
আবদুল জলিল, কাজিপুর (সিরাজগঞ্জ): স্বাধীকার থেকে স্বাধীনতার পথে একনদী রক্তের তপ্ত¯্রােতে ৭১ এ অর্জিত হয়েছে চূড়ান্ত বিজয়। আর এ বিজয়ের পথে রক্ত ঢেলে চলার শুরু সেই ১৯৫২ থেকে।
বুকের তাজা রক্ত ঢেলে মায়ের ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার নজীর বিহীন ইতিহাসের বীর সেনানীদের জাতিসংঘ দিয়েছে অনন্য মর্যাদা। দিবসটি পালিত হয় অনেক দেশে। সরকারিভাবে দিবসটি পালনের জন্যে নেয়া হয়েছে নানা কর্মসূচি। এইদিনে দেশের মানুষ ভাষা আন্দোলনে আত্মত্যাগকারী শহীদদের স্মৃতিচিহ্ন শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়ে নানা আয়োজনে তাদের স্মরণ করবেন।
কিন্তু সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহিদ মিনার না থাকায় এখানকার শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হবে এই আয়োজন থেকে। উপজেলার সরকারি বেসরকারি কিন্ডারগার্টেনের কয়েক হাজার শিক্ষার্থী এবং ভাষার মাসে শ্রদ্ধা নিবেদনের ক্ষেত্র না পেয়ে চরম হতাশার মাঝে বেড়ে উঠছে।
উপজেলা শিক্ষা অফিসের তথ্যমতে, কাজিপুরে ১৮টি কলেজ, ৩৩টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৬টি কারিগরী কলেজ, ১১ টি নি¤œমাধ্যমিক বিদ্যালয়, ২৩৭ টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১১ টি মাদ্রাসা এবং শতাধিক কিন্ডার গার্টেন স্কুল রয়েছে। এদের মধ্যে প্রায় অর্ধেকের বেশি প্রতিষ্ঠানে শহিদ মিনার নেই। প্রাথমিকের নতুন যেসব বিদ্যালয় সরকরিকরণ করা হলো সেই আন্দোলনের মহাসচিব আমিনুল ইসলামের নিজ প্রতিষ্ঠান কাজিপুরের বরইতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েও নেই শহিদ মিনার। সেইসাথে নতুন করে প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে সরকারিকরণ করা প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শহিদ মিনার কিংবা খেলার মাঠ কোনটিই নেই।
বাধ্যবাধকতা থাকলেও এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, শিক্ষার্থীগণ নিজ বিদ্যালয়ে শহিদ মিনারে ফুল দিয়ে শহিদদের শ্রদ্ধা জানাতে পারেন না। দুএকটি প্রতিষ্ঠান শহিদ মিনার আছে পাশের এমন বিদ্যালয়ে গিয়ে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। বেশিরভাগ বিদ্যালয়গুলোতে সেই সুযোগও নেই। বিশেষ করে চরাঞ্চলের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর হাতে গোণা কয়েকটি ছাড়া কোন প্রতিষ্ঠানেই শহিদ মিনার নেই। এসব বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ভাষা শহিদদের ইতিহাস সম্পর্কেও অন্ধকারেই থেকে যাচ্ছে। অথচ এবার সরকারিভাবে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এই দিবসটি পালনের জন্যে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে কাজিপুর উপজেলা শিক্ষা অফিসার আমজাদ হোসেন অনেক প্রতিষ্ঠানে শহিদ মিনার নেই উল্লেখ করে জানান, “পৌরসভার মধ্যে অবস্থিত বিদ্যালয়গুলোকে উপজেলা সদরে আসতে বলা হয়েছে। বাকি প্রতিষ্ঠানের নিকটে যেখানে শহিদ মিনার আছে সেখানে গিয়ে অথবা অস্থায়ীভাবে বানিয়ে সেখানে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে বলেছি।”
এদিকে বছরে অন্তত একটি দিনের জন্যেও ভাষার জন্য জীবন উৎসর্গকারী মৃত্যুঞ্জয়ীদের স্মরণ করতে না পেরে নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্র্থিরা তাদের ইতিহাস ভুলে যেতে বসেছে।
-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।