বকশীগঞ্জে প্রাথমিক শিক্ষার প্রকল্পের কাজে ভূয়া ভাউচার দাখিল

S M Ashraful Azom
0
বকশীগঞ্জে প্রাথমিক শিক্ষার প্রকল্পের কাজে ভূয়া ভাউচার দাখিল

বকশীগঞ্জ প্রতিনিধি : জামালপুরের বকশীগঞ্জে চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচির (পিইডিপি-৪) আওতায় স্লিপ প্রকল্প, ক্ষুদ্র মেরামত কাজ বাস্তবায়নে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।

বকশীগঞ্জ উপজেলায় চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচির (পিইডিপি-৪) আওতায় কয়েকটি প্রকল্পের কাজ না করেই শতভাগ প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে বলে ভুয়া ভাউচার দাখিল করা হয়েছে। কাজ করা না হলেও সমুদয় টাকা উত্তোলন করে শিক্ষা অফিসারের একাউন্টে রাখা হয়েছে।

উপজেলা শিক্ষা অফিসারের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৯-২০ অর্থ বছরে বিদ্যালয় মেরামত,সংস্কার বাবদ পিইডিপি-৪ প্রকল্পের আওতায় উপজেলার ৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দুই লাখ টাকা করে ৬ লাখ টাকা ও ৮টি বিদ্যালয়ে দেড় লাখ টাকা করে ১২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়।
এছাড়াও ১১০ টি বিদ্যালয়ে রুটিন মেরামত কাজের জন্য প্রতিটিতে ৪০ হাজার টাকা করে শহীদ মিনার নির্মাণ ও বিদ্যালয় গুলোতে ওয়াশ ব্লক নির্মাণ কাজের জন্য প্রত্যেকটিতে ২০ হাজার টাকা এবং নিয়মিত মেরামত বাবদ স্লিপ প্রকল্পের জন্য ১১০টি বিদ্যালয়ের কোনটিতে ৫০ হাজার টাকা ও কোনটিতে ৭০ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হয়।

অনুসন্ধানে জানা যায়, অর্থ বছরের শুরুতেই এই অর্থ বরাদ্দ করা হলেও বিদ্যালয় নির্বাচন করতে সংশ্লিষ্টরা দীর্ঘ ১০ মাস সময় ব্যয় করেন। অর্থ বছর শেষ হওয়ার মাত্র দেড় মাস আগে বিদ্যালয়গুলোর তালিকা প্রকাশ করা হয়। বিদ্যালয়গুলোকে জানানো হয় নিজের টাকায় প্রকল্পের কাজ শেষ করে ভাউচার দাখিল করতে হবে।

গত ৩০ জুন এসব প্রকল্পের কাজ শেষ করার বিধান ছিল। কিন্তু এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কয়েকটি বিদ্যালয় ব্যতিত বেশিরভাগ বিদ্যালয়ে প্রকল্পের কাজ এখনো সমাপ্ত হয়নি। তালিকাভুক্ত বিদ্যালয়গুলো থেকে কাজ একশভাগ সমাপ্ত হয়েছে বলে ভাউচার সংগ্রহ করা হয়েছে। এই ভুয়া ভাউচার দাখিল করে প্রকল্পের সমুদয় টাকা উত্তোলন করা হয়। ভূয়া বিল ভাউচার দাখিল করে সরকারি টাকা আত্মসাত করার পাঁয়তারা করা হচ্ছে।

ক্ষুদ্র মেরামত ও স্লিপ প্রকল্পের কাজ শেষ না করেই প্রকল্পের বরাদ্দকৃত অথ উত্তোলন করা হয়েছে এবং সেই টাকা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার একাউন্টে রাখা হয়েছে। ৩০ জুনের আগেই সব কাজ করার নিয়ম থাকলেও তা করা হয় নি। উপজেলা হিসাব রক্ষণ কার্যালয়ে ভূয়া ভাউচার দাখিল করে উত্তোলন করা হয়েছে সেই টাকা।

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রশিদা বেগম শিক্ষকদের বাঁচাতে কাজ শেষ না করেই নিজের বরাদ্দ ছাড়ের টাকা একাউন্টে রেখে দেন। এ নিয়ে পুরো উপজেলায় তোলপাড় শুরু হয়েছে।

এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার রশিদা বেগম জানান, ৩০ জুনের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করতে না পারলে প্রকল্পের বরাদ্দ করা টাকা ল্যাপস হয়ে যাবে এবং তা ফেরত পাঠাতে হবে। তাই তিনি অগ্রিম ভাউচার সংগ্রহ করে প্রকল্পের সমুদয় টাকা উত্তোলন করে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের একাউন্টে জমা রেখেছেন। প্রকল্পগুলোর কাজ শেষ হলে সেখান থেকে বিল পরিশোধ করা হবে। কিন্তু এই পরিশোধ দেখানো হবে ব্যাকডেটে ৩০ জুনের মধ্যে।

সরকারি নিয়ম নীতিকে বৃদ্ধাঙ্গলি প্রদর্শন করে শিক্ষা অফিসার কিভাবে ভুয়া ভাউচার দাখিল করে শতভাগ কাজ সমাপ্তির বিল উত্তোলন করলেন, অর্থ বছর শেষ হবার তিন সপ্তাহ পরেও বরাদ্দ করা টাকা স্কুলগুলোর মধ্যে বিতরণ না করে কিভাবে তিনি একাউন্টে জমা রাখলেন তার কোন সদুত্তর তিনি দিতে পারেননি।

স্থানীয় সুধীমহল বিষয়টি জরুরি ভিত্তিতে সুষ্ঠু তদন্ত করে অবৈধভাবে দাখিল করা ভুয়া ভাউচারগুলো শনাক্ত করে প্রকল্পের অব্যয়িত টাকা ফেরত পাঠানোর দাবি জানিয়েছেন।


ভিডিও নিউজ


-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন


ট্যাগস

Post a Comment

0Comments

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।

Post a Comment (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top