“ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করেই বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে”
🕧Published on:
সেবা ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, স্বাধীনতাবিরোধী ও খুনিরা সবসময় তৎপ’র ‘রয়েছে, তৎপ’র থাকবে। তাদে’র ষড়যন্ত্র চলতে থাকবে। ওই ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করেই আমাদে’র অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে হবে। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। এদেশে’র মানুষে’র ভাগ্য নিয়ে আ’র কেউ ছিনিমিনি খেলতে পা’রবে না। কাজেই একটা দৃঢ় আত্মবিশ্বাস নিয়ে চলবেন।
গতকাল বিকালে মালদ্বীপে প্রবাসী বাংলাদেশিদে’র দেওয়া নাগরিক সংবর্ধনায় ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।
সবা’র সঙ্গে বন্ধুত্ব, কা’রও সঙ্গে বৈরিতা নয়- বাংলাদেশে’র এ প’ররাষ্ট্র নীতি’র কথা স্ম’রণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বিশেষ করে মালদ্বীপে’র সঙ্গে আমাদে’র খুব ভালো সম্পর্ক তৈরি হয়েছে।
এখানে যাতে আমরা ‘রপ্তানি ক’রতে পারি, ব্যবসা-বাণিজ্য চালাতে পারি সে বিষয়টিও আমরা দেখছি।
প্রবাসীদে’র সমস্যা সমাধানে’র আশ্বাস দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, প্রবাসীদে’র কল্যাণ করা তাঁ’র স’রকারে’র দায়িত্ব। মালদ্বীপে প্রবাসী বাংলাদেশিরা বর্তমানে যে সমস্যাগুলো’র সম্মুখীন হচ্ছেন তা’র সমাধানে স’রকা’র ব্যবস্থা নেবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মালদ্বীপে’র প্রেসিডেন্টে’র সঙ্গে আমি একটি সফল দ্বিপক্ষীয় আলোচনা করেছি। অনথিভুক্ত বাংলাদেশি শ্রমিকদে’র বৈধ করা’র বিষয়টি সে সংলাপে প্রাধান্য পেয়েছে। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দিতে মালদ্বীপে’র বিভিন্ন অঞ্চল থেকে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ইস্কান্ধা’র স্কুল অডিটোরিয়ামে, মালে চাঁদনী মাগুতে সমবেত হন।
প্রধানমন্ত্রী মালদ্বীপে তাঁ’র আবাসস্থল থেকে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানে ভাষণ দেন।
প্রবাসী আহমেদ
মুত্তাকি’র সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন মালদ্বীপে বাংলাদেশ দূতাবাসে’র রাষ্ট্রদূত রিয়া’র অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ নাজমুল হাসান, মালদ্বীপ আওয়ামী লীগে’র সভাপতি দুলাল মাদব’র।
১৫ আগস্টে’র খুনিদে’র বিচা’র চাওয়া’র অধিকা’র ছিল না : আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এখন অনেকে মানবাধিকারে’র কথা বলেন, ন্যায়বিচারে’র কথা বলেন। অথচ ১৫ আগস্টে’র খুনিদে’র বিচা’র চাওয়া’র কোনো অধিকা’র আমাদে’র ছিল না।
তিনি বলেন, দীর্ঘ সময় দেশে’র বাইরে থাকতে হয়েছে। খুনিদে’র ইনডেমনিটি দিয়ে বাঁচানো হচ্ছিল। তখন শত বাধা ডিঙিয়ে দেশে ফিরেছিলাম।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখনো তাদে’র ষড়যন্ত্র থেমে নেই। বা’রবা’র আমাকে হত্যা’র চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু এদেশে’র মানুষে’র ভাগ্য বদল ক’রব, এটাই আমা’র প্রতিজ্ঞা। এ সময় দেশে’র উন্নয়নে’র মাধ্যমে খুনিদে’র জবাব দিতে চাই বলে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, স্বাধীনতাবিরোধীরা
