সীমান্তহাটে দুর্নীতি: ইউএনওসহ সাতজনের বিরুদ্ধে উকিল নোটিশ
🕧Published on:
শফিকুল ইসলাম : সীমান্তহাটের ব্যবস্থাপনা কমিটির বিরুদ্ধে ভেন্ডার নিয়োগে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে উএনওসহ সাতজনের বিরুদ্ধে উকিল নোটিশ।
রাজিবপুরের সাবেক ইউএনওসহ সাতজনের বিরুদ্ধে সীমান্ত হাটে ভেন্ডার নিয়োগে অনিয়ম- দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
এনিয়ে গত চলতি বছরের ২ফ্রেরুয়ারী আব্দুল আজিজসহ ভুক্তভোগীরা বাদী হয়ে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট কুড়িগ্রামসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগকারীরা কোন প্রতিকার না পেয়ে উচ্চ আদালতের আইনজীবি মোঃ নাজমুল হুদার মাধ্যমে বাণিঁজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ ৭জনের বিরুদ্ধে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
অভিযোগে জানা যায়, জেলা প্রশাসক কুড়িগ্রামের কার্যালয় থেকে সরকারী সীমান্ত হাট ব্যবস্থাপনা কমিটি নীতিমালা অনুযায়ী শর্তপূরন সাপেক্ষে সীমান্ত হাটের জন্য কিছু সংখক ভেন্ডার নিয়োগ করার নোটিশ আহবান করা হয়। এ নিয়োগের নোটিশ পেয়ে রাজিবপুরের প্রায় ৫শতাধিক আগ্রহী প্রার্থী আবেদন দাখিল করেন। আবেদনের পেক্ষিতে হাট ব্যবস্থাপনা কমিটি আবেদনপত্রগুলি যাচাই-বাচাই করার পর তা লটারীর মাধ্যমে ২৫জনের একটি চুড়ান্ত তালিকা তৈরী করেন। তৎকালীন জেলা প্রশাসক কুড়িগ্রাম মোঃ হাবিবুর রহমান কর্তৃক ২৫ জনের ভেন্ডার কার্ডের অনুমোদিত তালিকা প্রকাশ করেন। তারপর রাজিবপুর উপজেলার সাবেক ইউএনও আব্দুল কাদেরসহ কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী ও রাজনৈতিক ব্যক্তির যোগসাজসে অর্থের বিনিময়ে গোপনে তালিকায় ১৭ জনকে ঠিক রেখে ৮জনকে পরিবর্তন করে । পরিবর্তন ব্যক্তিরা হলেন, আব্দুল আজিজ, আব্দুল হালিমা, আব্দুস ছাত্তার, আ: সালাম, কবির উদ্দিন, র্মোশেদুজামান, ইব্রাহিম ও সামছুল আলম। অপরদিকে সেইস্থলে নতুনভাবে অনুমোদন ছাড়াই ৮ জনকে নিয়োগ দেন। তারা হলেন, বাবু মিয়া, সোনা মিয়া, বেলাল হোসেন, হামিদুর রহমান, আব্দুল আজিজ, শফিউল আলম, সায়েদ আলী ও গোলাম মাওলা । এক পর্যায়ে বিষয়টি জানাজানি হলে আব্দুল আজিজসহ ভুক্তভোগীরা বাদী হয়ে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট কুড়িগ্রামসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগকারীরা কোন প্রতিকার না পেয়ে অবশেষে চলতি বছরে ৩মার্চ মাসে উচ্চ আদালতের আইনজীবি মোঃ নাজমুল হুদার মাধ্যমে বাণিঁজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ ৭জনের বিরুদ্ধে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো ব্যবস্থা গ্রহন করেন। নোটিশে সাতদিনের মধ্যে জবাব চাওয়া হয়েছে কেন তাদেরকে বাদ দেয়া হয়েছে। এদিকে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট কুড়িগ্রাম খন্দকার মুদাচ্ছির বিন আলী গত সোমবার রাজিবপুরে সীমান্ত হাটে পরির্দশন করতে এলে অভিযোগকারী বিষয়টি তারকাছে উপস্থাপন করেন।
উল্লেখ্য যে, অনেক ঘটা করে গত ২০১১ সালে ২৩ জুলাই কুড়িগ্রামের রাজীবপুর উপজেলা সদর থেকে সাড়ে ৪ কিলোমিটার দূরে ভারতের কালাইরচর সীমান্তের বিপরীতে বাংলাদেশের বালিয়ামারী সীমান্তে জিঞ্জিরাম নদীর পারে সীমান্তহাট চালু করা হয়। হাটের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশের তৎকালীন বানিজ্যমন্ত্রী লে.কর্নেল (অব.) মোহাম্মদ ফারুক খান এবং ভারতের কেন্দ্রীয় বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী আনন্দ শর্মা। বাংলাদেশ এবং ভারতের ২৫ জন করে ৫০ জন্য বিক্রেতা হাটের ৮টি সেটে দোকান আছে। প্রতেক ক্রেতা ২০০ ইউএস ডলার সমান ১৬হাজার ৯শত টাকার মালামাল ক্রয় করতে পারবে। হাটে কেনা বেচার জন্য উভয় দেশের ৩শত করে ৬শত ক্রেতা এবং ২৫ জন করে ৫০ জন বিক্রেতা থাকার কথা। হাটের গেটে বিজিবির সদস্যরা চেক করে ভিতরে প্রবেশ করাবে। সীমান্ত হাটে দু’দেশের অনুমোদিত ৬৯টি পন্য কেনাবেচা হবে। রাজবিপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার অমিত চক্রবর্তী বলেন, বিষয়টি অনেক পুড়ানো। এ কারণে আমি কিছুই বলতে পারছি না।
এনিয়ে বালিয়ামারী সীমান্ত হাট ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট কুড়িগ্রাম খন্দকার মুদাচ্ছির বিন আলী সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি সীমান্ত হাটে পরির্দশন করতে গিয়েছিলাম। সে সময় তারা আমাকে বিষয়টি বলেছে । বিষযটি পুরানো তারপরও আমি যাচাই-বাচাই করার পর সত্যতা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিব ।
কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ অভিযোগ ও উকিল নোটিশ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন.বিষয়টি অনেক পুরাতন। আমার সময় নতুন করে কিছু ভেন্ডার নিয়োগ করা হবে তারা ইচ্ছা করলে আবেদন করতে পারে তা বিবেচনা করা হবে।
0comments
মন্তব্য করুন
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।