
শফিকুল ইসলাম: কুড়িগ্রাম জেলাধীন রৌমারী ও রাজিবপুর উপজেলায় গো-খাদ্যের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। সাম্প্রতিক বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হওয়ায় রোপা আমনের বীজ তলা নষ্ট হয়ে যায়। রোপা আমন চাষ করতে পারছেনা দু’টি উপজেলার কৃষকরা। জুলাই মাসের ভয়াবহ বন্যায় প্রায় গ্রাম্ঞ্চল ঘর বাড়িতে বন্যার পানি উঠায় এবং গোচারণ ভুমিতে দীর্ঘদিন জলাবন্ধতাসৃষ্টি ও সংরক্ষিত ধানের খড় নষ্ট হওয়ায় এ সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে খড় ব্যবসায়ীরা চড়া দামে বিক্রি করছে দেশের বিভিন্ন জাগায় থেকে নিয়ে আসা খড়।
বৃহস্পতিবার সরেজমিনে উপজেলা বন্দবেড় ইউনিয়নের বলদমারা নৌকা ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, ছোট ছোট খড়ের ১শত আটি ১হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। খড় সংকটের পূর্বে ১শত আটি খড়ের মূল্য ছিল ১শত টাকা।
গত জুন মাসের শেষের দিকে টানা ভারী বর্ষনে ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে ব্রম্মপুত্র নদ, সোনাভরী, হলহলিায়া নদীর পানি উপচে জুলাই মাসে সৃষ্ট বন্যায় উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে ৯০শতাংশ এলাকায় বন্যার পানিতে নিমিজ্জিত হয়। ফলে গোচারণ স্থানসহ বিস্তীর্ন মাঠ দীর্ঘদিন জলমগ্ন থাকে। এখনো অনেক এলাকার নি¤œাঞ্চ্লে পানি জমে আছে। ফলে গোচারণ ভুমিতে উৎপাদিত ঘাস ও ধানের খড় নষ্ট হয়ে যায়। ওই সব এলাকার গবাদী পশুকে মাঠে চড়াতে না পেরে কৃষক ও খামারীদের নিকট সংরক্ষিত থাকা খড় খাওয়ানো শেষ হয়ে যায়। আকাশ ছোয়া খড়ের দামে বিপাকে পড়েছে কৃষক ও খামারীরা।
উপজেলার বাইটকামারী গ্রামের কৃষক লোকমান হোসেন জানান, আমার ৫টি গরু রয়েছে। গবাদিপশুর ১ বছর খাদ্য খড় সংরক্ষণ করে রেখে ছিলাম। কিন্তুু বন্যার পানিতে খড়ের পালার বেশীর ভাগ খড় নষ্ট হয়ে পঁচে গলে গেছে। দীর্ঘদিন গোচারণ ভুমিও পানিতে নিমিজ্জিত থাকায় গরু মাঠে চড়াতে না পেরে সংরক্ষিত খড় শেষ হয়েছে। এখনো পতিত জমি ও মাঠে পানি ঘাস না থাকায় গবাদী পশু নিয়ে বিপাকে পরে রয়েছি।
উপজেলার পাখিউড়া গ্রামের হাবিবুর রহমান জানান, নি¤œাঞ্চল দীর্ঘদিন থেকে পানি জমে থাকায় ঘাস নাই। বন্যায় খড় নষ্ট হওয়ায় খড়ের চাহিদা ব্যাপক হারে বেড়েছে। গরু বাচিয়ে রাখতে বাহির থেকে আসা ধানের খড় ৫শত টাকার খড় ২হাজার থেকে ৩ হাজার টাকায় কিনতে হচ্ছে।
উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. এটিএম হাবিবুর রহমান বলেন, উপজেলায় সাম্প্রতিক ভয়াবহ বন্যায় কৃষক ও খামারীদের সংরক্ষিত খড় ও চাষকৃত ঘাস ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। এখনো কিছু কিছু নি¤œাঞ্চলে পানি রয়েছে। যে কারনে গো খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। আমরা গো খাদ্য সংকট মোকাবেলায় কৃষক, খামারিদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। কিছু কিছু উচ্চু এলাকায় আগাম ধান চাষ করেছে ধান কাটা পর্যন্ত খড়ের সংকট থাকবে। আমরা পরামর্শ দিচ্ছি পতিত জমিতে ঘাস চাষ করার জন্য। অন্যান্য বছর কিছু প্রকল্পে মাধ্যমে আমাদের পশু খাদ্য বরাদ্দ থাকে কৃষক ও খাামারীদের মাঝে বিতরণ করি। এবার এখনো আমাদের কোন বরাদ্দ নাই।
-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।