শফিকুল ইসলাম: কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলায় ৬টি ইউনিয়নে প্রায় শতাধিক পয়েন্টে ড্রেজারের মাধ্যমে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
গত রবিবার (২ মে) কুড়িগ্রাম চিফ জুডিসিয়াল মেজিস্ট্রেট আদালতের রৌমারী আমলী আদলত জুডিসিয়াল মেজিস্ট্রেট মো. সুমন আলী স্বপ্রণোদিত হয়ে এ আদেশ দেন। আদেশে রৌমারী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি)কে বিস্তারিত তদন্তপ‚র্বক আগামী ৩০ মে তারিখের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গত ২৩ এপ্রিল কয়েকটি গণমাধ্যমে রৌমারীর ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ব্রহ্মপুত্র নদসহ বিভিন্ন নদী থেকে অবৈধ ভাবে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনগুলো আদালতের নজরে আসলে আদালত স্বপ্রণোদিত হয়ে অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ দেন।
আদেশে বলা হয়েছে, সংশি¬ষ্ট দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বর্ণিত অবৈধভাবে বালু উত্তোলন কার্যক্রম ফৌজদারি অপরাধ মর্মে আপাতদৃষ্টিতে আদালতের নিকট প্রতিয়মান হয় এবং উক্তরূপ কার্য বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১০ এর ৪ ধারার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন যা উক্ত আইনের ১৫ ধারার অধীন শাস্তিযোগ্য। উপর্যুক্ত অবস্থাধীনে প্রকাশিত সংবাদের প্রেক্ষিতে বর্ণিত অপরাধ দ্যা কোড অব ক্রিমিনাল প্রসিডিউর ১৯৯৮ এর ১৯০ (১) (সি) ধারায় আমলে গ্রহণ করা হলো এবং ঘটনার পারিপার্শ্বিক বিষয়াদি বিবেচনায় এই আইনের ১৫৬ (৩) ধারার অধীনে সত্যতা অনুসন্ধানের জন্য বিস্তারিত তদন্তের নির্দেশনা প্রদান করা যুক্তিযুক্ত মর্মে আদালত মনে করে।
আদেশে রৌমারী উপজেলায় সর্বমোট কতটি পয়েন্ট হতে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে তার সংখ্যা নির্ণয়, বৈধভাবে বালু উত্তোলনের পয়েন্ট সংখ্যা নির্ণয়, অবৈধভাবে ড্রেজারের মাধ্যমে বালু উত্তোলনকারী ও সহায়তাকারীদের সনাক্ত করে বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১০ এবং বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা বিধিমালা, ২০১১ এর অধীন বিস্তারিত তদন্তপ‚র্বক আগামী ৩০ মে তারিখের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য অফিসার ইনচার্জ (ওসি), রৌমারী কুড়িগ্রামকে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।
তদন্তে দৈনিক মানবকন্ঠ ও দৈনিক সমকাল পত্রিকার রৌমারী প্রতিনিধিসহ প্রকাশিত সংবাদে উলে¬খিত ব্যক্তিবর্গকে সাক্ষী হিসেবে মান্য করার নির্দেশনাও দিয়েছেন আদালত।
প্রসঙ্গত, রৌমারী উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদ, জিঞ্জিরাম ও সোনাভরী নদীসহ উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের শতাধিক পয়েন্টে অবৈধ ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন চলছে। এছাড়াও জেলার সদর, নাগেশ্বরী, উলিপুর, রাজারহাট ও চিলমারী উপজেলায় ধরলা, ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমার তিস্তাসহ প্রায় সবকটি নদ-নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন চলছে। স্থানীয় প্রশাসন কর্তৃক মাঝে মাঝে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হলেও কোনও ভাবেই এসব বালু উত্তোলন নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না। এর ফলে ভাঙন বৃদ্ধি পেয়ে নদ-নদীর গতিপথ পরিবর্তনসহ স্থানীয়দের বসতি ও আবাদি জমি উজার হচ্ছে। পাশাপাশি পরিবেশের ওপর এর বিরূপ প্রভাব সৃষ্টি হচ্ছে।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।