গোস্ত ও ডিম উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন বাংলাদেশে
🕧Published on:
সেবা ডেস্ক: মাংস ও ডিম উৎপাদনে বাংলাদেশ স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। মাংস এবং দুধ উৎপাদনে আশাব্যঞ্জক অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। পাশাপাশি দুধ উৎপাদনে আশাব্যঞ্জক অগ্রগতি হয়েছে।
২০২০-২১ অর্থবছরে মাংস উৎপাদন হয়েছে ৮৪.৪০ লাখ টন। আ’র ডিম উৎপাদন হয়েছে ২ হাজা’র ৫৭.৬৪ কোটি। স্বাধীনতা’র ৫০ বছরে মাংস উৎপাদন ১৫ গুণ বেড়েছে। ডিমে’র উৎপাদন বেড়েছে ১২ গুণ। বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএলআ’রআই) গত ১৩ বছরে ৩০টি প্রযুক্তি, মু’রগি’র ৫টি জাত উদ্ভাবন এবং গরু’র ২টি জাত উন্নয়ন করেছে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্রে এ খব’র জানা গেছে। এ প্রসঙ্গে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র নেতৃত্বাধীন স’রকারে’র বিগত একযুগে দেশে প্রাণিসম্পদ খাতে ব্যাপক অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে। কৃত্রিম প্রজননে’র মাধ্যমে গবাদি পশু’র জাত উন্নয়ন ও সম্প্রসা’রণ, পোল্ট্রি ও ডেইরি গবেষণা’র উন্নয়ন, উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি, শিক্ষিত উদ্যোক্তা তৈরি, সহজ শর্তে ঋণ
প্রদান,
প্রণোদনা প্রদানসহ স’রকারে’র নানামুখী পরিকল্পনা বাস্তবায়নে’র কা’রণে এ সাফল্য অর্জিত
হয়েছে। বাংলাদেশ মাংস ও ডিম
উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ এবং দুধ উৎপাদনে
স্বয়ংসম্পূর্ণতা’র দ্বা’রপ্রান্তে। গত ১২ বছরে
দুধ উৎপাদন বেড়েছে প্রায় ৫ গুণ, মাংস
উৎপাদন বেড়েছে প্রায় ৭ গুণ এবং
ডিমে’র উৎপাদন বেড়েছে প্রায় ৪ গুণ।
সূত্র
মতে ২০০৮-০৯ অর্থবছরে
মাংসে’র উৎপাদন ১০.৮০ লাখ
টন থেকে বৃদ্ধি পেয়ে
৮৪.৪১ লাখ টন,
দুধে’র উৎপাদন ২২.৯০ লাখ
টন থেকে বৃদ্ধি পেয়ে
১১৯.৮৫ লাখ টন
এবং ডিমে’র উৎপাদন ৪৬৯.৯১ কোটি
থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০৫৭.৬৪
কোটিতে উন্নীত হয়েছে। ২০২১ সালসহ গত
৫ বছ’র ধরে পবিত্র
ঈদ-উল-আজহায় দেশী
গবাদি পশু দিয়ে শতভাগ
কো’রবানি’র চাহিদা পূ’রণ করা হয়েছে। দেশকে
দুগ্ধ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ করা’র লক্ষ্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে’র
আওতাধীন প্রাণিসম্পদ অধিদফত’র প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন
প্রকল্পে’র মাধ্যমে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি, মার্কেট ভ্যালু চেইন উন্নয়ন এবং
দুধে’র ভোক্তা সৃষ্টিসহ নানা কার্যক্রম বাস্তবায়ন
ক’রছে। আগামী ৪-৫ বছরে’র