এখনো তৎপ’র। তাদে’র ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করেই দেশে’র অগ্রযাত্রা
ধরে রাখতে হবে। আত্মবিশ্বাস নিয়ে
চলবেন, কেউ দেশে’র মানুষে’র
ভাগ্য নিয়ে আ’র ছিনিমিনি
খেলতে পা’রবে না।
দালালে’র মাধ্যমে বিদেশে যাবেন না : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশে’র যারা প্রবাসে যান, সবাই কিন্তু সঠিকভাবে যান না। দালাল-টালাল ধরে, বাড়িঘ’র বিক্রি করে, বন্ধক রেখে তা’র পরে যান। যে আশা নিয়ে তারা যান, সেই বেতন পান না।
অনেককেই মানবেত’র জীবনযাপন ক’রতে হয়। কষ্ট ভোগ ক’রতে হয়। যে বেতনে’র কথা বলে নিয়ে যাওয়া হয়, যাওয়া’র পরে সেই বেতন পাওয়া যায় না। অনেক সময় কাজও পান না। থাকা-খাওয়া’র জায়গা নিয়ে নানা অসুবিধায় পড়তে হয়।
সুতরাং দালালে’র মাধ্যমে বিদেশ যাবেন না। তিনি বলেন, দালালদে’র বিভিন্ন প্রলোভনে অনেক বাংলাদেশি বিদেশে গিয়ে মানবেত’র জীবনযাপন ক’রতে বাধ্য হন। তাই ইচ্ছুকদে’র বৈধভাবে বিদেশ যাওয়া’র অনুরোধ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, যারা বিদেশে আসতে চান, তারা যেন কোনো দালাল ধরে না আসেন। যেন বৈধভাবে আসা’র চেষ্টা করেন। এখন ডিজিটাল বাংলাদেশ।
সারা দেশে ডিজিটাল সেন্টা’র
করে দিয়েছি। সেখানে নিবন্ধন করা’র সুযোগ আছে। এই তালিকা
প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে’র কাছে আছে। তা’র
মাধ্যমে আসতে পা’রবেন।
পৃথিবী’র বিভিন্ন দেশে প্রায় ১ কোটি বাংলাদেশি কাজ করে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাড়িঘ’র বিক্রি করে দালালে’র হাতে টাকা দেওয়া’র কোনো দ’রকা’র নেই। বরং প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে লোন নেওয়া যাবে। ক্ষেত্রবিশেষে এই লোন কোনো জামানত ছাড়াই দেওয়া হয়।
ধীরে ধীরে সেই ব্যাংকেই লোন শোধ করে দেবেন। স’রকা’র প্রধান বলেন, সব সুযোগ আমরা করে দিয়েছি। তা’রপ’রও মানুষে’র মাঝে একটা প্রবণতা আছে, কেউ এসে সোনা’র হরিণ ধরা’র সুযোগ দেখাল, সবাই সেই পথে দৌড়ালেন।
তা’রপ’র বিপদে পড়েন। অনেক সময় মৃত্যু
পর্যন্ত হয়। এ’রকম বহু
ঘটনা ঘটে। এভাবে সোনা’র
হরিণে’র পেছনে ছোটা’র কোনো দ’রকা’র নেই।
দেশে’র মানুষে’র কর্মসংস্থান বাড়াতে স’রকারে’র বিভিন্ন উদ্যোগে’র কথা তুলে ধরেন
তিনি।
মালদ্বীপে
১ লাখ প্রবাসী কাজ
ক’রছেন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ’র মধ্যে কেউ
ব্যবসা ক’রছেন। অনেকে’র সমস্যা আছে। তারা নিজেরা
হঠাৎ চলে আসছেন। এখানে
বৈধভাবে থাকা’র একটা সমস্যা ‘রয়েছে।
এটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
একটা এমওইউ সই করা হয়েছে।
যাতে সমস্যাটা আ’র না হয়।
করোনা’র সময়ে বিশেষ বিমান
পাঠিয়ে ১০ হাজা’র লোককে
ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
মালদ্বীপ
থেকে দেশে টাকা পাঠানো’র
বিষয়ে প্রবাসীরা তাদে’র সমস্যা’র কথা জানান প্রধানমন্ত্রীকে।
তাদে’র সেই সমস্যা সমাধানে
স’রকা’র উদ্যোগ নেবে উল্লেখ করে
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা প্রবাসী কল্যাণ
ব্যাংক করেছি। কিন্তু আমা’র অবাক লাগে, আপনাদে’র
(প্রবাসী) ডলা’র কিনে তা’র পরে
টাকা পাঠাতে হয়। এটা কেন
পাঠাতে হয় আমি জানি
না। দেশে গিয়ে বাংলাদেশ
ব্যাংকে’র গভর্নরে’র সঙ্গে আলাপ ক’রব।
প্রবাসীদে’র
সমস্যা নিয়ে মালদ্বীপে’র প্রেসিডেন্টে’র
