ডাব বিক্রেতার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে শত কোটি টাকা!

S M Ashraful Azom
0
ডাব বিক্রেতার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে শত কোটি টাকা!
সেবা ডেস্ক: নাম তার নাসির চৌধুরী। যিনি এক সময় ছিলেন ডাব বিক্রেতা, সেখান থেকে উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের টি-বয়। এরপর নকল সনদে নাম লেখান দলিল লেখক হিসেবে। নাম লেখার পরেই তৈরি করেন টাকা আয়ের বিভিন্ন ফাঁদ। গড়ে তোলেন টাকার পাহাড়।

নাসির ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের সিমলা রোকনপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা দলিল লেখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক। তিনি পুকুরিয়া গ্রামের জমশেদ আলী চৌধুরীর ছেলে। দরিদ্র বাবার সংসারে জন্ম হওয়ায় অতি কষ্টে দিনাতিপাত করতেন নাসির।

দলিল লেখক নাসিরের বিরুদ্ধে দুর্নীতিসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সুষ্ঠু অনুসন্ধানে রোববার সাক্ষীদের তলব করেছে দুদক যশোর সমন্বিত জেলা কার্যালয়। তবে নাসির যাবেন ৫ নভেম্বর।

২৮ অক্টোবর দুদক যশোর সমন্বিত জেলা কার্যালয় থেকে পাঠানো বর্ণিত ০০.০১.৪৪০০.৭৩৩.০১.০১৯.১৯.২৯১৪ নম্বর স্মারকে চিঠিতে অনুসন্ধানী কর্মকর্তা সহকারী পরিচালক মো. শহীদুল আসলাম মোড়লের অফিসে সকাল ১০টায় থাকতে বলা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, তৎকালীন সাব রেজিস্ট্রার আলতাফ হোসেনের বাড়িতে কাজ করতেন নাসির। সে সুবাদে তিনিই তাকে লাইসেন্স করে দেন। এরপর কোটি টাকার সম্পদের মালিক হন নাসির। এলাকায় গড়ে তোলেন সন্ত্রাসী বাহিনী। একের পর এক বাড়ি, দামি গাড়ি, মাঠে জমি ও ব্যাংকে টাকার পাহাড় গড়ে তোলেন।

একজন দলিল লেখক হয়ে বেপরোয়া দুর্নীতি ও জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের দায়ে অনুসন্ধানে নামে দুদক। প্রাপ্ত তথ্যে দেখা গেছে, নাসিরের প্রথম স্ত্রী খোদেজা বেগমের নামে যশোরের আল আরাফা ব্যাংকে রয়েছে ৫০ লাখ টাকার ফিক্সড ডিপোজিট। যার অ্যাকাউন্ট নম্বর ০৩০১৬২০০০১০২৫। ২০১৮ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০১৯ সালের ২৮ জানুয়ারি পর্যন্ত ব্যাংক স্টেটমেন্টে এ টাকার তথ্য পাওয়া গেছে।

তার শ্যালিকা মাহফুজা খাতুনের নামেও রাখা আছে ৫০ লাখ টাকা। ২০১৭ সালের ১৪ মে যশোরের আল আরাফা ব্যাংকে একটি অ্যাকাউন্ট খোলা হয়। তার ব্র্যাক ব্যাংক যশোর শাখায় আটটি অ্যাকাউন্টে প্রায় কোটি টাকার তথ্য পেয়েছে অনুসন্ধানী দল।

এছাড়া এবি ব্যাংকে মাহফুজা ও তার শ্যালক জিয়া কবীরের নামেও কোটি টাকা থাকতে পারে এমন গুজব ছড়িয়ে পড়েছে। তার কালীগঞ্জ শহরের আড়পাড়ায় তিনটি আলিশান বাড়ি, নদীপাড়ায় একটি ও কুল্লোপাড়ায় বাগান বাড়ি রয়েছে। নাসিরের রয়েছে অঢেল সম্পদ। গ্রামে তার কারণে কেউ উচ্চ মূল্যে জমি কিনতে পারে না। তাকে জমি না দিলে বাড়িতে হামলা করা হয়। গ্রামের কোনো মেয়ে ফারাজ বিক্রি করতে চাইলে কম টাকায় সেই জমি কিনে নেন নাসির। বাবার ৪ শতাংশ জমি থেকে নাসির শত কোটি টাকার জমি কিনেছেন।

সর্বশেষ তথ্যমতে, নাসিরের নামে ৫৯.২৭ বিঘা জমির সন্ধান মিলেছে। কালীগঞ্জের বাবরা, পুকুরিয়া, তিল্লা, ডাকাতিয়া, অ্যাড়েখাল, মনোহরপুর, সিমলাসহ বিভিন্ন মাঠে এ জমি রয়েছে।

অভিযোগের বিষয়ে নাসির চৌধুরী বলেন, মাঠে আমার এতো জমি নেই। কালীগঞ্জের এসিল্যান্ড তদন্ত করে মাত্র ১০ বিঘা জমির অস্তিত্ব পেয়েছেন। আমার স্ত্রী ও শ্যালিকার নামে যে টাকা ব্যাংকে রয়েছে সেটা আমার শ্বশুর চুরামনকাঠি বাজারে সম্পত্তি বিক্রি করে দিয়েছেন।

তিনি আরো বলেন, আমার আখ চাষ আছে। এছাড়া আমি দলিল লেখক। এসব খাত থেকে বছরে অনেক টাকা আয় হয়। আমি দুর্নীতি করি না।

 -সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন

ট্যাগস

Post a Comment

0Comments

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।

Post a Comment (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top