
গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি: গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জের আদিবাসী সাঁওতালদের পৈত্রিক জমি ফিরিয়ে দেয়ার দাবিতে আজ ২৪ ডিসেম্বর মঙ্গলবার জাতীয় আদিবাসী পরিষদ গাইবান্ধা জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেন। স্মারকলিপিতে ৫শ’ সাঁওতালসহ অন্যান্য স¤প্রদায়ের লোকরাও স্বাক্ষর করেন।
এতে উলেখ করা হয়, গোবিন্দগঞ্জের সাহেবগঞ্জ বাগদা ফার্মের ১৮৪২.৩০ একর অধিগ্রহণকৃত জমি আদি বাসীদের ফিরিয়ে দিতে হবে, আদিবাসীদের সম্পত্তি রিকুইজিশন বাতিল, সাঁওতালদের উপরে আক্রমন, অগ্নি সংযোগ, গুলিবর্ষণ ও বাড়িঘরে লুটপাটের ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান, পুলিশের গুলিতে নিহত ও আহত সাঁওতাল পরিবারগুলোকে ক্ষতিপূরণ, গত ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বরের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত আদিবাসী এবং বাঙালিদের বিরুদ্ধে সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং তাদের উপর পুলিশ ও স্থানীয় সন্ত্রাসীদের সকল প্রকার হয়রানি বন্ধ, ১৯৪৮ সালের পূর্ববঙ্গ সম্পদ রিকুইজিশন আইন অনুযায়ী জমি পুনরুদ্ধার চুক্তি বাস্তবায়ন, আদিবাসী সাঁওতাল স¤প্রদায়ের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় জড়িত পুলিশসহ অন্যান্য কর্মকর্তাদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় নিয়ে আসা, ২০০৪ সালে রংপুর চিনিকল বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর এর টাকা দুর্নীতি এবং আত্মসাতের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ।
স্মারকলিপি প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় আদিবাসী পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক বিমল চন্দ্র রাজোয়াড়, নির্বাহী সদস্য রাজকুমার সাও, গাইবান্ধা যুব ইউনিয়নের সভাপতি প্রতিভা সরকার, সাহেবগঞ্জ বাগদা ফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সভাপতি ফিলিমন বাস্কে, সদস্য থমাস হেমব্রম, বিজুল কিস্কু, আদিবাসী ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি সুমিতা রবিদাস, গাইবান্ধা কর্মজীবী নারীর সাংগঠনিক সম্পাদক অঞ্জলী রাণী দেবী প্রমুখ।
উলেখ্য, মহিমাগঞ্জের রংপুর চিনিকল কর্তৃপক্ষ ১৯৫৫ সালে সাহেবগঞ্জ বাগদাফার্ম এলাকার আশেপাশের প্রায় ১৮৪২.৩০ একর জমি রিকুইজিশন করে। রিকুইজিশনকৃত অধিকাংশ জমি আদিবাসী সাঁওতালদের ছিল। আখ উৎপাদনের জন্য ১৯৬২ সালে ওইসব জমি রিকুইজিশন করা হয়।
আখ ব্যাতিত অন্য কোন অর্থকরি ফসল উৎপাদিত হলে জমির প্রকৃত মালিকদের ক্ষতিপূরণসহ জমি ফেরত দেয়া হবে। কিন্তু ২০০৪ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত মিল কর্তৃপক্ষ নামমাত্র মূল্যে রিকুইজিশনকৃত জমি লীজ দিতে শুরু করে স্থানীয় প্রভাবশালীদের কাছে। তখন আদিবাসীরা মিল কর্তৃপক্ষকে এই অপতৎপরতার বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করে। পরে ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর রংপুর সুগার মিল কর্তৃপক্ষ সাঁওতাল পলীর জমি নিজেদের দাবী করে হামলা চালায়। এতে ৩ জন সাঁওতাল নিহতসহ কমপক্ষে ৩০ জন আহত হন। এছাড়াও অগ্নি সংযোগের ফলে গোটা সাঁওতাল পলী পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।