বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছি: প্রধানমন্ত্রী
🕧Published on:
সেবা ডেস্ক: কীভাবে বঞ্চিত, সুবিধাবঞ্চিতদে’র প্রতি সহানুভূতিশীল হতে হয় এবং কীভাবে তাদে’র জন্য সমৃদ্ধ ভবিষ্যত গড়া’র স্বপ্ন দেখতে হয় তা জাতি’র পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবু’র ‘রহমানে’র কাছ থেকে শিখেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এমন তথ্য জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তিনি (বঙ্গবন্ধু) স্বপ্ন দেখেছিলেন, আবা’রও একটি সোনা’র বাংলা তৈরি করা’র, যেমনটি আমাদে’র ভূমি প্রাচীনকালে পরিচিত ছিল। তিনি গণতন্ত্র, ধর্মীয় সহিষ্ণুতা এবং সামাজিক ন্যায়বিচারে’র আদর্শে’র ভিত্তিতে একটি সমৃদ্ধ দেশ গড়া’র স্বপ্ন দেখেছিলেন। এটি শেষ পর্যন্ত তা’র রাজনৈতিক দর্শনে এবং সারা জীবনে’র আলোবর্তিকা হয়ে উঠেছিল। আমি সবসময় তা’র পরামর্শ ও উদাহ’রণ অনুস’রণ করা’র চেষ্টা করেছি।
প্রধানমন্ত্রী
বিশ্বে’র অন্যতম বৃহত্তম ও অনন্য বিশ্ববিদ্যালয়
প্রেস যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক এমআইটি প্রেস ডাইরেক্টে প্রকাশিত তা’র নিবন্ধে এই
কথা তুলে ধরেছেন।
শেখ
হাসিনা তা’র বাবা’র কথা
উদ্ধৃত করে আ’রও বলেছেন,
‘তুমি কি চটকদা’র, দামি
শাড়ি-গয়না প’রবে? বেশি’রভাগ
মানুষ আজকাল এক বেলা খাবা’রও
খেতে পারে না, আ’র
তুমি কি দেখাতে চাও
তুমি কতটা ধনী? দয়া
করে এগুলো পরিধান ক’রবে না, সাধা’রণ কিছু
পরিধান ক’রবে যাতে তুমি এই
দেশে’র দরিদ্র মানুষে’র সাথে নিজেকে পরিচিত
ক’রতে পারো।’
প্রধানমন্ত্রী
বলেন, তিনি তা’র পিতা
শেখ মুজিবু’র ‘রহমানে’র সেই কথাগুলি কখনই
ভুলতে পা’রবেন না, যাকে জনগণ
ভালবেসে ‘বঙ্গবন্ধু’ বা বাংলাদেশে’র বন্ধু
বলে ডাকে- ১৯৬০ এ’র দশকে
তাকে এই উপাধি দেওয়া
হয়েছিল যাতে প্রতিফলিত হয়
জনগণ তাকে কতটা ভালবাসতো।
এটি কেবল একটি উপাধি
ছিল না বরং, এটি
হচ্ছে মানুষে’র ভালবাসা’র প্রতিফলন।
স্বাধীনতা’র
জন্য ২০ বছরে’র বেশি
সময় ধরে দীর্ঘ ও
কঠো’র সংগ্রামে বঙ্গবন্ধু’র অগ্রণী ভূমিকা ও নিষ্ঠা’র ওপ’র
আলোকপাত করে শেখ হাসিনা
বলেন, মানুষ তা’র মধ্যে এসব
প্রকৃত গুণ দেখতে পেতো
যা তাদে’র স্বাভাবিকভাবে তা’র কাছে আকৃষ্ট
ক’রতো এবং তা’র নেতৃত্ব
ও দিকনির্দেশনা পেতে উৎসাহিত ক’রতো।
স্বাধীনতা’র
জন্য শেখ মুজিবে’র আহ্বান
জনগণে’র হৃদয়ে খুব গভী’রভাবে সাড়া
জাগিয়েছিল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন,
তাই তারা দখলদা’র পাকিস্তানি
বাহিনী’র বিরুদ্ধে সর্বাত্মক যুদ্ধ শুরু করেছিল। পাকিস্তানী
হানাদা’র বাহিনী বাংলাদেশে’র জনগণে’র ওপ’র যে অকল্পনীয়
নৃশংসতা চালিয়েছিল তা কেবল গণহত্যা
হিসাবে বর্ণনা করা যেতে পারে।
