শামীম তালুকদার: মুসলিম বিশ্বের বৃহৎ ধমীয় উৎসব ঈদুল আযহা আজ সোমবার। এ ঈদ মুসলিম দেশ হিসাবে বাংলাদেশের শহর, গ্রাম সর্বত্র এক অন্যরকম আনন্দ আয়োজনে মেতে উঠে সেখানে ছোটবড়, বর্ণ, গোত্র বা কোন একটি বিষয়কে কেন্দ্র করে ভাগ/বিভক্ত করা হয় না মুসলিম মানুষদের।
সে নির্দেশনায়ই বলা হয়েছে ধর্মীয় গ্রন্থে। এসব উৎসবকে লক্ষ্য করে শহরের বসবাসকারী নাগরিকবৃন্দ মাতৃটানে/নাড়ির টানে গ্রামে ছুটে আসে পরিবারবর্গদের সহিত মিলিত হতে। এ এক অসাধারণ অনুভূতি। শহরের বিশেষ করে ঢাকা শহর হতে বিপুল পরিমান মানুষ গ্রামে যায়/আসে। ট্রেন, বাস, লঞ্চসহ অন্যান্য যানবাহনে যাতায়াত দৃশ্য সচরাচর যা দেখা যায় তা অত্যন্ত রিস্কি। তবু তা গা সওয়া হয় একমাত্র আবেগময় কারণে।
এবার ঈদ আনন্দে যাত্রাপথে আজ দিন পযন্ত প্রায় ৮০% অধিক গ্রামে পৌছে গেছেন/চলমান আছেন। সাথে একটি বিষয় সবার মনেই আতঙ্ক না হলেও উদ্ধেগ সৃষ্টি করেছে ডেঙ্গু। এক্ষেত্রে বেশি উদ্ধেগ সৃষ্টি হচ্ছে ডেঙ্গু সম্পর্কে যথেষ্ঠ জ্ঞান/তথ্য প্রচার,জানানোর ঘাটতি জনিত কারণে বলে প্রতীয়মান। যেমন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী কি গ্রামে যেতে পারবে?রোগটি কি ছোঁয়াছে?আক্রান্ত রোগী হতে কি যে কোন মশার কাপমড়ে তা ছড়াবে?ডেঙ্গু রোগীর যত্ন কিভাবে নিতে হবে?গ্রামে কি চিকিৎসা সম্ভব?তা কিভাবে? এ রকম বিভিন্ন প্রশ্ন আছে ।বিশেষ করে যাদের ঘরে বা পরিবারে একজন ডেঙ্গু রোগী রয়েছে তাদের উদ্ধেগ,উৎকণ্ঠার সীমা নেই। এ ক্ষেত্রে সরকারী সংশ্লিষ্ঠ কতৃপক্ষ বা বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের পরামর্শ গ্রহণ ও সে মোতাবেক চলা অত্যাবশ্যক। বাংলাদেশের বিখ্যাত ডা: জনাব এ বি এম আবদুল্লাহর পরামর্শ,যাদের জ্বর চলছে কিংবা বাড়ি যাওয়ার আগেই জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন তাদের বাড়ি না যাওয়াই সঠিক সিদ্ধান্ত হবে। কারণও বলেছেন তিনি;ডেঙ্গুর ধরণের ভিন্নতার জন্য জটিলতা দেখা যাচ্ছে,যা অত্যন্ত ক্ষতির কারণ হচ্ছে।এ ধরণের পরিস্থিতি সামাল দেওয়া গ্রামে সম্ভবপর হবে না।তাই জ্বর নিয়ে গ্রামে না যাওয়াই উচিৎ। আবার যারা সম্প্রতি ডেঙ্গু থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছেন,তারা গ্রামে গেলে তাদের থেকেও ডেঙ্গু ছড়ানোর সম্ভাবনা নেই।কারণ জ্বর শুরুর ৪-৫ দিন পযন্ত ডেঙ্গু ভাইরাস থাকে।এ সময়ের মধ্যে স্ত্রী এডিস মশার কামড়ে ছড়ানো সম্ভব । অন্যথায় ছড়ানোর ভয় নেই। আবার যদি শহরে থাকাকালীন শরীরে ভাইরাস প্রবেশ করে এবং গ্রামে গিয়ে ডেঙ্গু পজেটিভ হয় তবুও তার মাধ্যমে ডেঙ্গু ছড়ানোর আশঙ্কা নাই। কারণ আগেই বলা হয়েছে ডেঙ্গুর একমাত্র বাহক স্ত্রী এডিস মশা, অন্য কোন প্রকার মশার কামড়ে ডেঙ্গুর জীবানু ছড়ায় না। আরো অবাককরা বিষয় এই আলোচিত এডিস মশা থাকে শহরে;গ্রামে এ মশার অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। আরেকটি পরিস্কার বিষয় সব ডেঙ্গু রোগীর হাসপাতালে প্রয়োজন হয় না তবু আতঙ্কের কারণে হাসপাতালে সাধারণ রোগীরাও ভীড় করছেন। এক্ষেত্রে পরামর্শ; অতিরিক্ত বমি হলে বা রোগী খেতে না পারলে, রক্তের প্লাটিলেট অতিরিক্ত কমে গেলে,রক্তক্ষরণ হলে হাসপাতালে ভর্তি অবধারিত। সরকার ইতোমধ্যে সকল সরকারী হাসপাতালে বিভিন্ন সুবিধ প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। এসব বিষয় মনে রেখে এবং গ্রামে ফেরত সবার ঈদ আনন্দে পরিবারের সব সদস্যদের প্রতি খেয়াল রাখা উচিৎ বিশেষ করে শিশু,বয়স্কদের প্রতি,বা কোথাও ঘুরতে গিয়ে যেন কোন দুর্ঘটনার কারণ না ঘটে এ জন্য সর্বোচ্চ সতর্ক থাকা,রোদ/বৃষ্টিতে সতর্কতা,মটরসাইকেল/গ্রামীণ বাহনের ধীর গতি;শিশুদের পুকুর/নদী/বিলের পানি হতে নিরাপদ রাখা,ইহা ছাড়াও অতিরিক্ত উত্তেজনা হতে বিরত থাকতে সচেষ্ট থাকা।ঈদ আনন্দ নিজ হতে পরিবার,পরিবার হতে সমাজ,সমাজ হতে সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে চেষ্টা করি আমরা সবাই।আমাদের সবার মঙ্গল কামনায় সবার ঈদ আনন্দ হোক আনন্দময়,সুখময়।
-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।