কর্মসৃজনে এক হাজার কোটি টাকা পেল ৪ আর্থিক প্রতিষ্ঠান

S M Ashraful Azom
0
কর্মসৃজনে এক হাজার কোটি টাকা পেল ৪ আর্থিক প্রতিষ্ঠান

সেবা ডেস্ক: কর্মসৃজনের জন্য সরকারি তিন ব্যাংক ও এক ক্ষুদ্র ঋণদানকারী সংস্থাকে এক হাজার কোটি টাকার সহায়তা দেয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক, পল্লী কর্মসংস্থান ব্যাংক, পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক ও পিকেএসএফ। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে ২৫০ কোটি টাকা প্রদান করা হয়েছে। গতকাল অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ থেকে এই অর্থ ছাড় করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থ বিভাগের এক কর্মকর্তা গতকাল বলেন, করোনার কারণে বিদেশ থেকে ফিরে আসা শ্রমজীবী মানুষকে সহায়তা করার জন্য রাষ্ট্রীয় উচ্চপর্যায় থেকে দুই হাজার কোটি টাকার একটি ফান্ড গঠনের কথা বলা হয়েছিল। এরই অংশ হিসেবে বাজেট থেকে ব্যাংকগুলোকে সহায়তা দেয়া হচ্ছে। প্রথমপর্যায়ে তিনটি ব্যাংক ও একটি ক্ষুদ্র ঋণদানকারী প্রতিষ্ঠানকে এক হাজার কোটি টাকা দেয়া হচ্ছে। এই প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রত্যেককে আড়াই শ’ কোটি টাকা করে দেয়া হচ্ছে। তারা এই টাকা কর্মসৃজনমূলক কাজে ব্যয় করবে। এই অর্থ ফেরত দেয়ার কোনো প্রয়োজন পড়বে না। অন্যান্য ব্যাংকগুলোকে এই সহায়তা দেয়া হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, মূলধন ঘাটতির জন্য কোনো ব্যাংককে আর কোনো অর্থ প্রদান করা হবে না।

উল্লেখ্য, খেলাপিসহ বিভিন্ন ধরনের ঋণ কেলেঙ্কারির কারণে রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর আর্থিক অবস্থা নাজুক। এ অবস্থায় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোকে চলতি অর্থবছর ছাড়া বিগত পাঁচটি অর্থবছরে পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা দিয়ে এসেছে সরকার। যদিও রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংককে এ ধরনের পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা প্রদানের সমালোচনা করেছে বিভিন্ন মহল। সর্বশেষ ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংককে ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল। এর আগে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ২ হাজার কোটি টাকা, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ৫ হাজার কোটি টাকা ও ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ৪ হাজার ১০০ কোটি টাকা পুনঃঅর্থায়ন করা হয়েছিল। চলতি অর্থবছরে এই খাতে কোনো বরাদ্দ রাখা হয়নি। এর আগে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো করোনার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে বন্ড দেয়ার জন্য সরকারের কাছে আবেদন করেছিল। ব্যাংকগুলোর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকারের পক্ষ থেকে ১৮টি প্রণোদনা প্যাকেজ ছাড়া হয়েছে। এই প্রণোদনা প্যাকেজের আর্থিক সংশ্লেষ এক লাখ কোটি টাকারও বেশি। এই প্যাকেজগুলোর বেশির ভাগ অর্থায়নের দায়িত্ব পড়েছে সরকারি ব্যাংকগুলোর ওপর। এর ফলে সরকারি ব্যাংকগুলোর বিপুল পরিমাণ আর্থিক লোকসানে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এই লোকসান কাটিয়ে ওঠার জন্য তাদেরকে বন্ড ছাড়ার অনুমতি দেয়া হোক। যদি তা না দেয়া হয়, তাহলে বাজেটের আওতায় তাদের যেন পুনঃঅর্থায়ন করা হয়।

গত মাসে করোনার অভিঘাত মোকাবেলায় সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সাথে এক ভার্চুয়াল বৈঠকে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো এ অনুরোধ জানায়। বৈঠকে উপস্থাপিত তথ্য অনুযায়ী, রাষ্ট্রায়ত্ত ১১টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সম্ভাব্য আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৭ হাজার ৮০০ কোটি টাকা।

জানা গেছে, আর্থিক ক্ষতির কারণ হিসেবে পরিচালন ব্যয় বৃদ্ধি, সুদ আয় কমে যাওয়া ও অন্যান্য সার্ভিস চার্জ হ্রাস এবং করোনাকালীন দুই মাসের (এপ্রিল-মে) সুদ স্থগিত রাখা ইত্যাদির কথা জানিয়েছে ব্যাংকগুলো। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মধ্যে প্যাকেজ বাস্তবায়নে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে জনতা ব্যাংক। এই ব্যাংক জানিয়েছে, তাদের ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াবে আড়াই হাজার কোটি টাকা। সোনালী ব্যাংকের ক্ষতি হবে এক হাজার ৬০০ কোটি টাকা।

-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন
ট্যাগস

Post a Comment

0Comments

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।

Post a Comment (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top