
সেবা ডেস্ক: হজ পালনের নাম করে হজের সময় পাড়ি জমান সৌদি আরবে। মিশে যান পবিত্র হজব্রত পালনকারী অন্যদের সঙ্গে। ভিড়ের মধ্যে সুযোগ বুঝে বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের পকেট কেটে হাতিয়ে নেন ডলার, পাউন্ডসহ নানা বিদেশি মুদ্রা।
১২ সদস্যের চক্রের দলনেতা ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হাতে গ্রেফতারের পর বেরিয়ে এসেছে চাঞ্চল্যকর এ তথ্য।
ডিবি পুলিশের কর্মকর্তারা বলেন, চক্রের সদস্যরা সারাবছর রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও তার আশপাশের এলাকায় ছিনতাই, চুরি ও মানুষকে অজ্ঞান করে সর্বস্ব লুটে নিত। আর হজের সময় চক্রের কিছু সদস্য সৌদি আরবে চলে যান।
সর্বশেষ ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে ঘরে ফেরা মানুষদের টার্গেট করেছিল চক্রটি।
শনিবার সন্ধ্যায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকা থেকে চক্রটির ৬ সদস্যকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- দলনেতা মাসুদুল হক ওরফে আপেল, রুহুল কুদ্দুস, লাবু মিয়া, সুমন ভূইয়া ওরফে সুমা, জাহিদুল ইসলাম ও দুলাল মোল্লা। এ সময় তাদের কাছ থেকে বিশেষভাবে তৈরি ব্লেড, চেতনানাশক ঘুমের ট্যাবলেট, নেশাজাতীয় ঘুমের ওষুধের গুঁড়া, মলম, খুরমা-খেজুর জব্দ করা হয়। তাদের গ্রেফতারের পর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বেরিয়ে এসেছে।
ডিবি পুলিশ জানায়, মূলত বিমানবন্দর এলাকায় সক্রিয় ছিলেন তারা। বিদেশে যাওয়া কোনো যাত্রীর সঙ্গে আসা আত্মীয়স্বজনদের টার্গেট করতেন তারা। বিশেষ করে একা থাকা কাউকে দেখলে চক্রের সদস্য গিয়ে পরিচিত হতেন। টার্গেট ব্যক্তি যে জেলার বাসিন্দা বলতেন, চক্রের সদস্যও নিজেকে সেই জেলার বাসিন্দা হিসেবে পরিচয় দিয়ে ঘনিষ্ঠতা বাড়াতেন।
এক পর্যায়ে তার কাছ থেকে কিছু খেয়ে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করতেন। এর পর সুযোগ বুঝে টার্গেট ব্যক্তিকে নেশা জাতীয় ঘুমের ওষুধ মেশানো খাবার খাইয়ে সর্বস্ব লুটে নিতেন। প্রয়োজন হলে টার্গেট ব্যক্তির সঙ্গে বাসে তার জেলার উদ্দেশ্যেও রওনা হতেন।
অভিযানে নেতৃত্ব দেয়া ডিবি উত্তর বিভাগের বিমানবন্দর জোনাল টিমের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) মহরম আলী বলেন, ঈদকে টার্গেট করেছিল তারা। যাত্রাপথে অপরিচিত কারো কাছ থেকে কিছু খাওয়ার ব্যাপারে সতর্ক থাকার বিকল্প নেই। চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেফতারের অভিযান চলছে।
ডিবি পুলিশ জানায়, অজ্ঞান ও পকেটমার চক্রটির ঢাকায় নেতৃত্ব দেন রুহুল কুদ্দুস। আর চক্রের মূলহোতা আপেলসহ ১২ জন হজ মৌসুমে সৌদি আরবে যান। আপেল ২০০৮ সালে প্রথম সৌদি আরবে গিয়ে হাজিদের পকেট কেটে বিদেশি মুদ্রা হাতিয়ে নিতে শুরু করেন। কিন্তু সেবার সৌদি পুলিশের হাতে ধরা পড়ে যান। পরে জেল থেকে মুক্তি পেয়ে দেশে ফেরেন। তিনি কৌশল পাল্টে একই কাজ শুরু করেন।
ডিবি সূত্র জানায়, বিমানবন্দরে আসা-যাওয়ার ক্ষেত্রে কৌশলগত কারণে সৌদি রিয়েল ও বাংলাদেশি টাকা পকেট কেটে নিতেন না তারা; তবে ডলার, পাউন্ড এবং অন্যান্য দেশের মুদ্রা হাতিয়ে নিতেন।
-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।