গাইবান্ধায় চৈতালি বৈশাখী মেলা না বসায় কুম্ভকাররা দুর্ভোগে

S M Ashraful Azom
গাইবান্ধায় চৈতালি বৈশাখী মেলা না বসায় কুম্ভকাররা দুর্ভোগে

গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি: করোনা ভাইরাসের কারণে গাইবান্ধার বিভিন্ন এলাকার হাটে-মাঠে-ঘাটে ও নদীর পাড়ে প্রতিবছর যে সমস্ত নির্ধারিত চৈতালি, বৈশাখী ও নববর্ষের মেলা বসতো এবার নিষেধাজ্ঞার কারণে কোথাও কোন মেলা বসেনি। ফলে মেলা উদযাপিত না হওয়ায় খেলনা তৈরী যাদের জীবন জীবিকা সেইসব মৃত শিল্পী কুম্ভকার পরিবারগুলো এখন দুর্ভোগের কবলে পড়েছে। তারা বৈশাখী মেলাকে কেন্দ্র করে যে সমস্ত মাটি, শোলা, তালপাতাসহ বিভিন্ন উপকরণের যে সমস্ত খেলনা ইতোমধ্যে তৈরী করেছিল সেগুলো বিক্রি করতে না পারায় তারা এখন অর্থাভাবে ঋণ নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে।

গ্রাম বাংলার হাজার বছরের ঐতিহ্য একান্ত  নিজস্ব কৃষ্টি এই গ্রামীণ বৈশাখী মেলা। যেখানে পলীর চারু ও কারু শিল্প পণ্যের সমারোহু ঘটে, বেচা কেনা হয়। গাইবান্ধার এইসব মেলার পণ্য সম্ভারের আলাদা বৈশিষ্ট রয়েছে। গাঁয়ের নিয়মিত হাট-বাজারগুলোতে এসব পণ্য পাওয়া যায় না। শুধু বৈশাখী মেলাতেই মেলার বিশেষ চিহ্নিত কিছু পণ্যের আমদানী হয়। মেলার বিচিত্র বর্ণের এসব চারু কারু পণ্য কিনতেই নানা বয়সের মানুষের আগমনে মুখর হয় মেলাগুলো।

কিন্তু চারু কারু পণ্যের পাশাপাশি মাটি, শোলা, বাঁশ ও তালপাতার তৈরী নানা খেলনা মেলাগুলোর অন্যতম আকর্ষণ। গাইবান্ধায় এসব খেলনা তৈরী করে গাঁয়ের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর পেশাদার মৃৎশিল্পী ও খেলনা শিল্পীরা। জেলার সদর উপজেলার বাদিয়াখালী ও খোলাহাটী ইউনিয়নের পালপাড়া, শিবপুর, কলাকোপা, ধুতিচোরা, ফুলছড়ির রসুলপুর, কঞ্চিপাড়া, সাঘাটার ঝাড়াবর্ষা, পুটিমারী, সুন্দরগঞ্জের বেলকা, পাঁচপীর, ধুবনী, চন্ডিপুর, কঞ্চিবাড়ী, শ্রীপুর, ধর্মপুর, সাদুল্যাপুরের রসুলপুর, দামোদরপুর, পলাশবাড়ীর হিজলগাড়ী এবং গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কোচাশহর, আরজিশাহপুর ও শক্তিপুর গ্রামের পেশাদার মৃৎশিল্পীরা নানা খেলনা তৈরীর কাজে নিয়োজিত রয়েছে। নানা প্রতিক‚লতা সত্বেও তারা এখনও এই পৈত্রিক পেশাকে আঁকড়ে তাদের জীবিকা নির্বাহ করছে। শুধু মেলাতেই এসব পণ্যের বেচা কেনা বেশী হয় বলেই এদের প্রকৃত মৌসুম হচ্ছে ফাল্গুনÑজ্যৈষ্ঠ ৪ মাস এবং আশ্বিন, অগ্রহায়ণ ও পৌষ এই ৩ মাস। অন্য সময়ে এসব জিনিষের চাহিদা যেমন থাকে না। তেমনি বর্ষা মৌসুমে বান- বন্যার সময়টিতে এসব জিনিষ তৈরী করাও সম্ভব হয় না বলে জানালেন মৃত শিল্পীদের সুত্রে জানা গেছে।
মেলার মৌসুমের এসব খেলনার চাহিদা পুরণে আগে থেকেই খেলনা বানিয়ে মজুত করে রাখতে হয়। কিন্তু এবার কোথাও নববর্ষ, বৈশাখী ও চৈতালী মেলা না হওয়ায় ওই সমস্ত তারা তাদের উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করতে পারছে না। এ কারণে করোনা ভাইরাসের দূর্যোগের সময়টিতে এই গাইবান্ধার মৃৎ শিল্পী পরিবারগুলো তাদের বিশেষ আর্থিক প্রণোদনার আবেদন জানিয়েছে সংশিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে।


ভিডিও নিউজ


-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন


ট্যাগস

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top