
সেবা ডেস্ক: হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রা) থেকে বর্ণিত হযরত মোহম্মদ (সা.) বলেন, ‘তিন ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে না। (১) পিতা-মাতার অবাধ্য সন্তান, (২) দাইয়ূস অর্থাৎ পরিবারের মধ্যে অশ্লীনতা ও পাপাচারের প্রশ্রয়দাতা এবং (৩) পুরুষসুলভ আচরণকারী নারী। (নাসায়ী)।
নাসায়ীর অন্য বর্ণনায় রাসূল (সা.) বলেন, ‘তিন জনের ওপর আল্লাহ জান্নাত হারাম করেছেন- (১) মদখোর (২) পিতা-মাতার অবাধ্য সন্তা (৩) দাইয়ুস।’
মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেন,
الزَّانِي لَا يَنكِحُ إلَّا زَانِيَةً أَوْ مُشْرِكَةً وَالزَّانِيَةُ لَا يَنكِحُهَا إِلَّا زَانٍ أَوْ مُشْرِكٌ وَحُرِّمَ ذَلِكَ عَلَى الْمُؤْمِنِينَ
‘ব্যভিচারী পুরুষ কেবল ব্যভিচারিণী নারী অথবা মুশরিকা নারীকেই বিয়ে করে এবং ব্যভিচারিণীকে কেবল ব্যভিচারী অথবা মুশরিক পুরুষই বিয়ে করে এবং এদেরকে মুমিনদের জন্যে হারাম করা হয়েছে।’ (সূরা: আন-নূর, আয়াত: ৩)।
যে ব্যক্তি নিজের স্ত্রী অশ্লীনতার লিপ্ত আছে বলে অনুমান করে কিন্তু তার হাতে কোনো সুস্পষ্ট প্রমান নেই এবং স্ত্রীকে ভালোবাসার কারণে কিছু বলতে পারে না, অথবা স্ত্রীর কাছে এমনভাবে ঋণগ্রস্ত আছে যে তা পরিশোধ করতে সে অপরাগ, সে বিপুল পরিমাণ দেনমোহরের দায়গ্রস্ত অথবা বহুসংখ্যক শিশু-সন্তান রয়েছে যাদের খোরপোশের দাবি নিয়ে স্ত্রী আদালতের শরণাপন্ন হবে-এরুপ আশংকা রয়েছে বলে শৈথিল্য প্রদর্শন করে তাকে দাইয়ূস বলা যাবে না।
দাইয়্যুস: দাইয়্যুস হলো ওই ব্যক্তি; যে তার পরিবারে পর্দা প্রথা চালু করেনি। পরিবারের লোকজন বেপর্দায় চলাফেরা করতো; বেহায়াপনায় লিপ্ত ছিল; কিন্ত সে তার কোনো প্রতিরোধ করেনি বা বাধা প্রদান করেনি। পরিবারের কর্তা হিসেবে বেপর্দা-বেহায়াপনা বন্ধ না করার জন্য এই শাস্তি পাবে সে।
তিনি যত বড় ইবাদতকারী আর তাহাজ্জুদ গুজার ব্যক্তিই হোন না কেন, যত দান-সদকাই করুন না কেন, তিনি যদি পরিবারের কর্তা ব্যক্তি হিসেবে দায়িত্ব পালন না করেন, তবে তার জন্যও জান্নাত হারাম।
সুতরাং পরিবারের কর্তা ব্যক্তির উচিৎ পরিবারে পর্দার বাস্তবায়ন করা। এ কারণেই যে বেপর্দায় চলে সে-ও দাইয়্যুস। আর যে সামর্থ ও দায়িত্ব থাকা সত্ত্বেও পর্দার ব্যবস্থা করেনি সে-ও দাইয়্যুস। হোক সে পুরুষ অথবা নারী।
অবাধ্য সন্তান: যারা পিতা-মাতার অবাধ্য। তারাও এই তিন শ্রেণির অন্তর্ভূক্ত। পিতা-মাতার অবাধ্য সন্তানও জান্নাতে যাবে না। হাদিসের ঘোষণা অনুযায়ী যার ওপর পিতা-মাতা অসন্তুষ্ট তার জন্য জান্নাত হারাম।
তাই সন্তানের জন্য মৃত্যু পর্যন্ত পিতা-মাতার খেদমত করতেই হবে। পিতা-মাতাকে কোনোভাবেই কষ্ট বা পরিত্যাগ করা যাবে না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পরিস্কারভাবে বলেছেন, পিতা-মাতার অবাধ্য সন্তান জান্নাতে প্রবেশ করবে না। আল্লাহ আমাদের সবাইকে পিতা-মাতার অনুগত ও বাধ্য সন্তান হিসেবে কবুল করুন।
নেশাকারী: যারা নেশাগ্রস্ত এবং মাদক-দ্রব্য পান বা গ্রহণ করে তারাও এ তিন শ্রেণির অন্তর্ভূক্ত। ইসলামে নেশাকে হারাম করা হয়েছে। এটা কোরআনের নির্দেশ।
তাই সব ধরনের নেশা বর্জন করা জরুরি। কারণ নেশা বা মাদক গ্রহণ করলে দেহ অপবিত্র হয়ে যায় আর এই অপবিত্র দেহ কখনো জান্নাতে প্রবেশ করবে না।
আল্লাহ তায়ালা মুসলিম উম্মাহর সব জ্ঞানবান কিশোর যুবক, বয়স্ক নারী-পুরুষকে উল্লেখিত নিষিদ্ধ তিন কাজ থেকে বিরত থাকার তাওফিক দান করুন।
মাদক তথা নেশামুক্ত পরিবার ও সমাজ গঠন, পিতা-মাতার যথাযথ খেদমতসহ পরিবার-পরিজনকে বেপর্দার অভিশাপ থেকে হেফাজত করার তাওফিক দান করুন। আল্লাহুম্মা আমিন।
-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।