ হয়ে তার ২টি ছাগল মারা গেছে। তারপর থেকে আনজুয়ারা বেগম আগের পেশাতেই জীবিকা নির্বাহ করছে।

যমুনা পাড়ের পুকুরিয়া গ্রামের চামেলী খাতুনকে একটি গরু কিনে দেওয়া হয়। পরাশ্রয়ী চামেলী খাতুন সরকারের দেওয়া গরু ১৫ হাজার টাকায় বিক্রি করে ২ মাস আগে একটি ঘর তৈরী করেছে। সংসারে বৃদ্ধা মাকে নিয়ে চামেলীর জীবন চলে ভিক্ষাবৃত্তির আয়ে।

প্রতাব খাদুলী আদর্শ গ্রামের খাজু বিবি বলেন, ১০ হাজার টাকা দিয়ে ২টি ছাগল কিনে লালন-পালন করছে। কিন্ত ছাগল পুষে তো আর দৈনিক আয় হয় না। তাই ভিক্ষাবৃত্তি করেই বিধবা মেয়ে ও নাতি-নাতনি নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছে।

একই গ্রামের ছাইফুল ইসলামকে একটি ভ্যান গাড়ি দেওয়া হয়। কিন্ত ভ্যান গাড়ি চালিয়ে তার পোষায় না। তাই ভ্যান গাড়িটি সাড়ে ৪হাজার টাকায় বিক্রি করে দিয়েছে। সংসারের খরচ যোগাতে সাইফুল ভিক্ষাবৃত্তি করছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাজিয়া সুলতানা বলেন, ভিক্ষাবৃত্তি মানুষের বেঁচে থাকার শেষ সম্বল নয়, একজন মানুষকে বেঁচে থাকতে হলে কর্মময় জীবনের মাধ্যমেই বেঁচে থাকতে হবে, কর্মময় জীবনেই বেঁচে থাকার আনন্দ খুঁজে পাওয়া যায়। সরকারি সহায়তার পাশাপাশি ভিক্ষাবৃত্তি ছাড়ার জন্য দৃঢ় মনোবল গড়ে তুলতে হবে। এ ক্ষেত্রে জনসচেতনতা তৈরি করতে সমাজের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।


 -সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন

ট্যাগস

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top