জামালপুর প্রতিনিধি : জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জে মদ খেয়ে মসজিদের ইমামকে গালিগালাজসহ প্রাণ নাশের হুমকী, মসজিদের মূত্রত্যাগ অত:পর উল্টো ইমামকে পুলিশ দিয়ে গ্রেপ্তারের ঘটনায় উত্তেজনা চলছে।
এ ঘটনায় শুক্রবার (৭ এপ্রিল) বাদ জুমা বিক্ষুব্দ মুসুল্লিরা বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে। বিক্ষোভ মিছিলটি বাহাদুরাবাদ সরদারপাড়া জামে মসজিদ থেকে বের হয়ে দেওয়ানগঞ্জ বাজারের প্রদান প্রদান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। পরে মুসল্লিরা দেওয়ানগঞ্জ থানার সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন।
জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার রাত পৌনে আটটার দিকে সরদারপাড়া নাদু বেপারীর ছেলে মাদকাসক্ত জাকির হোসেন সরদারপাড়া জামে মসজিদের ইমাম নুর মোহাম্মদ সোহাগকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শেষে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। বিষয়টি তৎক্ষনাৎ ইমাম নুর মোহাম্মদ সোহাগ মসজিদে এসে তারাবিহের নামাজের পূর্বে মুসল্লিদের জানান। মুসল্লিগণ জাকির হোসেনকে ওই বিষয়ে জবাবদিহিতা করলে জাকির হোসেন গালিগালাজের বিষয়টি অস্বীকার করে তবে মারপিটের হুমকির কথা স্বীকার করে। সে সময় বিষয়টি নিয়ে জাকির হোসেনের অভিভাবককে জানানো হয় এবং পরদিন শুক্রবার বাদ জুমা নেতৃস্থানীয়রা বসে মিমাংসার সিদ্ধান্ত নেন। ওই সময় কিছু উত্তেজিত কিছু মুসল্লি জাকির হোসেনের বাড়িতে ইটপাটলে নিক্ষেপ করে।
এ ক্ষোভে জাকির হোসেন মদ খেয়ে মাতাল অবস্থায় মসজিদে মূত্রত্যাগ করে। মুসল্লিগণকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। এরপর জাকির হোসেন দেওয়ানগঞ্জ থানা পুলিশ এনে মসজিদের ইমাম নুর মোহাম্মদ সোহাগকে ধরিয়ে দেয়। ইমামকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি মুহুর্তেই গ্রামে ছড়িয়ে পড়লে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। দলে দলে বিক্ষুব্ধ মুসল্লিগণ পুলিশের গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ করে। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে পুলিশ ইমাম নুর মোহাম্মদ সোহাগকে ছেড়ে দেন। পুলিশ চলে আসার পর উত্তেজিত গ্রামবাসি মাদকসেবি জাকির হোসেনের বাড়ি ভাঙচুর করে।
মসজিদে মূত্রত্যাগের ঘটনাটি দ্রæত ছড়িয়ে পড়লে শুক্রবার ৭ এপ্রিল বিকেলে সরদারপাড়া গ্রামবাসী ও তৌহিদি মুসলিম জনতা ওই গ্রাম থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলকারিরা ছয় কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে দেওয়ানগঞ্জ থানার সামনে এসে সমাবেশ করেন।
সরদারপাড়া গ্রামের মো. ইয়াদ আলী, নুরু মিয়া বলেন, নেশাখোর জাকির হোসেন রমজান মাসে সেহরির সময় মসজিদের মাইকে রোজাদারদের ডাকতে বাঁধার সৃষ্টি করে। মসমজিদ কমিটিকেও গালিগালাজ করে। মদ-গাঁজা খেয়ে এলাকায় বিভিন্ন অপকর্ম করে আসছে। মসজিদে প্র¯্রাব করেছে। তার শাস্তি চাই।
মসজিদের ইমাম ভূক্তভোগী নুর মোহাম্মদ সোহাগ জানান, মসজিদে প্রসাব করেছে। আমাকেসহ মুসল্লিগণকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে গোটা মুসলিম জাতিকে অপমান করেছে। অভিযুক্ত জাকির হোসেনকে পাওয়া যায়নি। তার মুঠোফোটে কল করা হলে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
ওদিকে দেওয়ানগঞ্জ মডেল থানার ওসি শ্যামল চন্দ্র ধর উপস্থিত মুসুল্লিদের ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের আশ^াস দিলে বিক্ষোভকারীরা শান্ত হয়ে সমাবেশ ভেঙ্গে দেয়। ওসি শ্যামল চন্দ্র ধর জানান, বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।