মধ্যে দুধে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন
করা সম্ভব হবে বলে আশা
করা হচ্ছে।
মৎস্য
ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে’র আওতাধীন প্রাণিসম্পদ অধিদফত’র গবাদি পশু’র উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি, গবাদি পশু-পাখি’র রোগনিয়ন্ত্রণ
ও প্রতিকা’র, উদ্যোক্তা সৃষ্টি ও দক্ষতা উন্নয়ন,
প্রাণী পুষ্টি উন্নয়ন, প্রাণিজাত পণ্যে’র ভ্যালু চেইন ও বাজা’র
ব্যবস্থাপনা প্রভৃতি ক্ষেত্রে কাজ ক’রছে। স’রকারে’র
দীর্ঘ ও মধ্যমেয়াদী পরিকল্পনাসমূহ
তথা-প্রেক্ষিত পরিকল্পনা (২০২১-৪১), অষ্টম
পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা (জুলাই ২০২০-জুন ২০২৫),
বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা
২১০০ এবং এসডিজি অভীষ্ট
অর্জনে কৃষি খাতে প্রাণিসম্পদ
অধিদফত’র অন্যতম অপরিহার্য অংশীদা’র।
দুধ,
ডিম মাংসে’র চাহিদা ও উৎপাদন ॥
প্রাণিজ আমিষে’র উৎস হিসেবে মাংস
ও ডিমে’র চাহিদা পূ’রণে বাংলাদেশ স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন ক’রছে। বিগত এক যুগে
প্রাণিজ আমিষে’র প্রধান উৎস দুধ, মাংস
ও ডিমে’র উৎপাদন যথাক্রমে প্রায় ৪ গুণ, ৬
গুণ ও ৩ গুণ
বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে
জিডিপিতে প্রাণিসম্পদ উপখাতে’র অবদান ১.৪৪ শতাংশ।
কৃষিজ জিডিপিতে প্রাণিসম্পদ খাতে’র অবদান ১৩.১০ শতাংশ
ও আর্থিক মূল্যে যা’র পরিমাণ ৫০,৩০১ কোটি টাকা।
২০০৮-০৯ অর্থবছরে দুধ,
মাংস ও ডিম উৎপাদন
ছিল যথাক্রমে ২২.৮৬ লাখ
টন, ১০.৮৪ লাখ
টন এবং ৪৬৯.৬১
কোটি, যা ২০২০-২১
অর্থবছরে যথাক্রমে ১১৯.৮৫ লাখ
টন, ৮৪.৪০ লাখ
টন এবং ২০৫৭.৬৪
কোটিতে উন্নীত হয়েছে।
স্বাধীনতা’র
৫০ বছরে মাংস উৎপাদন
১৫ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
ডিমে’র উৎপাদন প্রায় ১২ গুণ বেড়ে
১,৭৩,৬০০ লাখে
উন্নীত হয়েছে যা’র ফলে জনপ্রতি
প্রাপ্যতা বেড়ে ১০৪টি/বছ’র
এ দাঁড়িয়েছে। দুধে’র উৎপাদন প্রায় ১০.৫ গুণ
বৃদ্ধি পেয়েছে এবং দুধে’র জনপ্রতি
প্রাপ্যতা প্রায় ৪.৭ গুণ
বৃদ্ধি পেয়ে ১৭৬.৬৩
মিলি/দিন এ উন্নীত
হয়েছে।
দুধ
উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়া’র লক্ষ্যে কার্যক্রম গ্রহণ ॥ বাংলাদেশকে দুগ্ধ
উৎপাদনে স্বাবলম্বী করা’র লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকে’র ২০০ কোটি টাকা’র
পুনর্অর্থায়ন তহবিলে’র মাধ্যমে পাঁচ শতাংশ হারে
দুগ্ধ খামারিদে’র ঋণ প্রদান কর্মসূচী
চলমান ‘রয়েছে। করোনা দুর্যোগ মোকাবেলায় কৃষি সেক্টরে’র জন্য
বাংলাদেশ ব্যাংকে’র নিজস্ব অর্থায়নে ৫,০০০ কোটি
টাকা’র প্রণোদনা কার্যক্রম বাস্তবায়ন চলছে। দেশে’র ডেইরি শিল্পোন্নয়নে ৪,২৮০ কোটি
