গাইবান্ধায় বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি

S M Ashraful Azom
0
গাইবান্ধায় বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি

গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি: গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টির পানি ও  উজান থেকে নেমে আসা পানির ঢলে গাইবান্ধার বড় ও ছোট নদ-নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করতে শুরু করেছে। ইতোমধ্যে ব্রহ্মপুত্র এবং তিস্তার  পানি বিপদসীমা অতিক্রম করে প্রবাহিত হচ্ছে। আজ ১২ জুলাই রবিবার সকালে ফুলছড়ি পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি  বিপদসীমার ২৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে বইছে এবং বিপদসীমা অতিক্রম করেছে তিস্তা নদীর পানি। সেইসঙ্গে যমুনা, কাটাখালি ও করোতোয়া নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে।

পানিবৃদ্ধির কারণে দ্বিতীয় দফায় বন্যা দেখা দেয়ায় চরম বিপাকে পড়েছে জেলার সুন্দরগঞ্জ, গাইবান্ধা সদর, ফুলছড়ি এবং  সাঘাটা চার উপজেলার ২৬৫টি চর এবং এবং নদীতীরবর্তী নি¤œাঞ্চলের মানুষ। প্রথম দফায় বন্যার পর বাড়ি ঘরে ফিরে যাওয়া বানভাসী মানুষ তারা আবার নতুন করে নিরাপদ আশ্রয়ে  সরে যেতে শুরু করেছে। পরিবার পরিজন এবং গবাদীপশু নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন তাঁরা। গাইবান্ধার চরাঞ্চলে বসবাসকারী প্রায় ৫০ হাজার মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছেন। অপর দিকে জেলার নদী গুলোতে ব্যাপক ভাঙ্গন শুরু হওয়ার ভিটামাটি ছাড়া হয়েছে শতাধিক পরিবার এছাড়াও স্কুলসহ বিভিন্ন বেসরকারি অবকাঠামো নদীগর্ভে বিলিন হয়েছে। দেখা  দিয়েছে খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট।

দ্বিতীয় দফায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় ৩০ গ্রামের প্লাবিত হয়ে ক্রমেই অবনতির দিকে যাচ্ছে বন্যা পরিস্থিতি। ডুবে যাওয়া বাড়িঘর ছেড়ে গবাদি পশু নিয়ে অনেকেই আশ্রয় নিয়েছেন বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে। পানির চাপে হুমকিতে পড়েছে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ । জানা গেছে, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপৎসীমা অতিক্রমের ফলে নতুন নতুন গ্রাম বন্যার পানিতে নতুন করে প্লাবিত হয়ে বন্যা দেখা দিয়েছে। ব্রহ্মপুত্র নদবেষ্টিত নিম্নাঞ্চল ফুলছড়ি উপজেলার গজারিয়া, খাটিয়ামারী, ইউনিয়নের বেশিরভাগ এলাকা ও যমুনা নদীবেষ্টিত সাঘাটা উপজেলার হলদিয়া, পালপাড়া, চিনিরপটল, চকপাড়া, পবনতাইড়, থৈকরপাড়া, বাশহাটা, মুন্সিরহাট, গোবিন্দি, নলছিয়াসহ বিভিন্ন গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এছাড়াও সুন্দরগঞ্জ উপজেলার চন্ডিপুর, কাপাসিয়া, তারাপুর, বেলকা, হরিপুর ও শ্রীপুর গ্রাম পানি ঢুকতে শুরু করেছে। এতে করে জেলার ৩০টি গ্রাম প্লাবিত হওয়া খবর পাওয়া গেছে আরো কিছু গ্রাম নতুন করে বন্যার পানিতে প্লাবিত হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে ৷

গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোখলেছুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, নতুন করে পানি বৃদ্ধির ফলে ব্রহ্মপুত্র বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের বিভিন্ন পয়েন্ট ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ার সম্ভাবনা আছে। তবে বাঁধ যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেজন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ হতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, জেলায় গত সপ্তাহে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপৎসীমার ৮২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে ও ঘাঘট নদীর পানি গাইবান্ধা শহরের নতুন ব্রিজ পয়েন্টে বিপদসীমার ৫৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছিলো। ফলে গাইবান্ধা সদর, সাঘাটা, সুন্দরগঞ্জ ও ফুলছড়ি উপজেলার ২৬টি ইউনিয়নের ৫০টি গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে জনদূভোগে পড়েন। গত ৬ জুলাই বন্যার পানি বিপৎসীমার নিচে নেমে যাওয়া ব্যাপক ভাঙ্গনের মধ্যে তিনদিনের মাথায় আবার বন্যা দেখা দিয়েছে।


ভিডিও নিউজ


-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন


ট্যাগস

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top