জামালপুর সংবাদদাতা: জামালপুরের মেলান্দহে বহুল আলোচিত মা-জয়ফল বেগম (৫৫) এবং মেয়ে আকলিমা আক্তার স্বপ্নাকে (২৫) গলাকেটে হত্যার ঘটনায় মামলা দায়ের হয়েছে।
২ জানুয়ারি বিকেলে নিহত মা জয়ফল বেগমের ভাই বাদি হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় পুলিশ হেফাজতে থাকা নিহত জয়ফলের ছেলে সস্ত্রীক জহুরুল ইসলাম (৩৮) এবং জেসমিন আক্তারসহ (৩২) অজ্ঞাত আরো কয়েকজনকে আসামী করার কথা জানিয়েছেন অফিসার ইনচার্জ মায়নুল ইসলাম।
জয়ফলের আরেক ভাই সোনা মিয়া (৩৫) ও ভাতিজা শফিকুল ইসলাম চৌধুরী জানান-নিহত জয়ফল বেগমের স্বামীর নাম মৃত কামাল হোসেন ওরফে আকমল চৌধুরী। নিহতদের আদিবাস ইসলামপুর উপজেলার সাপধরি ইউনিয়নের কাসারিডোবা এলাকায়। প্রায় বিশ বছর আগে যমুনা নদী ভাঙ্গনের কারণে আকমল চৌধুরীসহ আরো কয়েক ভাই মেলান্দহ পৌরসভার গোবিন্দপুর গাড়োয়ালপাড়ায় জমি কিনে বসবাস করেন।
আকমল চৌধুরীর মৃত্যুর পর তিন ছেলে জহুরুল ইসলাম (৩৮), হাসানুজ্জামান চৌধুরী মিলন (২৬), আ: খালেক চৌধুরী স¤্রাট (২৮) ওমানে চলে যান। মা-জয়ফল দুই মেয়ে আকলিমা বেগম স্বপ্না (২৫) এবং রিক্তা (২০)কে নিয়ে গোবিন্দপুর গাড়োয়ানপাড়ার বাসায় থাকেন। মোবাইল ফোনের পরিচয়ের সূুত্র ধরে পারিবারিকভাবেই যশোরের সবুজ নামে এক শিক্ষকের সাথে স্বপ্নার বিয়ে হয়। অপর মেয়ে রিক্তারও বিয়ে হয় ঢাকার গাজীপুরে।
ইতোমধ্যেই জহুরুল ইসলাম ওমান থেকে ফিরে এসে তার জেঠাত বোন জেসমিন আক্তারকে বিয়ে করেন। তাদের ঘরে এক/দেড় বছরের ১ সন্তানও আছে। সম্পত্তি নিয়ে মা-বোনের সাথে প্রায়ই মনোমালিন্য হতো। এ নিয়ে কয়েকদিন আগে বাড়ির আঙ্গিনায় বেড়া দিয়ে চলাচলের পথ বন্ধ করে দিয়ে জহুরুল ইসলাম শ^শুরালয়ে চলে যান। ওই বাড়িতে অন্য কোন লোক না থাকায় টানা দুইদিন ঘরের দরজা জানালা বন্ধ থাকে। অবাক করার বিষয় হচ্ছে-একই ঘরের এক কক্ষে মা-জয়ফল অপর কক্ষে মেয়ে স্বপ্নার গলাকাটা লাশ রেখে ঘরের বাইরে থেকে তালাবদ্ধ করে দেয়া হয়।
ওদিকে দুই দিন যাবৎ ওমান থেকে জয়ফলের দুই ছেলে স¤্রাট ও মিস্টার মোবাইল ফোনে না পেয়ে তাদের মামা মানিক চৌধুরীকে বিষয়টি জানান। মানিক চৌধুরী গোবিন্দপুরে এসে দরজা জানালা ভেঙ্গে ঘরে প্রবেশ করলে গলাকাটা লাশ দেখে মুষড়ে পড়েন। পুলিশ মা-মেয়ের লাশ উদ্ধার শেষে মর্গে প্রেরণ করেন। রাতেই পুলিশ সুপার নাছির উদ্দিন আহমেদ, র্যাব-সিআইডি-পিবিআইয়ের টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। বর্তমানে পুলিশ হত্যাকন্ডের বাড়িটি ঘিরে রেখেছে।
মামলার আইও এসআই খায়রুল ইসলাম জানান-হত্যাকান্ডের বিষয়ে খুব শক্তিশালী টিম মাঠে কাজ করছেন। অনেকটা অগ্রগতি হয়েছে। অচিরেই হত্যার মুটিভ উদঘাটিত হবে। যা তদন্তের স্বার্থে অনেক কিছুই বলা যাচ্ছে না।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।