জামালপুরে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবণতি

S M Ashraful Azom
0
জামালপুরে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবণতি

মো. শাহ্ জামাল, জামালপুর সংবাদদাতা : জামালপুরে জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি ক্রমেই অবনতি হচ্ছে।  প্লাবিত হচ্ছে  নতুন নতুন এলাকা। যমুনাপাড়ের ৪ উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের ৫৩টি গ্রামের নিন্মাঞ্চল বন্যা কবলিত হয়ে প্রায় অর্ধসহস্রাধিক মানুষ পানিবন্দি বলে জানিয়েছেন জেলা ত্রাণ ও পুর্ণবাসন কার্যালয়। গত ২৪ ঘন্টায় যমুনার পানি বাহাদুরাবাদ পয়েন্টে ৩৭ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপদসীমার ৬৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে গত রবিবার সন্ধা ৬টায় জানিয়েছেন জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড।
স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, পানির তীব্র স্রোতে গুঠাইল বাজারের কাছে রাস্তা ভেঙে ইসলামপুর-গুঠাইল সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এছাড়াও উলিয়া-বলিয়াদহ সড়কে ৫টি স্থানে সড়ক ভেঙে হু হু করে লোকালয়ে বন্যার পানি প্রবেশ করছে। নতুন নতুন এলাকা বন্যা কবলিত হয়ে পড়ায় নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে ছুটছে মানুষ। ইসলামপুরের চিনাডুলি ইউনিয়নের দেওয়ানপাড়ার  আবুল কালাম (৪৮) বলেন, কাল উঠানে পানি ছিল, আজ ঘরে হাঁটু পানি।পানির তীব্রস্রোতে ঘরে টিকতে না পেরে মেলান্দহের দুরমুঠে আত্বীয়ের বাড়িতে যাচ্ছি আশ্রয় নিতে।  আব্দুস সামাদ (৫০) বলেন, এবার পানির গতিবেগ খুব বেশী। সন্ধায় বাড়ির সামনে পানি দেখেছি। শেষ রাতে পানি ঘরে ডুকে পড়ে। সকালে পানির স্রোতে ঘরে টিকতে না পেরে চলে আসি।
এদিকে দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে পানি ঢুকে পড়েছে। এছাড়াও পৌর এলাকা, চিকাজানি, চুকাইবাড়ি, ডাংধরা ও বাহাদুরাবাদ, সরিষাবাড়ীর পিংনা, পোগলদীঘা, আওনা, কামারাবাদ ও সাতপোয়া ও বকশীগঞ্জে মেরুরচর ও সাধুর পাড়া ইউনিয়নের নিন্মাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকা বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে।
চিনাডুলি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম বলেন, চিনাডুলি ইউনিয়নে নিন্মাঞ্চলের বেশীর ভাগ এলাকা বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকার ৪ হাজার পরিবারের প্রায় ৮ হাজার মানুষ পানি বন্দি। বন্যা কবলিত এলাকাগুলোতে বিশুদ্ধ পানি ও গো-খাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। জেলা ত্রাণ ও পুর্ণবাসন কর্মকর্তা মোঃ নায়েব আলী জানিয়েছেন, ইসলামপুর ও দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার বন্যা দুর্গত এলাকার জন্য ২০ মেট্রিক টন জিআর চাল বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে। ত্রাণ ও পুর্ণবাসন অধিদপ্তরে ৩৫০ মেট্রিক টন চাল, নগদ ৭লাখ টাকা ও ২ হাজার শুকনো খাবারের প্যাকেট চেয়ে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়াও জেলার ৪৬১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত রাখা হয়েছে আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের জন্য। বন্যা কবলিত এলাকার মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে আনা নেওয়ার জন্য ইঞ্জিন চালিত ১২টি নৌকা রাখা হয়েছে। জেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আমিনুল ইসলাম জানান, জেলায় বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে ১৫৭৫ হেক্টর জমির পাট, ১৩০ হেক্টর আউশ ধান, ১৭৭ হেক্টর সবজি, ১৭ হেক্টর বীজতলা ও ২ হেক্টর জমির বাদাম।
জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আবু সাইদ জানিয়েছেন, আরো দু একদিন একই গতিতে পানি বাড়তে পারে। বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষনে করছেন। বন্যা মোকাবেলায় পানিউন্নয়ন বোর্ডের কর্মীরা প্রস্তুত আছেন।


ভিডিও নিউজ


-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন


ট্যাগস

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top