
শফিকুল ইসলাম, রৌমারী প্রতিনিধি: ওমান প্রবাসী হাসমত আলীর ফাঁদে পড়ে ১৬টি পরিবার নিঃস্ব হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। ঘটনাটি ঘটেছে কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী উপজেলার বন্দবেড় ইউনিয়নের বাগুয়ারচর গ্রামে। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগীরা হাসমতসহ ৩জনকে আসামী করে কুড়িগ্রাম কোর্টে পৃথক পৃথক ৪টি প্রত্যারনা মামলা দায়ের করেন।
মামলায় ও ভুক্তভোগী পরিবার সুত্রে জানা গেছে, উপজেলার বন্দবেড় ইউনিয়নের বাগুয়ারচর গ্রামের আব্দুল হাকিমের ছেলে হাসমত আলী। সে ওমান প্রবাসি। এ সুবাদে ওমান দেশে কিছু শ্রমিক নেওয়া কথা বলে নিজ গ্রামের মানুষকে বিভিন্ন ভাবে লোভ লালসা দেখায়। তার কথায় গ্রামের কিছু সহজ সরল মানুষগুলো ওমান দেশে যেতে চাইলে তাদের সঙ্গে চুক্তিপত্র হয়। হাসমত আলী শ্রমিকদের ওমান দেশে ৫০হাজার টাকা বেতনের চাকুরি দেওয়ার কথা বলে বাগুয়ারচর গ্রামের লালু শেখের ছেলে জিয়ারুল ইসলামের কাছে গত ০৩/০৩/১৬ ইং তারিখে ৩লাখ ৪৪হাজার টাকা, একই গ্রামের কাবেলের ছেলে আকবর আলী গত ০১/০৫/১৬ ইং তারিখে ৩লাখ ৪৫ হাজার টাকা, মৃত পাষান আলীর ছেলে মাহফুজল হকের কাছে গত ১০/০১/১৬ ইং তারিখে ৩লাখ ৪৫ হাজার টাকা ও মৃত- ওসমান মন্ডলের ছেলে আলিম উদ্দিনের কাছে গত ২১/০২/১৬ ইং তারিখে ৩লাখ ৩৫হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়।
আদম ব্যবসায়ী হাসমত আলী এই টাকা গ্রহণ করার ৩ মাস পর গত ১০/০৬/১৬ ইং তারিখে তাদেরকে ভুয়া কাগজের পারমিট দিয়ে ওমান দেশে পাঠায়। সে দেশে যাওয়ার পর হাসমত আলী তাদেরকে কোন কাজ দিতে পারেনি। পরবর্তীতে অবস্থাবেগতিক দেখে হাসমত আলী গা ঢাকা দেয়। ভুক্তভোগীদের কারো সাথে সে কোন প্রকার যোগাযোগ করেননি।
ভুক্তভোগী জিয়ারুল ইসলাম, আকবর আলী, মাহফুজল হক ও আলিম উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, গরু,ছাগল,ধান ও সুদের উপর টাকা নিয়া হাসমতকে দিয়েছি। ওমান দেশে যাওয়ার পর হাসমত আমাদের সাথে দেখা পর্যন্ত করেনি। তাছাড়া যে কাগজ দিয়ে আমাদের ওমান দেশে পাঠানো হয়েছে তা ছিল ভুয়া। আমরা সে দেশের পুলিশি হয়রানির ভয়ে পালিয়ে ছিলাম। ঠিকমত খাবার না পেয়ে অনাহারে অর্ধহারে দিন কাটাইছি। বাড়ি থেকে আবারো ধারদেনা করে আমাদের কাছে টাকা পাঠায়। পরে ওই টাকা দিয়ে বিমান ভাড়া করে বাড়িতে ফেরত আসি। বর্তমানে আমরা সবাই স্ত্রী, সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছি। আমরা প্রশাসনের কাছে বিচার দাবী করছি। যাতে আমাদের টাকাগুলো উদ্ধার করা যায়।
এ ব্যাপারে ভুক্তভোগি জিয়ারুল বাদী হয়ে আদম ব্যবসায়ী হাসমত আলীর বাবা আব্দুল হাকিম, হাসমত আলী ও তার স্ত্রী হাফিজা খাতুনকে আসামী করে কুড়িগ্রাম কোর্টে পৃথক ৪টি প্রতারনা মামলা দায়ের করেছেন। যার জিআর নং ৭৫/২০১৯ ইং।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত হাসমত আলী অর্থ লেনদেনের কথা অস্বীকার করেন।
-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।