সঙ্গে কথা হয়েছে উল্লেখ
করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সমস্যা’র বিষয়ে প’ররাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রবাসী কল্যাণ
মন্ত্রী আপনাদে’র সঙ্গে কথা বলে জেনেছেন।
আমাকেও জানিয়েছেন তারা। দেশে ফেরা’র পরে
অনেকগুলো বিষয়ে আমরা কী কী
করা যেতে পারে, তা
ক’রব। তিনি বলেন, মালদ্বীপে
বাংলাদেশে’র পণ্যে’র ভালো বাজা’র ‘রয়েছে।
তাদে’র রাষ্ট্রপতি’র সঙ্গে কথা হয়েছে। এখানে
কী কী পণ্য আমরা
‘রপ্তানি ক’রতে পারি, তা খতিয়ে দেখছি।
বাংলাদেশ
বিমানে’র জন্য দুটি কার্গো
কেনা’র সিদ্ধান্তে’র কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী
বলেন, বিমানে’র নিজস্ব কোনো কার্গো নেই।
ভাড়া করেই চলে। বিমানে’র
জন্য দুটি কার্গো কেনা’র
সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যদিও করোনাভাইরাসে’র কা’রণে
অসুবিধা হচ্ছে। তবে ভবিষ্যতে কিনব।
এটা হলে মালপত্র পাঠাতে
বেশি সমস্যা হবে না।
শেখ
হাসিনা বলেন, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে’র ডেটাবেস থেকে খোঁজখব’র নিয়ে
প্রবাসে যাবেন। জমি, বাড়ি বিক্রি
করে বিদেশ যাওয়া’র দ’রকা’র নেই। প্রবাসী কল্যাণ
ব্যাংক তৈরি করেছি বিনা
জামানতে বিদেশ যেতে ইচ্ছুকদে’র ঋণ
দিতে। এই ব্যাংক ক’রতে
স’রকা’র থেকে ৪০০ কোটি
টাকা দিয়েছি। এ ছাড়া অন্যান্য
স্বাভাবিক কার্যক্রম চালানো’র সুযোগও দিয়েছি।
প্রবাসীদে’র
উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনাদে’র এখানে চিকিৎসা’র জন্য হাসপাতাল করা
সম্ভব হবে কি না
জানি না। মালদ্বীপ স’রকা’র
এখানে আমাদে’র জমি দেবে কি
না তাও জানি না।
তবে মালদ্বীপে’র শিক্ষার্থীদে’র চিকিৎসা ও শিক্ষায় আ’রও
বেশি বৃত্তি ও সুবিধা আমরা
দেব। তিনি বলেন, ১৯৯৬
সালে ক্ষমতায় আসা’র পরে বেস’রকারি খাতে
বিমান চলাচলে’র সুযোগ করে দিয়েছিলাম। ইতিমধ্যে
একটি বেস’রকারি বিমান মালদ্বীপে আসা শুরু করেছে।
স’রকারি বিমানেও মালদ্বীপে’র সঙ্গে যাতায়াতে’র ব্যবস্থা করা। এটা আমাদে’র
লক্ষ্য আছে। এতে প্রবাসীদে’র
সুবিধা হবে।
শেখ
হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ এখন আ’র কা’রও
কাছে হাত পেতে চলা’র
দেশ না। নিজে’র পায়ে
চলা’র সক্ষমতা অর্জন করেছে। ১৯৯৬ সালে’র আগে
যারা প্রবাসে ছিলেন, তারা ভেবে দেখেন
বিশ্ববাসী তখন কী চোখে
দেখত। আওয়ামী লীগে’র নেতৃত্বে ব্যাপক উন্নয়নে’র পরে এখন এই
দেশে’র মানুষকে কোন চোখে দেখে।
যারা বিদেশে আছেন তাদে’র সম্মানে’র
চোখে দেখে। এখন আ’র তুচ্ছতাচ্ছিল্য
ক’রতে সাহস পায় না।
ভিক্ষুক জাতি হিসেবে দেখতে
সাহস পায় না। দেশে’র
মানুষ সাহস নিয়ে চলে।
এখন আমরা দ’রকষাকষি করেও
চলতে পারি।
দেশে’র উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী তাঁ’র বিভিন্ন পরিকল্পনা’র কথা তুলে ধরে বলেন, আমি থেমে থাকিনি। আমা’রও তো বয়স হয়েছে। যে কোনো সময় চলে যেতে হতে পারে। তাছাড়া আমা’র ওপ’র তো খড়গহস্ত আছেই। বা’রবা’র মৃত্যু’র মুখোমুখি হতে হয়েছে। বোমা, গুলি, গ্রেনেড সবই হয়েছে। সবই হজম করেছি। কা’রণ, আমি তো জাতি’র পিতা’র মেয়ে। কাউকে ডরাই না। আল্লাহ’র প্রতি বিশ্বাস আছে। দেশ ও জনগণে’র উন্নয়ন ভাবনা সবসময় কাজ করে আমা’র চিন্তায়-চেতনায়।
0comments
মন্তব্য করুন
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।