করোনার টিকা সব শিক্ষার্থীকে নিতে হবে: প্রধানমন্ত্রী
🕧Published on:
সেবা ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনাভাইরাসে’র সংক্রমণ আবা’রও বেড়ে যাওয়ায় শঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, নতুনভাবে যাতে আবা’র সংক্রমিত না হয় তা’র ব্যবস্থা এখন থেকেই আমাদে’র নিতে হবে। কাজেই কেউ যেন টিকা’র বাইরে না থাকে, সবাইকে কিন্তু এই ভ্যাকসিন নিতে হবে। কেউই টিকা দেয়া’র কাভারেজে’র বাইরে না থাকে। আ’র অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চালু রাখতে শিক্ষার্থীদে’র ‘যা কিছু প্রয়োজন’ তা’র ব্যবস্থা ক’রতে হবে।
বৃহস্পতিবা’র
এসএসসি ও সমমানে’র পরীক্ষা’র
ফল প্রকাশ এবং প্রাথমিক ও
মাধ্যমিকে’র বই বিত’রণ অনুষ্ঠানে’র
উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী আ’রও বলেন, আমাদে’র
অনলাইন শিক্ষাটা, এটা চালু রাখতেই
হবে। কা’রণ করোনা কখনও বাড়ছে, কখনও
কমছে। আমরা সব সময়
যেটা লক্ষ্য ক’রছি, শীতে’র প’রপ’র এ’র প্রাদুর্ভাবটা আবা’র
বেড়ে যায়। তাই সবাইকে
কোভিড-১৯ টিকা নিতে
হবে। তিনি কমিউনিটি ক্লিনিকে’র
মাধ্যমে তৃণমূল পর্যায়ে টিকাদান অভিযান সহজলভ্য করা’র জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে
নির্দেশ দেন। গণভবন থেকে
ভিডিও কনফারেন্সে’র মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শিক্ষা মন্ত্রণালয় আয়োজিত মূল অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি
অংশগ্রহণ করেন।
শিক্ষার্থীদে’র
কেবল ‘বকাঝকা’ না দিয়ে মানসিক
অবস্থা বুঝে তাদে’র সামলানো’র
পাশাপাশি ‘এক গাদা’ পাঠ্যপুস্তকে
আটকে না থাকা’র পরামর্শ
দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিক্ষার্থীদে’র মানসিক স্বাস্থ্যে’র বিষয়ে দেশে’র শিক্ষক এবং অভিভাবকদে’র অনেকেই
সচেতন নন। এ বিষয়ে
দুই লাখ শিক্ষককে প্রশিক্ষণ
দেয়া হয়েছে। প্রত্যেকটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অন্তত শিক্ষার্থীদে’র একটা পরীক্ষা নেয়া
দ’রকা’র মানসিক বিশেষজ্ঞদে’র দিয়ে, যে কা’র ভেতরে
কী ধ’রনে’র সমস্যাটা আছে। শুধু ধমক
দেয়া না বা তাদে’র
বকাঝকা না, তাদে’র অবস্থাটা
বুঝে তাদে’র সঙ্গে সেইভাবেই আচ’রণ ক’রতে হবে। এটা বাবা,
মা, শিক্ষক বা বন্ধু-বান্ধব
সবাইকেই বিষয়টায় সচেতন হতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী
তা’র স’রকারে’র টিকাদান কার্যক্রমে’র প্রসঙ্গ টেনে বলেন, শিক্ষকদে’র
প্রথমে দিয়েছি, এখন শিক্ষার্থীদে’র দিচ্ছি
এবং ১২ বছ’র বয়স
পর্যন্ত যারা তাদে’র সবাইকে
টিকা দেয়া’র ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। টিকা
দেয়া’র ক্ষেত্রে অনেকে’র অনীহা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গতকালই
(বুধবা’র) তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে
কথা বলে ব্যবস্থা নিয়েছেন
সারাদেশে’র কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো’র মাধ্যমে যেন এই টিকাদান
কর্মসূচী অব্যাহত থাকে। যাতে একদম তৃণমূল
পর্যায়ে’র মানুষও যেন দ্রুত টিকা
নিতে পারে। কা’রণ নতুনভাবে যাতে আবা’র সংক্রমিত
না হয় সে ব্যবস্থা
আমাদে’র এখন থেকেই নিতে
হবে। কাজেই কেউ যেন টিকা’র
বাইরে না থাকে, সবাইকে
এই ভ্যাকসিন নিতে হবে।
স’রকা’র
প্রধান বলেন, আজকে এই অনুষ্ঠানে’র
মাধ্যমে আমি আহ্বান জানাব,
আমরা এই টিকাদান কার্যক্রমটা
একদন তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত নিয়ে যেতে চাচ্ছি।
কমিউনিটি ক্লিনিকে’র মাধ্যমেই দেয়া হবে বা
অন্যান্য স্বাস্থ্যকেন্দ্রে’র মাধ্যমে দেয়া হবে। কিন্তু
যারা টিকা নেন নাই
এখনই তাদে’র টিকাটা নিতে হবে। পরিবারে’র
শুধু অভিভাবককে নয়, শিক্ষার্থীরাও যাতে
টিকা নেয় সেজন্য ব্যবস্থা
গ্রহণে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী
একই অনুষ্ঠানে দেশে’র প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে’র
শিক্ষার্থীদে’র মাঝে বিনামূল্যে ২০২২
শিক্ষাবর্ষে’র পাঠ্যপুস্তক বিত’রণ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। এবা’র করোনা’র কা’রণে ১ জানুয়ারি সারাদেশে
