সেবা ডেস্ক: দুই সপ্তাহ আগে কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নিয়ে সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল করেছিল ভারত। এর পর থেকেই কাশ্মীর অবরুদ্ধ। তবে গতকাল সোমবার সেখানকার স্কুল খুলে দেওয়া হলেও শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ছিল না বললেই চলে। জনগণের চলাফেরায় এখনও বহাল আছে নিষেধাজ্ঞা। অভিভাবকরা জানিয়েছেন, নিরাপত্তার নিশ্চয়তা না পেলে সন্তানদের স্কুলে পাঠাবেন না তারা। কারণ স্কুল শিক্ষার্থীদেরও তুলে নিয়ে যাচ্ছে নিরাপত্তা বাহিনী। তারা আরও অস্থিরতার আশঙ্কা করছেন। এদিকে ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে গণভোট দিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কোরেশি। আর উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে গতকাল ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল এবং ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোর প্রধান অরবিন্দ কুমারের সঙ্গে বৈঠক করেছেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। খবর এএফপি, রয়টার্স, দ্য ডন ও এনডিটিভির।
জম্মু-কাশ্মীরে স্বাভাবিক অবস্থা বিরাজ করছে- এমনটা দেখাতেই মূলত শ্রীনগরে ১৯০টি প্রাইমারি স্কুল গতকাল খুলে দেয় ভারত সরকার। তবে অভিভাবকরা বলেছেন, মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক চালু না হওয়া পর্যন্ত তারা সন্তানদের স্কুলে পাঠাবেন না। কারণ স্কুলে পাঠানোর পর মোবাইল ফোন ছাড়া সন্তানদের সঙ্গে যোগাযোগের আর কোনো উপায় নেই। গত দুই সপ্তাহে কাশ্মীরের বাতামালো জেলায় নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছে জনতা। গুলজার আহমেদ নামের সেখানকার এক বাসিন্দা বলেন, তার দুই সন্তান স্কুলে পড়ে। কিন্তু তাদের জীবন ঝুঁকির মুখে ফেলতে চান না তিনি। কারণ গত কয়েকদিনে পুলিশ বেশ কিছু স্কুলশিক্ষার্থীকে ধরে নিয়ে গেছে এবং সংঘর্ষে অনেক শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। তিনি আরও বলেন, 'ঘরেই আমাদের সন্তানরা নিরাপদ। স্কুলে কে তাদের নিরাপত্তা দেবে।' গতকালও শ্রীনগরের রাস্তাঘাট এবং বাজার এলাকাগুলো ছিল একেবারেই ফাঁকা। একইরকম চিত্র ছিল স্কুলগুলোরও। শিক্ষকদের উপস্থিতি থাকলেও শিক্ষার্থীদের দেখা মেলেনি। এক শিক্ষক জানান, এমন উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীরা কীভাবে স্কুলে আসবে? স্কুল খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে সরকার আসলে বাচ্চাগুলোকে কামানের গোলার সামনে ফেলে দিয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত স্কুল বন্ধ রাখাই ভালো বলে তিনি মনে করেন।
স্কুল শিক্ষার্থীদের আটকে অভিভাবকদের উদ্বেগ আরও পরিস্কার হয় একজন ম্যাজিস্ট্রেটের বক্তব্যে। তিনি জানান, গত দুই সপ্তাহে রাজনীতিবদিসহ কাশ্মীরের চার সহস্রাধিক মানুষকে আটক করা হয়েছে। কারাগারে স্থান সংকুলান না হওয়ায় অনেককে কাশ্মীরের বাইরে ভারতের অন্য রাজ্যে নিয়ে রাখা হয়েছে। তবে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার এই গণগ্রেফতার নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি, বরং এ ধরনের সংবাদ প্রতিবেদনকে অস্বীকার করেছে।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কোরেশি ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে গণভোট দিতে নরেন্দ্র মোদিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, 'নরেন্দ্র মোদিকে চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলছি, কারফিউ উঠিয়ে নিন এবং কাশ্মীরের নেতৃবৃন্দকে ডাকুন। শ্রীনগর বা যেখানে আপনাদের খুশি আজই গণভোট দিন।' কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসন বাতিলে সেখানকার মানুষের মনোভাব কী তা জানতে ভারত সরকারকে গণভোট দেওয়ার আহ্বান জানান কোরেশি।
-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।