রফিকুল আলম,ধুনট (বগুড়া): বগুড়ার ধুনট উপজেলায় দাম্পত্য কলহের জের ধরে রুবিনা খাতুন (৩০) নামে এক গৃহবধূর শরীরে আগুন ধরিয়ে দিয়ে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে তার পাষান্ড স্বামী আব্দুল মোমিনের বিরুদ্ধে।
বুধবার দুপুর ১টার দিকে মুমূর্ষ অবস্থায় গৃহবধূকে ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে তার স্বজনরা। এ ঘটনায় গৃহবধূর বাবা হোসেন আলী বাদি হয়ে আব্দুল মোমিনের বিরুদ্ধে ধুনট থানায় একটি লিখিত অফিযোগ দিয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার চৌকিবাড়ি ইউনিয়নের দিঘলকান্দি গ্রামের আব্দুস সামাদ তালুকদারের ছেলে আব্দুল মোমিনের সাথে একই গ্রামের হোসেন আলীর মেয়ে রুবিনা খাতুনের প্রায় ১৫ বছর আগে বিয়ে হয়।
বিয়ের পর তাদের দাম্পত্য জীবনে ৩ সন্তানের জন্ম হয়েছে। আব্দুল মোমিন পেশায় একজন কৃষক। তাদের অভাব অনটনের সংসার।
সংসারে অভাবের কারণে তাদের দাম্পত্য জীবনে প্রায়ই ঝগড়া বিবাদ লেগে থাকতো। এছাড়া মাঝে মধ্যেই রুবিনাকে নানা ভবে স্বামীর নির্যাতন সইয়ে সংসার করতে হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় ১৭ মার্চ সন্ধ্যার দিকে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়ার সৃষ্টি হয়।
এক পর্যায়ে রুবিনার শরীরে গরম তেল ছুড়ে মারে এবং পাটখড়ি দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয় আব্দুল মোমিন। এসময় রুবিনার হাত ও শরীরের ২০ শতাংশ অংশ পুড়ে গেছে। ঘটনার পর থেকে দগদগে শরীর নিয়ে রুবিনাকে বিনাচিকিৎসায় স্বামীর ঘরে বন্দী থাকতে হয়।
এ অবস্থায় মঙ্গলবার রাতে রুবিনা তার স্বামীকে ঔষধ কিনে দিতে বলেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে আব্দুল মোমিন দ্বিতীয় দফা মারপিট করে বাড়ির পাশে রাস্তায় রুবিনাকে ফেলে রেখে যায়। সেখান থেকে রুবিনাকে তার মা ও বাবা সহ পরিবারের লোকজন উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। স্ত্রী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হওয়ার খবর পেয়ে আব্দুল মোমিন বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেছে।
রুবিনার বড় ভাই আব্দুল মান্নান বলেন, বিয়ের পর থেকেই কারণে-অকারণে আব্দুল মোমিন আমার বোনকে নানা ভাবে নির্যাতন করেছে।
এ ঘটনা নিয়ে উভয় পরিবারের মাঝে অনেক বার বৈঠক বসে সমঝোতা করা হয়েছে। এবার আবার আমার বোনকে নির্যাতনের এক পর্যায়ে পুড়িয়ে হত্যাচষ্টা করেছে মোমিন। আমার বোনকে রাতের বেলায় রাস্তা থেকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করেছি।
ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক হাফিজুর রহমান বলেন, আগুনে পুড়ে ঝলসে গেছে রুবিনা খাতুনের শরীর। তাকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রেখে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে।
ধুনট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কৃপা সিন্ধু বালা বলেন, সংবাদ পেয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি থাকা গৃহবধূর চিকিৎসার খোঁজখবর নেওয়া হয়েছে। আব্দুল মোমিনকে আটকের চেষ্টা চলছে।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।