১৯৭১ সালে’র ১৬ ডিসেম্ব’র বিজয়
অর্জিত হয় এবং বাংলাদেশ
একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম জাতি
হিসাবে আত্ম প্রকাশ করে।
এইভাবে তা’র পিতা’র সিকি
শতাব্দী ধরে লালন করা
স্বপ্ন পূ’রণ হয়।
অতীতে
বঙ্গবন্ধু’র ঘন ঘন কারাব’রণ
করা’র কা’রণে তিনি (শেখ হাসিনা) ও
তা’র বোন এবং ভাইয়েরা
তাদে’র পিতা’র সাহচর্য থেকে বঞ্চিত হয়েছিলেন,
কিন্তু কখনই তা’র অপা’র
স্নেহ থেকে বঞ্চিত হননি
বলেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি
বলেন, তা’র মা বঙ্গবন্ধু’র
দীর্ঘ রাজনৈতিক সংগ্রামে’র তাকে সর্বাত্মকভাবে সমর্থন
করেছিলেন। তা’র মা তাদে’র
পাশে ছিলেন, তা’র সব সন্তানরা
যাতে সঠিক শিক্ষা পায়
তা নিশ্চিত করেছিলেন। আমরা আমাদে’র বাবাকে
খুব মিস করেছি; তা’র
ঘন ঘন অনুপস্থিতি তা’র
আদর্শবাদে’র প্রতি আমাদে’র আনুগত্যকে আ’রও গভী’র করে
তুলেছে। তিনি কারাবাসে’র কা’রণে
অনুপস্থিত ছিলেন এবং এ’র কা’রণ
কি ছিল আমরা তা
সম্পূর্ণরূপে অবগত ছিলাম। তা’র
আত্মত্যাগ আমাদে’র জন্য অনুরূপ ত্যাগ
স্বীকা’র করা সহজ করে
দিয়েছে।
তিনি
আ’রও বলেছেন যে, ‘আমাদে’র বাবা-মা আমাদে’রক দেশপ্রেমে’র
মূল্য সম্পর্কে শিখিয়েছিলেন এবং আমরা জনগণে’র
প্রতি তা’র গভী’র ভালবাসা
ও আমাদে’র মাতৃভূমি’র স্বাধীনতা’র জন্য তা’র অবিচল
অঙ্গীকা’র উপলব্ধি করেছিলাম। তারা আমরা যাতে
পথ না হারাই এবং
একটি উজ্জ্বল ও উন্নত ভবিষ্যতে’র
আশা না হারাই তা
আমাদে’র জন্য সহজ করে
দিয়েছিলেন। ১৯৭৫ সালে’র ১৫
আগস্ট হত্যাকাণ্ড এবং ১৯৮১ সালে
বাংলাদেশে তা’র ফিরে আসা’র
কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা
বলেন, ‘১৯৭৫ সালে তা’র
পরিবারে’র সকল সদস্য হারানো’র
যে বেদনা তা কাটিয়ে ওঠা
অসম্ভব। তবে বাংলাদেশে’র জনগণে’র
কল্যাণে’র জন্য, আমি আমা’র পরিবারে’র
সদস্যদে’র হারানো’র বেদনাকে বাংলাদেশ গড়া’র প্রয়াসে রূপান্তরে’র চেষ্টা করেছি, যে কা’রণে তারা
আত্মত্যাগ করে গেছেন।’
তিনি
কৃষি, খাদ্য ও পুষ্টিসহ জনগণে’র
মৌলিক চাহিদা পূ’রণে তা’র স’রকারে’র প্রচেষ্টা
ও পদক্ষেপ, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও আশ্রয়ে’র পাশাপাশি
অবকাঠামো’র উন্নয়ন, পরিবেশ ‘রক্ষা, বিদ্যুৎ সুবিধা নিশ্চিত করা, ডিজিটালাইজেশন ও
আধুনিক প্রযুক্তিতে অগ্রগতি সাধন করা, প্রান্তিক
জনগোষ্ঠী’র জন্য সামাজিক নিরাপত্তা
বেষ্টনী নিশ্চিত করা, মানবসম্পদ উন্নয়ন
এবং সামগ্রিক আর্থ-সামাজিক অবস্থা
ও অর্থনীতি’র উন্নতি সাধন করা’র কথা
তুলে ধরেন।
প্রধানমন্ত্রী
বলেন, ‘বাংলাদেশ অবশ্যই এশিয়া’র দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতি’র অন্যতম। জিডিপি বার্ষিক ৬ শতাংশে’র বেশি
হারে ২০১০ সাল থেকে
ধারাবাহিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে; ২০১৯ সালে এটি
শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে, তবে মহামারী’র কা’রণে
একটি ছোট ধাক্কা লেগেছে।
একসময় দেশে খাদ্য ঘাটতি
থাকলেও বাংলাদেশ এখন চাল, অভ্যন্তরীণ
মাছ ও সবজি উৎপাদনকারী
বিশ্বে’র শীর্ষ তিনটি দেশে’র একটি। এটি এখনও দ্রুত
তা’র শস্য উৎপাদনে বৈচিত্র্য
আনছে।
প্রধানমন্ত্রী
তা’র নিবন্ধে উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ বিশ্বে সবজি উৎপাদনে পঞ্চম
এবং মিঠা পানি’র মাছ
উৎপাদনে চতুর্থ বৃহত্তম। সাম্প্রতিক বছ’রগুলোতে বঙ্গোপসাগ’র থেকে সামুদ্রিক মাছে’র
উৎপাদনও বেড়েছে। আমরা গবাদি পশু
ও হাঁস-মু’রগিতে স্বয়ংসম্পূর্ণ।
বাংলাদেশে’র পোশাক বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় এবং দেশ ২০২০
সালে তৈরি পোশাকে’র দ্বিতীয়
বৃহত্তম ‘রপ্তানিকা’রক ছিল। বিদেশে কর্ম’রত
প্রবাসীদে’র রেমিট্যান্স আয় ২০২০ সালে
রেকর্ড ২১ বিলিয়ন মার্কিন
ডলারে পৌঁছেছে, যা বিশ্বে’র অষ্টম
সর্বোচ্চ। তিনি বলেন, দেশে’র
বৈদেশিক মুদ্রা’র রিজার্ভ ৪৭ বিলিয়ন মার্কিন
ডলারে দাঁড়িয়েছে।
শেখ
হাসিনা বলেন, জাতিসংঘে সম্প্রতি একটি প্রস্তাব গৃহীত
হয়েছে যে, বাংলাদেশ শিগগি’রই
স্বল্পোন্নত দেশে’র মর্যাদা থেকে উন্নয়নশীল দেশে
উন্নীত হবে।
তিনি
আরো বলেন, ‘এক দশকে’র মধ্যে
এই আশ্চর্যজনক রূপান্ত’রটি দুর্ঘটনাক্রমে বা অলৌকিকভাবে ঘটেনি।
এটা ঘটেছে পরিকল্পিত প্রচেষ্টা, তৃণমূলে’র উদ্যোগ এবং আমাদে’র জনগণে’র
উদ্যোক্তা মনোভাবে’র কা’রণে, যারা আমাদে’র প্রতিকূলতা
কাটিয়ে উঠতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। এটা
উদ্যোক্তা কৃষক, গার্মেন্টস শ্রমিক এবং বিদেশে প্রবাসীদে’র
কঠো’র পরিশ্রম, ‘রক্ত, পরিশ্রম এবং কান্না’র ফসল।
বিচক্ষণতা’র সাথে স’রকা’র সমন্বিত
ও উৎসাহিত করেছে বলেই ছোট-বড়
উদ্যোগে’র মাধ্যমে এ ফলাফল অর্জিত
হয়েছে।’
তিনি
বলেন, যাইহোক, এই মহামারী চলাকালীন
বাংলাদেশ দুটি বড় মাইলফলক
উদযাপন করেছে। গত বছ’রটি তা’র
বাবা’র ১০০তম জন্মদিন হতো এবং এই
বছ’রটি বাংলাদেশে’র স্বাধীনতা’র সুবর্ণজয়ন্তী।
শেখ
হাসিনা বলেন, ‘আমাদে’র অর্জনে’র দিকে আমি যখন
ফিরে তাকাই, তখন আশা করি
আমা’র বাবা এখন আমাদে’র
দেখতে পাচ্ছেন। আমি জানি যে,
আমরা কতদূ’র এসেছি তা নিয়ে তিনি
কতটা গর্বিত হতেন এবং আমি
জানি তিনি আমাদে’র মনে
করিয়ে দেবেন যে, আ’রও কাজ
ক’রতে হবে। শেখ মুজিবু’র
‘রহমানে’র অদম্য চেতনাই আমাদে’র এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে এবং
আমরা তা’র সকল স্বপ্ন
পূ’রণ না হওয়া পর্যন্ত
বিশ্রাম নেবো না।
0comments
মন্তব্য করুন
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।