শামীমুল ইসলাম তালুকদার : বাহুবল উপজেলায় ‘পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচি’উদ্বোধন উপলক্ষ্যে উদ্বুদ্ধকরণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (৩০ মে) সিলেট হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার কর্মসূচিভূক্ত ২৩ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান ও সংগঠকদের নিয়ে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে দিনব্যাপী এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের নিয়মিত পাঠ্যক্রম বহির্ভূত সৃজনশীল বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলার মাধ্যমে মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে সরকারের গৃহীত এ কর্মসূচিটি বাস্তবায়ন করছে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র।
কর্মশালায় বাহুবল উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এস এম আসাদুজ্জামানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মো: রুহুল আমিন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, আলিফ সোবহান চৌধুরী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মো: মাহবুবুর রহমান।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাহুবল উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার সোহেল রানা। মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের টিম ম্যানেজার মোঃ জাফর হোসেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন, অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার আরশাদুল হক, অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার মাহফুজ হাসান ।
স্বাগত বক্তব্যে সোহেল রানা বলেন, আমাদের আগামীর প্রজন্মকে সুন্দর জীবন দিতে হলে তাদেরকে বইমুখী করতে হবে। বই পড়ার কোন বিকল্প নাই। একমাত্র বই পারে সকল খারাপ কাজ থেকে দূরে রাখতে।
কর্মশালার মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন ও ‘পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচি’র কর্মপরিকল্পনা, বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে তুলে ধরে জাফর হোসেন বলেন, উদ্বুদ্ধকরণ কর্মশালার অন্যতম উদ্দেশ্য মাধ্যমিক পর্যায়ের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে তাদের মন এবং বয়স উপযোগী বই পড়ায় আগ্রহী করে তোলা।
পাঠাভ্যাসের প্রসার ও সুযোগ বৃদ্ধি করা। কর্মসূচি পরিচালনার জন্য প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের নির্বাচিত শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ, শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন, বইপড়া শেষে মূল্যায়নের ভিত্তিতে পুরস্কার প্রদান এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লাইব্রেরি টেকসই ও কার্যকর করার লক্ষ্যে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একযোগে কাজ করে যাচ্ছে। বইপড়ার গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে আজকের এই কর্মশালা।
প্রধান অতিথি রুহুল আমিন তাঁর বক্তব্যে তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠ্য বইয়ের পাশাপাশি যে পাঠাভ্যাস বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে এটা খুবই ভালো একটি কাজ। আমরা যদি আমাদের সন্তানদেরকে সঠিক এবং সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে চাই তবে তাদেরকে এ বইগুলো পড়াতে হবে। বর্তমান পৃথিবী হলো প্রতিযোগিতাময়। এখানে নিজের একটা সুন্দর ভবিষ্যৎ পাইতে হলে নিজেকে তৈরি করতে হবে। আর তৈরি হওয়ার প্রধানতম মাধ্যম হলো বই। তাই সকল প্রতিষ্ঠান প্রধানদের কাছে আমার বিশেষভাবে অনুরোধ আপনারা শিক্ষার্থীদের বইগুলো পড়ার জন্য উৎসাহ ও উদ্দীপনা দিবেন। তাহলে সরকারের উদ্দেশ্য সফল হবে এবং আমাদের আগামীর প্রজন্ম আলোকিত হবে।
কর্মশালার সভাপতি এস এম আসাদুজ্জামান তাঁর বক্তব্যে বলেন, বিশ্বব্যাপি কোভিড-১৯ মহামারীর ফলে দীর্ঘদিন সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কারণে অনেক শিক্ষার্থী ড্রপআউট হয়েছে, বইপড়া থেকে ছিঁটকে পড়েছে, তাদেরকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দ্রুত ফেরানোর জন্য সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। বাংলাদেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মাঝে বইপড়ার গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করাসহ, র্যালি, বির্তক প্রতিযোগিতা, উপস্থিত বক্তৃতা ইত্যাদির আয়োজন করার জন্য পরামর্শ দেন। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের কর্মকর্তাদের প্রশংসা করে তিনি আরও বলেন, এমন সুন্দর উদ্যোগ গ্রহণের ফলে মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বইপড়ার সচেতনতা বৃদ্ধি পাবে। তিনি ভবিষ্যতে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সকল কাজে সার্বিক সহযোগিতা করবেন এ মর্মে প্রতিশ্রুতি দেন।
কর্মশালায় বাহুবল উপজেলার কর্মসূচিভূক্ত ২৩ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক ও সংগঠকসহ ৪৬ জন শিক্ষক, স্থানীয় প্রশাসনের বিভিন্ন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন সেকেন্ডারি এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামের (এসইডিপি) অন্তর্ভুক্ত স্ট্রেংদেনিং রিডিং হ্যাবিট অ্যান্ড রিডিং স্কিলস অ্যামাং সেকেন্ডারি স্টুডেন্টস স্কিম-এর মাধ্যমে দেশের ৬৪ জেলার ৩০০ উপজেলার ১৫ হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।