সেবা ডেস্ক: বাংলাদেশ সরকারের কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট শক্তিশালি ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে দেশের ৪৬ জেলায় এক লাখ ৭৬ হাজার ৭ হেক্টর জমির ফসল বিভিন্ন হারে ক্ষতি হয়েছে। এসব জমির ফসলের ৫ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ক্ষতি হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ঘূর্ণিঝড় ‘আম্ফান’ পরবর্তী কৃষির ক্ষয়-ক্ষতি বিষয়ক এক অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় কৃষিমন্ত্রী বলেন, ঘূর্ণিঝড়সহ যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগে কৃষিই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কৃষকদের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে বিভিন্নভাবে সহায়তা করবে সরকার।
ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, প্রতিবছর কৃষকদের ভর্তুকি দেয়ার জন্য ৯ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখে সরকার। কিন্তু আমাদের এত টাকা লাগে না। বেঁচে যাওয়া এসব টাকা এক্ষেত্রে ব্যবহার করা হবে।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, হাওরে এরইমধ্যে শতভাগ ধান কাটা হয়েছে। উপকূলীয় অঞ্চলের ১৭টি জেলার শতকরা ৯৬ ভাগসহ সারাদেশে ৭২ শতাংশ বোরো ধান কাটা হয়েছে। এছাড়া খুলনা অঞ্চলে প্রায় ৯৬ থেকে ৯৭ ভাগ ধান কাটা হয়েছে। সাতক্ষীরায় ৯০ ভাগের বেশি ধান কাটা হয়েছে। পটুয়াখালীরও প্রায় সব ধান কাটা হয়েছে।
তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে সাতক্ষীরার ৬০ থেকে ৭০ ভাগ আম নষ্ট হয়েছে। ওই এলাকার ৪ হাজার হেক্টর জমির আমের মধ্যে এরইমধ্যে এক হাজার হেক্টর জমির আম নামানো হয়েছে। বাকি ৩ হাজার হেক্টরের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এজন্য আমরা ত্রাণ মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করেছি যে, এ আমগুলো কিনে ত্রাণের মাধ্যমে দেয়া যায় কিনা।
বিভিন্ন ধরনের ফসলের ক্ষতির উল্লেখ করে ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ৪৭ হাজার হেক্টর বোরো ধানের শতকরা ১০ ভাগ ক্ষতি হয়েছে। ৩ হাজার ২৮৪ হেক্টর জমির ভুট্টার ক্ষতি হয়েছে ৫ শতাংশ। ৩৪ হাজার ১৩৯ হেক্টর জমির পাটের ৫ ভাগ ক্ষতি হয়েছে। পানের ক্ষতি হয়েছে গড়ে ১৫ শতাংশ। তবে কোনো কোনো এলাকায় এ ক্ষতির পরিমাণ বেশি।
তিনি বলেন, ৪১ হাজার ৯৬৭ হেক্টর জমির সবজির ক্ষতি হয়েছে ২৫ শতাংশ। এক হাজার ৫৭৫ হেক্টর জমির চিনা বাদামের ২০ শতাংশ ক্ষতি হয়েছে। ১১ হাজার ৫০২ হেক্টর জমির তিলের ২০ শতাংশ ক্ষতি হয়েছে। ৭ হাজার ৩৮৪ হেক্টর জমির আমের ১০ ভাগ ক্ষতি হয়েছে।
এছাড়া ৪৭৩ হেক্টর জমির লিচুর ক্ষতি হয়েছে ৫ শতাংশ। ৬ হাজার ৬০৪ হেক্টর জমির কলার ক্ষতি হয়ে শতকরা ১০ ভাগ। এক হাজার ২৯৭ হেক্টর জমির পেঁপের ক্ষতি হয়েছে ৫০ ভাগ। ৩ হাজার ৩০৬ হেক্টর জমির মরিচের ক্ষতি হয়েছে ৩০ ভাগ। ৬৪০ হেক্টর জমির সয়াবিনের ক্ষতি হয়েছে ৫০ শতাংশ। ৭ হাজার ৯৭৩ হেক্টর জমির মুগ ডালের ক্ষতি হয়েছে ৫০ শতাংশ।
অনলাইন ব্রিফিংয়ে কৃষিমন্ত্রী আরো বলেন, কৃষকদের এ ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সরকার বিভিন্নভাবে সহায়তা করবে। কারোনাভাইরাসের কারণে সরকার খাদ্য নিরাপত্তায় গুরুত্ব দিচ্ছে। তাই টাকার কোনো সমস্যা হবে না।