পাঠ্যপুস্তক উৎসব না হলেও
সেদিন থেকেই দেশে’র সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে
স্বাস্থ্যবিধি মেনে বই বিত’রণ
শুরু হবে এবং ভিড়
এড়াতে একেক দিন একেক
শ্রেণী’র বই প্রদান করা
হবে। এবারে ৪ কোটি ১৭
লাখ ২৬ হাজা’র ৮৫৬
জন শিক্ষার্থী’র মাঝে ৩৪ কোটি
৭০ লাখ ২২ হাজা’র
১৩০ কপি বই বিনামূল্যে
প্রদান করা হবে।
প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা অনুষ্ঠানে ২০২১ সালে’র মাধ্যমিক
স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমানে’র পরীক্ষা’র
ফলাফল প্রকাশ করেন। এ’র আগে মাদ্রাসা
ও কারিগরিসহ ১১টি বোর্ডে’র চেয়া’রম্যানগণ
প্রধানমন্ত্রী’র পক্ষে শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি’র
হাতে ফলাফল তুলে দেন। অনুষ্ঠানে
বিশেষ অতিথি হিসেবে শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি,
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী
মোঃ জাকি’র হোসেন, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে’র
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগে’র
সচিব মোঃ মাহবুব হোসেন
বক্তৃতা করেন।
অনুষ্ঠানে
শিক্ষার্থীদে’র পুষ্টি বিষয়ক সচেতনতা’র ওপ’রও প্রধানমন্ত্রী গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, এক
লাখ শিক্ষক এবং কর্মকর্তাকে পুষ্টি
বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে এবং
দুই লাখ শিক্ষককে মানসিক
স্বাস্থ্য বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। তিনি
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়টি আমাদে’র দেশে’র জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ
আখ্যায়িত করে অনেক শিক্ষার্থী’রও
এই সমস্যা থাকায় লেখাপড়ায় সমস্যায় পড়তে হয়, যা
অনেক সময় সকলে’র অগোচরেই
থেকে যায়। তিনি বলেন,
পাঠ্যপুস্তকে’র এক গাদা পথে
যে শিক্ষা, সেই শিক্ষা না,
শিক্ষাটা পরিবেশ সম্পর্কে, শিক্ষাটা মানসিকতা সম্পর্কে, সকলে’র সঙ্গে চলা’র একটা শিক্ষা সবাইকে
দিতে হবে। সেইভাবেই সবাইকে
ব্যবস্থা নেয়া’র জন্য আমি অনুরোধ
জানাচ্ছি।
বঙ্গবন্ধু’র
সোনা’র বাংলা গঠনে’র জন্য সোনা’র মানুষ
হবে আজকে’র শিক্ষার্থীরা। এজন্য তাদে’র সেভাবে গড়ে তুলতে অভিভাবক
ও শিক্ষকদে’র নজ’র দেয়া’র তাগিদ
দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৪র্থ শিল্প বিপ্লবে’র
যোগ্য নাগরিক আমাদে’র গড়ে তুলতে হবে।
আজকে’র দিনটা প্রত্যেক শিক্ষার্থী’র কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ফলাফল ঘোষণা’র পাশাপাশি নতুন বছরে’র নতুন
বই দেয়া হচ্ছে। বই
হাতে পাওয়া’র আনন্দ আলাদা, নতুন বই মলাট
লাগানো ও তাতে নাম
লেখা, এটা অন্য ‘রকম
অনুভূতি।
তিনি
বলেন, সাধা’রণ শিক্ষার্থীদে’র পাশাপাশি দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী যাতে পিছিয়ে না
থাকে, তাদে’র উপযোগী করেও বই প্রস্তুত
করে দিচ্ছি। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদে’র নিজেদে’র
ভাষায় বই তৈরি করে
দিচ্ছি। এ পর্যন্ত আমরা
তাদে’র ৫টি ভাষা পেয়েছি।
সে ভাষায় বই করে দিয়েছি।
প্রধানমন্ত্রী
বলেন, অনেক সময় কৃষকে’র
ছেলে বড় কর্মকর্তা হয়ে
যাবা’র প’র বাবা’র পরিচয়
দিতে লজ্জা পায়। বিষয়টি অত্যন্ত
দুঃখজনক এবং খুব লজ্জা’র
ব্যাপা’র। বরং সেই বাবাকে
আ’রও বেশি সম্মান দেয়া
উচিত যে বাবা মাথা’র
ঘাম পায়ে ফেলে সন্তানকে
শিক্ষা দিয়ে বড় করেছে।
তাকেই সব থেকে সম্মান
দেয়া উচিত, বরং তা’র সঙ্গে
মাঠে নেমে কাজ করা
উচিত।
কৃষকে’র সেই শিক্ষাকে কাজে লাগিয়ে আ’রও বেশি ফসল ফলানো’র চেষ্টা করা উচিত মন্তব্য করে তিনি বলেন, তাহলে সেটা প্রকৃত শিক্ষা হবে। নিজে দুই পাতা পড়ে একটা ফুল প্যান্ট পড়া’র প’র আ’র মাঠে নামতে পা’রব না, এই মানসিক দৈন্যতাটা বাংলাদেশে’র মানুষে’র মাঝে থাকুক, সেটা আমরা চাই না। সেটা আমরা দেখতে চাই না। এটা একটা মানসিক দৈন্য, এটা মানসিক দারিদ্র্য। এটা যেন না থাকে। সমস্ত কাজকেই সম্মান দিতে হবে।
0comments
মন্তব্য করুন
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।