চিলমারীর স্বপ্ন ভেসে যায় ব্রহ্মপুত্রের জ‌লে

S M Ashraful Azom
0
চিলমারীর স্বপ্ন ভেসে যায় ব্রহ্মপুত্রের জ‌লে
সেবা ডেস্ক: ব্রহ্মপুত্রের নদের পাড় ঘেঁষে আঞ্জুমান আরার বাড়ি। নদীর পাড় ভাঙতে শুরু করেছে। আঞ্জুমান আরার নেই থাকার বা যাওয়ার অন্য জমি। তাই ঝুঁকি জেনেও বাড়ি না সরিয়ে সেখানেই ছিলেন হতদরিদ্র আঞ্জুমান আরা। হঠাৎ হুড়মুড়িয়ে বাড়িটি নদীতে চলে যায়। অল্পের জন্য বেঁচে যান তিনি। শুধু আঞ্জুমান আরা, সাহেদা, ফুলবাহার নয়- তার মতো হাজারো পরিবার ব্রহ্মপুত্রের রাক্ষসী থাবার কাছে হার মানতে বাধ্য হয়েছেন। সব হারিয়ে হয়েছেন নিঃস্ব। চারদিকে ভাঙছে তো ভাঙছে আর রাক্ষসের মতো নিমিশেই ব্রহ্মপুত্র গিলে খাচ্ছে বসতবাড়ি, ফসলি জমিসহ সাজানো সংসার। ব্রহ্মপুত্রের পেটে ভিটামাটি হারিয়ে নিঃস্ব হচ্ছে মানুষ। সেই সঙ্গে ঐতিহ্য ‘ওকি গাড়িয়াল ভাই, হাঁকাও গাড়ি তুই চিলমারীর বন্দরে’ ভাওয়াইয়া ও পল্লীগীতির সম্রাট আব্বাস উদ্দিনের গাওয়া বিখ্যাত গানের চিলমারী বন্দর এখন শুধু গানেই সীমাবদ্ধ।

ভাঙছে নদী কাঁদছে মানুষ। হারিয়ে যাচ্ছে চিলামারী। নিঃস্ব হচ্ছে মানুষ। ব্রহ্মপুত্রের গ্রাসে দিনে দিনে হারিয়ে যাচ্ছে চিলমারী। বাড়ছে নদীর পরিধি। কমছে মানুষের আবাসস্থল। নদীর ভাঙনে সেই চিলমারী বন্দরের অস্তিত্ব অনেক আগেই হারিয়ে গেছে। পুরনো সেই চিলমারী বন্দর বাঁচাতে না পারলেও ডান তীর রক্ষা প্রকল্প ও নতুনভাবে নদীবন্দরটিসহ এবার চিলমারী উপজেলাকে বাঁচাতে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার দাবি উঠেছে ‘হামাক বাঁচান হামার চিলমারীকে বাঁচান’। শুধু তাই নয়, ভাঙনকবলিত মানুষের কান্নায় ভারী হয়ে উঠেছে আকাশ-বাতাস। চলতি বন্যার পানি কমতে শুরু করতেই শুরু হয়ছে ব্রহ্মপুত্রের তাণ্ডব। এসব কারণে দেশের মানচিত্রে আয়তনের দিক থেকে ছোট হয়ে আসছে এই উপজেলাটি। সরকারের পক্ষ থেকে নদী ভাঙন রোধে পদক্ষেপ নেয়া হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অবহেলা আর দুর্নীতির সঙ্গে সঙ্গে এখন পর্যন্ত সঠিক কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় শেষ হতে বসেছে চিলমারী উপজেলার সঙ্গে মানুষের জীবন-জীবিকা। জানা গেছে, গত কয়েকদিনে উপজেলার রমনা, জোড়গাছ, মনতোলা, উত্তরখাউরিয়ার, খেদাইমারী, ফেসকা, নটারকান্দি, মাঝিপাড়া, কড়াইবরিশালসহ বিভিন্ন এলাকায় শতশত বাড়িঘরসহ হাজারো একর ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।

সরজমিনে উপজেলার রমনা জোড়গাছ, নয়ারহাট, অষ্টমীরচরসহ বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা যায় ভাঙনের তাণ্ডব। কথা বলার সময় নেই তাদের তারা ব্যস্ত এখন বাড়িঘর সরানোর কাজে। কিন্তু কোথায় যাবে এটাও তাদের নেই জানা। ভাঙনে বাড়ি-ঘরহারা মানুষজন এ প্রতিনিধিকে জানান, তাদের দুঃখ-কষ্টের কথা। চিলমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহ মো. শামসুজ্জোহা বলেন, ডানতীর রক্ষা প্রকল্পের কাজ চলমানসহ ভাঙন থেকে রক্ষা পেতে হলে পুরোপুরি নদটি শাসন করার ব্যবস্থা নিতে হবে। উপজেলা চেয়ারম্যান মো. শওকত আলী সরকার বীর বিক্রম বলেন আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি চিলমারীকে রক্ষার জন্য এছাড়াও ডানতীর রক্ষা প্রকল্পের কাছও চলমান রয়েছে আশা করছি, সকল সমস্যার সমাধান হবে। কুড়িগ্রাম পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম বলেন, আমাদের একটা নতুন পরিকল্পনা চলছে। নদটাকে একটি নির্দিষ্ট চ্যানেলে নিয়ে আসা। এরই মধ্যে এ বিষয়ে গবেষণা শুরু হয়েছে। এছাড়াও রক্ষা প্রকল্পসহ আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি নদী ভাঙ রোধে।

 -সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন

ট্যাগস

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top