
রেজাউল করিম বকুল, শেরপুর প্রতিনিধি: শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলা সাবরেজিষ্টার নিয়ে দলিল লেখক, অফিস ষ্টাফ ও স্থানীয়দের মধ্যে ক’দিন যাবত চলছে টানাটানি। অফিস ষ্টাফ ও দলিল লেখকরা ছিল ভারপ্রাপ্ত সাবরেজিষ্টারের পক্ষে। তবে কয়েকজন দলিল লেখক ও স্থানীয় কয়েকজন ছিলেন আগের সাবরেজিষ্টারের পক্ষে। এ কারণে প্রায় এক সপ্তাহ যাবত বন্ধ ছিল দলিল নিবন্ধন। অবশেষে আজ ২ জুলাই বৃহস্পতিবার জেলা সাবরেজিষ্টার মো. হেলাল উদ্দিনের নির্দেশে ভারপ্রাপ্ত সাবরেজিষ্টার দিয়ে চলছে দলিল নিবন্ধন।
জানা যায়, দীর্ঘদিন যাবত আবদুর রহমান ভূঁইয়া ঘুষের বিনিময়ে দলিল নিবন্ধন করছেন। ঘুষ না দিলে সেবা গ্রহণকারীদের নানাভাবে হয়রানী করতেন। এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ৪ ডিসেম্বর উপপরিচালক মো. মোস্তাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে দুদক কর্মকর্তারা তার অফিসের অভিযান চালান। এ সময় তার প্যান্টের পকেট থেকে দুদক কর্মকর্তারা ৯৫ হাজার ৫শ টাকা জব্দ করেন। পরে তার বিরুদ্ধে থানায় দন্ডবিধি ১৬১ ও ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধের ৫ (২) ধারা একটি মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় তাকে যেতে হয় জেল হাজতে। সাবরেজিষ্টার মো. আবদুর রহমান ভূঁইয়ার বাড়ি মুন্সিগঞ্জ জেলায়।
তিনি গ্রেফতারের পর থেকে ভারপ্রাপ্ত সাবরেজিষ্টারের দায়িত্ব পালন করেন মো. আলতাফ হোসেন। সম্প্রতি আগের সাবরেজিষ্টার মো. আবদুর রহমান ভূঁইয়া জামিনে এসে কর্মস্থলে যোগদান করেন। তিনি অফিসের তার অবশিষ্ট কিছু কার্যক্রম সম্পাদন করেন। এ সময় কয়েকজন দলিল লেখক তাকে দিয়ে দলিল নিবন্ধনের চেষ্টা করেন। কিন্তু বাঁধা দেন দলিল লেখক সমিতির নেতৃবৃ›দ্ব ও অফিস ষ্টাফরা। এমনকি গত বুধবার তার অফিস কক্ষে তালা ঝুলে দেন তারা। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে বিরাজ করে চাপা উত্তেজনা। এতে ভোগান্তিতে পড়েন দলিল নিবন্ধনে ক্রেতা বিক্রেতারা। দলিল নিবন্ধনে আসা কয়েজন জানান, তারা প্রায় এক সপ্তাহ যাবত ঘুরছেন। কিন্তু দলিল নিবন্ধন করতে পারছেন না। এ ব্যাপারে দলিল লেখক সমিতির সভাপতি সবুজ মিয়া বলেন, সাবরেজিষ্টার ঘুষের টাকাসহ হাতে নাতে ধরা পড়ে জেলা হাজতে ছিলেন। এখন দলিল নিবন্ধনে আবারো হয়তো ঘুষ লেনদেন করবেন। এতে ক্রেতা বিক্রেতারা হয়রানী ও ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। তিনি আরো বলেন, আমরা একজন ভাল সাবরেজিষ্টার চাই।
এ ব্যাপারে সাবরেজিষ্টার আবদুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, আমার বিরুদ্ধে মামলাটি আদালতে বিচারধীন। রায় না হওয়া পর্যন্ত আমি নির্দোষ। এছাড়া কর্তপক্ষ আমাকে কর্মস্থলে যোগদানে নিষেধ করে নাই। এ জন্য কর্মস্থলে যোগদান করেছি। জেলা সদর সাবরেজিষ্ট্রি অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাবরেজিষ্টার মো. আলতাফ হোসেন জানান, জেলা সাবরেজিষ্টার (ডিআরও) মো. হেলাল উদ্দিনের নির্দেশে তিনি ভারপ্রাপ্ত সাবরেজিষ্টার হিসেবে শ্রীবরদী সাবরেজিষ্ট্রি অফিসে দায়িত্বে থেকে দলিল নিবন্ধন করছেন। এ ব্যাপারে জেলা সাবরেজিষ্টার (ডিআরও) মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ভারপ্রাপ্ত সাবরেজিষ্টার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মো. আলতাফ হোসেন। এজন্য তিনি দলিল নিবন্ধন করতে পারবেন। অবশেষে সাবরেজিষ্টার নিয়ে টানাটানির অবসান ঘটলো। তবে সাবরেজিষ্ট্রি অফিস হবে ঘুষ দুর্নীতি মুক্ত। এমনটাই প্রত্যাশা করছেন স্থানীয় সচেতন মানুষরা।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।