করোনা ভাইরাস যুদ্ধে আমাদের সবারই দায়িত্ব ঘরে থাকা: প্রধানমন্ত্রী

S M Ashraful Azom
করোনা ভাইরাস যুদ্ধে আমাদের সবারই দায়িত্ব ঘরে থাকা প্রধানমন্ত্রী

সেবা ডেস্ক: পুরো বিশ্বে ছড়িয়ে প্রাণঘাতি নভেল করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জয়ী হওয়ার দৃঢ় সংকল্প ব্যক্ত করে বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যেকোনো কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য তার সরকার প্রস্তুত। তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আমরা শত্রুর মোকাবিলা করে বিজয়ী হয়েছি। করোনাভাইরাস মোকাবিলাও একটা যুদ্ধ। এ যুদ্ধে আপনার দায়িত্ব ঘরে থাকা।
বুধবার সন্ধ্যায় ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের প্রাক্কালে জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে এ আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সরকার প্রধান বলেন, এই মুহূর্তে আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার মানুষকে এই প্রাণঘাতী ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রক্ষা করা।

‘বাঙালি বীরের জাতি এবং নানা দুর্যোগ এবং সঙ্কট বাঙালি জাতি সম্মিলিতভাবে মোকাবিলা করেছে,’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা সবার প্রচেষ্টায় এ যুদ্ধে জয়ী হবো, ইনশাআল্লাহ।’

শেখ হাসিনা বলেন, আজ সমগ্র বিশ্ব এক অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে চলছে। তবে, যেকোনো কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য আমাদের সরকার প্রস্তুত রয়েছে। আমরা জনগণের সরকার। সব সময়ই আমরা জনগণের পাশে আছি। আমি নিজে সর্বক্ষণ পরিস্থিতির উপর নজর রাখছি। তিনি প্রাণঘাতি করেনাভাইরাস মোকাবিলায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা এবং জনগণকে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার জন্যও আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আবারো বলছি- স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন। সকলে যার যার ঘরে থাকুন, ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, নিরাপদ থাকুন।

দুর্যোগের সময়ই মনুষ্যত্বের পরীক্ষা হয় উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, এখনই সময় পরস্পরকে সহায়তা করার, মানবতা প্রর্দশনের।

প্রধানমন্ত্রী সবাইকে ধৈর্য ধারণ করে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, এ সঙ্কটময় সময়ে আমাদের সহনশীল এবং সংবেদনশীল হতে হবে। কেউ সুযোগ নেয়ার চেষ্টা করবেন না। বাজারে পণ্যের কোন ঘাটতি নেই।

দেশের অভ্যন্তরে এবং বাইরের সঙ্গে সরবরাহ চেইন অটুট রয়েছে। অযৌক্তিকভাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি করবেন না, জনগণের দুর্ভোগ বাড়াবেন না উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে বলেন, সর্বত্র বাজার মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

খাদ্যদ্রব্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি মজুদ করার বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের এখন কৃচ্ছতা সাধনের সময়। যতটুকু না হলে নয়, তার অতিরিক্ত কোন ভোগ্যপণ্য কিনবেন না। মজুদ করবেন না। সীমিত আয়ের মানুষকে কেনার সুযোগ দিন।

তিনি বলেন, আমরা খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ। এ বছর রোপা আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে। সরকারি গুদামগুলোতে ১৭ লাখ মেট্রিক টনের বেশি খাদ্যশস্য মজুদ রয়েছে। বেসরকারি মিল মালিকদের কাছে এবং কৃষকদের ঘরে প্রচুর পরিমাণ খাদ্যশস্য মজুদ আছে। চলতি মৌসুমে আলু-পেঁয়াজ-মরিচ-গমের বাম্পার ফলন হয়েছে। তিনি এ সময় আবাদি জমি ফেলে না রেখে উৎপাদন বৃদ্ধিতে মনযোগী হওয়ায় ও কৃষকদের প্রতি আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কৃষক ভাইদের প্রতি অনুরোধ, কোন জমি ফেলে রাখবেন না। আরো বেশি বেশি ফসল ফলান।

যুগে যুগে জাতীয় জীবনে নানা সঙ্কটময় মুহূর্ত আসে এবং জনগণের সম্মিলিত শক্তির বলেই সেসব দুর্যোগ থেকে মানুষ পরিত্রাণ পেয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এর আগেও প্লেগ, গুটি বসন্ত, কলেরার মত মহামারি মানুষ প্রতিরোধ করেছে এবং সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় নিশ্চয়ই বিশ্ববাসী এ দুর্যোগ থেকেও দ্রুত পরিত্রাণ পাবে।
আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক সহযোগিতার ভিত্তিতে করোনাভাইরাস প্রতিরোধের লক্ষ্যে গত ১৫ মার্চ সার্কভুক্ত দেশগুলোর রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী তার ভিডিও কনফারেন্সিংয়ে যুক্ত হওয়ার কথা উল্লেখ করেন।

তিনি এ রোগের প্রাদুর্ভাব রোধে আঞ্চলিকভাবে সম্মিলিত প্রয়াস গ্রহণের জন্য সার্কভুক্ত দেশসমূহের নেতাদের উদাত্ত আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ উপলক্ষে সার্কভুক্ত দেশসমূহের একটি যৌথ তহবিল গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ সে তহবিলে ১৫ লাখ ডলার দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে।


 -সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন


#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top