টাকা’র ‘প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন
প্রকল্প’ বাস্তবায়ন হচ্ছে।
কৃত্রিম
প্রজনন কার্যক্রম সম্প্রসা’রণ ও গবাদি পশু’র
জাত উন্নয়ন ॥ জাতি’র পিতা
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবু’র ‘রহমানে’র
১৯৭৩ সালে অস্ট্রেলিয়া থেকে
১২৭টি হলস্টিন ফ্রিজিয়ান ষাঁড় আনয়নে’র মাধ্যমে
গবাদি পশু’র উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিতে যুগান্তকারী কৃত্রিম প্রজনন প্রযুক্তি সম্প্রসা’রণ শুরু হয়েছিল, যা’র
ধারা বাহিকতায় উক্ত প্রযুক্তি দেশব্যাপী
এখন সম্প্রসা’রণ হচ্ছে। বর্তমানে দেশব্যাপী ৪,৬৯০টি কৃত্রিম
প্রজনন কেন্দ্র/পয়েন্ট এ’র মাধ্যমে ৪৪.০৯ লাখ গাভীতে
কৃত্রিমভাবে প্রজনন করা হয়েছে। দেশব্যাপী
শুধু স’রকারীভাবে ৫৫ শতাংশ কৃত্রিম
প্রজনন কভারেজ এবং এ খাতে
উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে’র কা’রণে গত দশকে দুধে’র
উৎপাদন উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।
প্রাণিসম্পদ
খাতে’র উন্নয়নে গবেষণা ॥ বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ
গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএলআ’রআই) গত ১৩ বছরে
৩০টি প্রযুক্তি, মু’রগি’র ৫টি জাত উদ্ভাবন
এবং গরু’র ২টি জাত উন্নয়ন
করেছে। বিএলআ’রআই সম্প্রতি উন্নত জাতে’র হিলি মু’রগি ও
মাল্টিকালা’র টেবিলচিকেন উদ্ভাবন করেছে। পোল্ট্রি গবেষণা প্রকল্পে’র আওতায় উটপাখি, তিতি’র নিয়ে গবেষণা চলমান
‘রয়েছে। ব্ল্যাক ব্যাঙ্গল জাতে’র ছাগল উন্নয়নও সম্প্রসা’রণে’র
ফলে বাংলাদশে ছাগল উৎপাদনে বিশ্বে
চতুর্থ ও ছাগল মাংস
উৎপাদনে পঞ্চম অবস্থান অর্জন ক’রছে। বর্তমানে দেশে ২.৬৪
কোটি’র বেশি ছাগল ‘রয়েছে।
গবাদি
পশু-পাখি’র টিকা উৎপাদন ॥
২০০৯-১০ অর্থবছরে গবাদি
পশু’র টিকা উৎপাদন ছিল
প্রায় ৮৯ লাখ ডোজ,
যা ২০২০-২১ অর্থবছরে
বৃদ্ধি পেয়ে প্রায় ২
কোটি ৩১ লাখ ডোজে
উন্নীত হয়েছে। অপ’রদিকে ২০২০-২১ অর্থবছরে
পোল্ট্রি’র জন্য ২৮ কোটি
৭০ লাখ ডোজ টিকা
উৎপাদন করা হয়েছে।
‘রফতানি সক্ষমতা বৃদ্ধিতে মাননিয়ন্ত্রণ ল্যাব স্থাপন ॥ প্রাণিজাত পণ্যে’র মাননিয়ন্ত্রণ এবং ‘রফতানি সক্ষমতা সৃজনে দেশে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত (আইএসও সনদপ্রাপ্ত) কোয়ালিটি কন্ট্রোল ল্যাবরেটরি স্থাপন করা হয়েছে। ল্যাবরেটরিটি ইতোমধ্যে প্রাণিজাতপণ্য ‘রফতানিতে ভূমিকা রাখতে শুরু করেছে। চালু হওয়া’র প্রথম বছরেই ১৪৮৩টি নমুনা’র পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে এবং নমুনা পরীক্ষা’র ফি আদায় বাবদ ৫৮.০৪ লাখ টাকা স’রকারী কোষাগারে জমা প্রদান করা হয়েছে।
0comments
মন্তব্য করুন
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।