মোংলা বন্দর ড্রেজিংয়ে ৮০০ কোটি টাকার প্রকল্প একনেকে অনুমোদন

S M Ashraful Azom
0
মোংলা বন্দর ড্রেজিংয়ে ৮০০ কোটি টাকার প্রকল্প একনেকে অনুমোদন
সেবা ডেস্ক: জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ‘মোংলা বন্দর চ্যানেলের ইনার বারে ড্রেজিং’ প্রকল্প অনুমদন দেওয়া হয়েছে।


মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে প্রধানমন্ত্রী ও একনেকের চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এই প্রকল্পর অনুমোদন দেওয়া হয়। সভা শেষে এ তথ্য জানান পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।

মোংলা বন্দরে সারা বছর জাহাজ চলাচলের উদ্যোগ ‘মোংলা বন্দর চ্যানেলের ইনার বারে ড্রেজিং’ নামের প্রকল্পটি একনেকে উপস্থাপন করেছিল নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়। এটি বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ৭৯৩ কোটি ৭২ লাখ ৮০ হাজার টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে মোংলা বন্দরের জেটিতে ৯ দশমিক ৫ থেকে ১০ মিটার ড্রাফটের জাহাজ হ্যান্ডলিংয়ের জন্য প্রয়োজনীয় গভীরতা অর্জন করা সম্ভব হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। প্রকল্পটি ২০২২ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়ন করবে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ।

সূত্র জানায়, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত সমীক্ষা অনুযায়ী মোংলা বন্দরে ২০২৫ সালে ৮ লাখ ৭২ হাজার টিউজ কনটেইনার এবং ২০৫০ সালে ৪৫ লাখ ৩২ হাজার টিউজ কনটেইনার এবং ৩০ হাজারেরও বেশি গাড়ি হ্যান্ডলিংয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের পর বার্ষিক ৪৫ লাখ মেট্রিক টন কয়লা কাঁচামাল হিসেবে এবং রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাঁচামাল মোংলা বন্দরের মাধ্যমে আমদানি করতে হবে। ফলে ২০২১ সালের পর মোংলা বন্দরের ব্যবহার বহু গুণে বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা যায়। মোংলা বন্দরের বর্ধিত চাহিদা সুষ্ঠুভাবে মোকাবেলা করার জন্য মোংলা বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে। এ প্রেক্ষাপটে প্রকল্পটি হাতে নেয়া হয়েছিল।

নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বঙ্গোপসাগর থেকে প্রায় ১৩১ কিলোমিটার উজানে পশুর নদীর পূর্ব তীরে মোংলা বন্দর অবস্থিত। বঙ্গোপসাগর থেকে চ্যানেলের প্রবেশমুখ যা আউটার বার নামে এবং জয়মনিরগোল থেকে বন্দর জেটি পর্যন্ত যা ইনার বার নামে পরিচিত। এ দুটি এলাকায় প্রায় ৩০ কিলোমিটারব্যাপী চ্যানেলে নাব্য ৫ থেকে ৬ মিটার। চ্যানেলের অবশিষ্ট অংশে গভীরতা ৯ মিটারের অধিক থাকায় শুধু আউটার বার ও ইনার বারে কম গভীরতার কারণে বন্দরের জেটিতে সর্বোচ্চ ৮ দশমিক ৫ মিটার ড্রাফটের জাহাজও আনা সম্ভব হয় না। বাংলাদেশে যেসব কনটেইনারবাহী জাহাজ আগমন করে এসব জাহাজ পূর্ণ লোড অবস্থায় প্রায় ৯ দশমিক ৫ মিটার ড্রাফটের হয়ে থাকে। মোংলা বন্দরের আউটার বার ও ইনার বারের নাব্য সংকটের কারণে কনটেইনারবাহী ৯ দশমিক ৫ মিটার ড্রাফটের জাহাজ মোংলা বন্দরে সরাসরি প্রবেশ করতে পারে না। এতে মোংলা বন্দরে কনটেইনার পরিবহনের খরচ ও সময় বৃদ্ধি পায়। মোংলা বন্দর ব্যবহার বৃদ্ধির জন্য আউটার বারে ১১ কিলোমিটার এলাকায় ৮ দশমিক ৫০ মিটার সিডি গভীরতা ড্রেজিং করার জন্য মোংলা বন্দর চ্যানেলের আউটার বারে ড্রেজিং প্রকল্পের আওতায় ড্রেজিং কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে। ড্রেজিং সমাপ্ত হলে স্বাভাবিক জোয়ারে চ্যানেলের জয়মনিরগোল পর্যন্ত ৯ দশমিক ৫ মিটার ড্রাফটের জাহাজ নির্বিঘ্নে আসতে পারবে। জয়মনিরগোল থেকে বন্দর জেটি পর্যন্ত প্রায় ১৯ কিলোমিটারব্যাপী ইনার বারে, আউটার বারের মতো ৮ দশমিক ৫০ মিটার সিডি গভীরতায় ড্রেজিং করা হলে মোংলা বন্দরের জেটিতে স্বাভাবিক জোয়ারের সহায়তায় ৯ দশমিক ৫০ মিটারের অধিক ড্রাফটের জাহাজ নির্বিঘ্নে হ্যান্ডল করা সম্ভব হবে। বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরের সর্বোচ্চ ৯ দশমিক ৫০ মিটার ড্রাফটের জাহাজ হ্যান্ডেল করা হচ্ছে। সেজন্য পশুর চ্যানেলের ইনার বারে ড্রেজিং করা হলে মোংলা বন্দরকে চট্টগ্রাম বন্দরের একটি কার্যকর বিকল্প বন্দরে পরিণত করা সম্ভব হবে।

 -সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন

ট্যাগস

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top