শফিকুল ইসলাম : রৌমারী উপজেলায় অবৈধ নিয়োগ বাতিলের দাবিতে টাপুরচর বালুরগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসী। পরে প্রধান শিক্ষক আব্দুল গনি ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি চাঁন মিয়ার অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন।
বিক্ষোভ শেষে প্রধান শিক্ষক আব্দুল গনির কুশপুত্তলিকা দাহ করেন বিক্ষোভকারীরা। রবিবার সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে উপজেলার দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নের টাপুরচর বালুরগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
এর আগে বিদ্যালয় মাঠে মো. মহি উদ্দিনের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য দেন প্রভাষক খলিলুর রহমান, প্রভাষক মিজানুর রহমান, ব্যাংকার নুরুল ইসলাম, মাষ্টার রফিকুল ইসলাম, ম্যানেজিং কমিটির সদস্য নুরুল হোদা, আশরাফ আলী, শিক্ষক প্রতিনিধি কামরুজ্জামান, আওয়ামীলীগ নেতা শেখ আব্দুল্লাহ, মোখলেছুর রহমান, সহকারি শিক্ষক ইউছুব আলী, আরঙ্গজেব, আমির হামজাসহ অনেকেই।
বক্তরা বলেন, অবিলম্বে এ অবৈধ নিয়োগ ও অবৈধ ম্যানেজিং কমিটি বাতিল করতে হবে। সেই সাথে প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির অপসারণ করতে হবে। যদি তাদের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা না নেয় তাহলে আমরা সামনে আরো কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলবো। আমরা আজ বিদ্যালয়ে তালা লাগিয়েছি। শিক্ষকরা ক্লাস বর্জন করেছেন। আমাদের সন্তানরা বিদ্যালয়ে আগামী দিনগুলোতে আসা বন্ধ করে দিবে। তাই অতিদ্রæত সুষ্ঠু তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার জোর দাবি করছি।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক আব্দুল গনি ও সভাপতি চাঁন মিয়ার ব্যবহৃত মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল করলে রিসিভ করেননি।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাহিদ হাসান খান বলেন, বিদ্যালয়ে তালা ঝুলানোর খবর শুনেছি। এ বিষয়ে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা সরেজমিন তদন্ত করতে যাবেন। পাশাপাশি বিষয়টি খোঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ প্রসঙ্গে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (ডিইও) মো. শামছুল আলম জানান, নিয়োগ সংক্রান্ত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করা হচ্ছে এবং প্রাথমিক একটি তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেয়েছি। তিনি আরও বলেন, অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকরে বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলার প্রস্তুতি চলছে। তিনি আরোও বলেন, বিক্ষোভকারীরা বিদ্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেয়ার বিষয়টি ঠিক করেননি এবং তারা আইন হাতে তুলে নিয়েছেন। তাই তাদের বলছি যতদ্রæত সম্ভব তালা খুলে দেয়ার জন্য। কারন অধিকতর তদন্ত চলছে। ওই প্রধান শিক্ষককের বিরুদ্ধে আরো অভিযোগ রয়েছে বলে জানাগেছে।
প্রসঙ্গত, টাপুরচর বালুরগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ে অফিস সহায়ক পদে প্রধান শিক্ষককের শ্যালিকা মর্জিনা বেগম ও পরিচ্ছনতাকর্মী মিতুরানীকে আয়া পদে কয়েক লাখ টাকার বিনিময়ে গোপনে অবৈধ ভাবে নিয়োগ দিয়েছেন প্রধান শিক্ষক আব্দুল গনি ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি চাঁন মিয়া। নিয়োগ বানিজ্যের তথ্য ১১ মাস পর ফাঁস হলে শিক্ষার্থী, অভিভাবক, শিক্ষক-কর্মচারীরাসহ এলাকাবসী ক্ষোভে ফুঁসে উঠেন। পরে মানবন্ধন, বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেন তারা।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।