কাজিপুরে বালি উত্তোলন; নদীতীর রক্ষা প্রকল্পের সিসি ব্লকে ধস

S M Ashraful Azom

কাজিপুরে বেপরোয়া বালি উত্তোলন; নদীতীর রক্ষা প্রকল্পের সিসি ব্লকে ধস; পানিবন্দি একশ পরিবারের দুর্ভোগ

কাজিপুরে বালি উত্তোলন; নদীতীর রক্ষা প্রকল্পের সিসি ব্লকে ধস

নদীতীর রক্ষা প্রকল্পের সিসি ব্লকে ধস

আবদুল জলিল. কাজিপুর: সারাদেশের মানুষ যখন করোনা আতংকে ঘরবন্দি সেখানে সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার বালিখোকেদের বালি তোলার ধুম ধামছেই না। একের পর এক সরকারী নীতিমালা লঙ্ঘন করে রাতদিন অবিরাম তুলছে এবং বেশকটি স্থানে স্তূপাকারে রাখছে। আর বালির স্তূপের নিংড়ানো পানিতে এখনও দুর্ভোগে রয়েছে একশ পরিবার। হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত নদীতীর রক্ষা প্রকল্পের সিসি বøকে দেখা দিয়েছে ধস। এতে করে আসন্ন বর্ষা মৌসুমে পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটতে পারে বলে এলাকাবাসি চরম শংকায় রয়েছে। এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর ইউএনও নিকট প্রতিশ্রæতি দিলেও  তারা তা মানছে না। এই কাজের সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন সাবেক ইউপি সদস্য ও কাজিপুর ইউনিয়স  আ.লীগের সাবেক সভাপতি আব্দুল আওয়াল ।

গতকাল সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার মেঘাই ঘাট এলাকায় যমুনা নদী থেকে বালি তুলে প্রায় চল্লিশ বিঘা তিন ফসলী জমি দখল করে সেখানে রাখা হচ্ছে। এতে করে ওয়াপদা বাঁধের পাশে উত্তর মুসলিমপাড়া গ্রামের প্রায় একশ পরিবারের উঠোনে ও ঘরে বালির স্তূপের নিংড়ানো পানি প্রবেশ করেছে। রান্নাঘরের চুলায় পানি প্রবেশ করায় বিকল্প স্থানে রান্না করছেন অনেকে।
পানিবন্দি একশ পরিবারের দুর্ভোগ

পানিবন্দি একশ পরিবারের দুর্ভোগ

বাড়ির উঠোনে পানিবন্দি বিমল, বিনয় ও গোবিন্দ নাথের পরিবারের লোকজন নিজেরা ঘরের পানি নিষ্কাষণের চেষ্টা করছেন। এসময় বিমল জানান, ‘ জায়গা জিরাত নেই। বাধের নিচে কোনমতে ঘর তুলে আছি। কিন্তু একমাস  যাবৎ আমাদের তিন ভাইয়ের উঠোনে পানি। গতকাল রাতে শুয়ে আছি। মাঝরাতে বাইরে যাবার জন্যে জেগে দেখি ঘরের মেঝেতে পানি। পাশের বাড়ির মঞ্জরিবালা নিজের রান্নাঘর দেখিয়ে জানান, পানি ওঠায় আজ আর রান্না করতে পারিনি। ঘরে পানিবন্দি শহিদুলের স্ত্রী সখিনা বিবি জানান, ‘কিছু বলতে গেলে ওরা কয়, তোরা ইহিনে থাকোস ক্যা?  (তোরা এখানে থাকিস কেন?) দেহোস না  (দেখিস না) আমাগোরে বালু রাইখতে অসুবিধা হচ্ছে!  তাই ভয়ে আর কিছু কই না। একই কথা জানান পানিবন্দি রবীন্দ্রনাথ, জুড়ান, সালাম, শহিদুলরা।

এদিকে বালির পানিতে ও কাকড়া ট্রাক্টরের অবাধ চলাচলে নদীতীর সংরক্ষণ প্রকল্পের সিসি বøক অনেক স্থানে ধসে গেছে। এতে করে আসন্ন বর্ষায় ভাঙন পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে পারে বলে এলাকাবাসি মনে করছেন।

এ বিষয়ে আওয়াল মেম্বর মানুষের দুর্ভোগের কথা স্বীকার করে মুঠোফোনে জানান, ‘ আমি ইজারাদার। ব্যবসা করতে গেলে এরকম কিছু হয়েই থাকে। তাছাড়া সেচ দিয়ে ওদের বাড়ির পানি বের করার ব্যবস্থা করেছি।’ ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সহায়তা দিয়েছেন কিনা জানতে চাইলে বাড়ি ঘরের কারণে তারই অনেক বালি নষ্ট হচ্ছে বলে তিনি জানান। 

কাজিপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জানান, ‘ নির্দেশের পরেও যদি আইন না মেনে বালি উঠায় তাহলে তাদের ইজারা বাতিল করা হবে।’


ভিডিও নিউজ


-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন


ট্যাগস

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top