
সেবা ডেস্ক: বৈশ্বিক মহামারি নভেল করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) প্রকোপ এখনো কমেনি মোটেও। জনজীবন এখনো প্রায় স্থবির। এরই মধ্যে আসছে ঈদুল আজহা। রুদ্ধ পরিস্থিতিতেও তাই ঈদুল আজহার অন্যতম অনুষঙ্গ কোরবানির পশু নিয়ে শুরু হয়েছে প্রস্তুতি। খামারি থেকে শুরু করে কর্তৃপক্ষ— প্রস্তুতিতে পিছিয়ে থাকতে রাজি নয় কেউই। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এরই মধ্যে জানিয়েছে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে বসবে হাট। তবে পশুর হাটে গিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মানার হ্যাপা ক’জন নেবেন— তা নিয়েও রয়েছে প্রশ্ন। আর সে কারণেই সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, এবারে ‘অফলাইনে’ নয়, অনলাইনেই জমে উঠবে পশুর হাট।
বাংলাদেশ সরকারের ডাক এবং টেলিযোগাযোগ মন্ত্রনালয়ের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, খামারিরা যেন তাদের পশু অনলাইনে বিক্রি করতে পারেন সে জন্য সরকারিভাবে নেওয়া হয়েছে নানা ব্যবস্থা। আইসিটি বিভাগ সারাদেশে চালু করছে অনলাইন পশুর হাট। কৃষকদের এ বিষয়ে সচেতন করতেও নেয়া হচ্ছে নানা ব্যবস্থা।
আমাদের ৫৬৬৫টি ডিজিটাল সেন্টারের ১১ হাজার উদ্যোক্তা রয়েছে নারী এবং পুরুষ মিলিয়ে।
তারা প্রান্তিক এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে উদ্যোক্তা হিসেবে কাজ করে। তাদেরকে বিস্তারিত জানিয়ে দেয়া হবে। তারা তাদের এলাকায় এটা সম্প্রসারণ করবে।
এদিকে, ঘরবন্দি রোজার ঈদ কাটানোর পর কোরবানির ঈদেও যে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব কমবে, তেমন আভাস মিলছে না বলে অনলাইনে পশু কেনায় মানুষের আগ্রহ বাড়বে ধরে নিয়ে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে অনলাইন মার্কেট প্লেসগুলো।
তারা বলছেন, ছোঁয়াচে এই ভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে অনলাইনে পশু বিক্রিতেও এবার বাড়তি সতর্কতা নিতে হচ্ছে।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১ অগাস্ট মুসলিমদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা উদযাপিত হতে পারে বাংলাদেশে।
সারা বছর দেশে যে সংখ্যক পশু জবাই হয়, তার বড় অংশ এই কোরবানির ঈদের সময় হয়।
ইতোমধ্যে রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশনে ২৪টি কোরবানির পশুর হাট বসানোর তালিকা চূড়ান্ত হয়েছে। স্বাস্থ্য বিধি মেনে সারাদেশে পশুর হাট বসানোর কথা বলেছেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী।
তবে করোনাভাইরাস অত্যন্ত ছোঁয়াচে বলে জনসমাগমে তা ছড়ানোর ঝুঁকিও বেশি; ফলে হাটের মতো স্থানে যাওয়ার ঝুঁকিতে অনেকে যেতে চাইবেন না।
যেহেতু এই সময়ে মানুষের অনলাইনে নিত্যপণ্য কেনা অনেক বেড়েছে, তাতে ধারণা করা যায়, কোরবানির পশুও অনেকে এবার সেভাবেই কিনতে চাইবেন।
এছাড়াও গরু-ছাগলসহ কোরবানির পশু বিক্রির জন্য প্রস্তুত রয়েছে অসংখ্য কৃষক, খামারি, ব্যবসায়ী। অপেক্ষা এখন ক্রেতাদের। বিভিন্ন খামারির ব্যক্তিগত উদ্যোগে চলছে ই-হাট, কোরবানির গরুর মেলা। আবার ই-কমার্স সাইটগুলো তথ্য ও যোগাযোগ-প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সহযোগিতায় প্রস্তুতি নিচ্ছেন ডিজিটাল হাট করার। যদিও বিগত কয়েকবছর ধরেই অন্যান্য পণ্যের পাশপাশি কোরবানির পশু কেনা-বেচা হচ্ছে। বিক্রির সংখ্যা ও পরিমাণ প্রতিবছরই বাড়ছে আগের বছরের তুলনায়। তবে এবার এই চিত্র ব্যাপক পরিবর্তণ আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। বিশেষ করে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি আশা যোগাচ্ছে কৃষক, খামারি, অনলাইন প্লাটফর্মগুলোকে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অনেকেই নিজের খামারের নামে ফেসবুকে পেজ খুলে সেখানে পশুর ছবি, ভিডিও, বিবরণ, দামসহ প্রয়োজনীয় সব তথ্যই তুলে ধরেছেন। সাথে থাকছে ফ্রি হোম ডেলিভারি। শুধু তাই নয়, কোন কোন খামারি ও অনলাইন প্লাটফর্ম পশু কোরবানি ও মাংস প্রক্রিয়াত করে ক্রেতার বাসায় পৌঁছে দেয়ারও অফার দিচ্ছেন। বিক্রয় ডট কম গরু-ছাগলের অনলাইন হাট বসিয়েছে, এখানে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের যেমন- ঢাকা, খুলনা, রাজশাহী, বগুড়া, কুমিল্লা এভাবে ওই এলাকার খামারের গরু-ছাগলের ছবি, তার বিবরণ, মূল্য সবই তুলে দেয়া হয়েছে। ক্রেতারা চাইলে এসব পশুর মধ্য থেকে পছন্দ করে অর্ডার করলেই তাদের বাড়িতে পৌঁছে দেয়া হবে সেই পশু। এছাড়া খামারি বা কৃষকদের আহ্বান জানানো হচ্ছে হাটে না হেঁটে গরু বেচুন নেটে।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।