সেবা ডেস্ক : আজ ৫ই নভেম্বর মুক্তিযুদ্ধের কিংবদন্তি, পলাশডাঙ্গা যুব শিবিরের সর্বাধিনায়ক, সিরাজগঞ্জ-৪ (উল্লাপাড়া-সলঙ্গা) আসন থেকে বারবার নির্বাচিত জাতীয় সংসদ সদস্য, জাতীয় সংসদের সাবেক প্যানেল স্পিকার, সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি গণমানুষের জননেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল লতিফ মির্জার ১৬তম মৃত্যুবার্ষিকী।
প্রয়াত জননেতার ১৬তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তার জন্মভূমি সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার বংকিরাট গ্রামে লতিফ মির্জা স্মৃতি সংসদ ও পরিবারের পক্ষ থেকে দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এ ছাড়াও উল্লাপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ পৃথক কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে আওয়ামীলীগের দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, কালো ব্যাচ ধারণ, কোরআনখানি খতম, মরহুমের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ, কবর জিয়ারত, বাদ যোহরে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল, স্মৃতিচারণ সভা এবং গণভোজের আয়োজন করা হয়েছে।
তিনি ছিলেন একজন প্রকৃত দেশপ্রেমিক, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, দল ও কর্মী পাগল নেতা। আজ এই জয়প্রিয় জননেতার ১৬তম মৃত্যু বার্ষিকী পালিত হচ্ছে যথাযোগ্য মর্যাদায়।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে তার অবদানঃ ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় সিরাজগঞ্জ জেলার কামারখন্দ থানাকে কেন্দ্র করে পলাশডাঙা যুবশিবির বা লতিফ মির্জা বাহিনী নামে একটি সংগঠন গড়ে ওঠে। বেসরকারি এই যুদ্ধ শিবিরের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন আবদুল লতিফ মির্জা। ৭টি রাইফেল ও ১৫ জন যোদ্ধা নিয়ে যাত্রা শুরু করলেও এক সময় অস্ত্র সংখ্যা দাঁড়ায় ১ হাজার এবং যোদ্ধা সংখ্যা ৮ হাজারের বেশি উন্নীত হয়। মূলত সিরাজগঞ্জ ,বগুড়া, নাটোর, রাজশাহী, পাবনা এলাকা জুড়ে লতিফ মির্জা বাহিনী পাকিস্তান আর্মিদের সাথে যুদ্ধ করেন। চলনবিলের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে ছিলো তাদের শক্ত ঘাঁটি। লতিফ মির্জা বাহিনীর উল্লেখ যোগ্য যুদ্ধ সংগঠিত হয়- কাশিনাথপুর ডাব বাগানের যুদ্ধ, ইটনা যুদ্ধ, ফরিদপুর থানা যুদ্ধ, সাঁথিয়া যুদ্ধ, কামারখন্দ যুদ্ধ, উল্লাপাড়ার ঘাটিনা যুদ্ধ এবং নওগাঁ যুদ্ধ। এছাড়াও অনেক স্থানে তারা যুদ্ধ করেন।
রাজনৈতিক জীবনঃ আবদুল লতিফ মির্জা মুক্তি বাহিনীর একজন অন্যতম সদস্য ছিলেন। তিনি ৬ দফা আন্দোলন, ভাষা আন্দোলন, ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নিয়ে পলাশ ডাঙ্গা যুব শিবির পরিচালনা করেন। এছাড়াও তৎকালীন সকল রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে তাহার ছিল সক্রিয় ভূমিকা। তার ব্যক্তিগত রাজনৈতিক জীবন ছিল মেহনতী মানুষের জন্য।
১৯৭৯ সালের দ্বিতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ জাসদ দলীয় প্রার্থী হিসেবে তৎকালীন পাবনা-৪ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ১৯৯৬ সালে সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের প্রার্থী হিসেবে সিরাজগঞ্জ-৪ আসন থেকে সংসদ সদস্য পদে আবারও নির্বাচিত হন তিনি।
আবদুল লতিফ মির্জা ৫ নভেম্বর ২০০৭ সালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। দক্ষ সংগঠক হিসেবে আব্দুল লতিফ মির্জা সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের পূর্ব বংকিরাট গ্রামে ২৫ জুন ১৯৪৭ সালে জন্ম গ্রহন করেন। তার বাবার নাম মরহুম মির্জা মেনহাজ উদ্দিন। মৃত্যুকালে তিনি এক মেয়ে, এক ছেলে ও স্ত্রী সহ বহু শুভাকাঙ্ক্ষী রেখে মারা যান। তার মেয়ের নাম সেলিনা মির্জা মুক্তি। তিনি উল্লাপাড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করছেন। আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ দলীয় নৌকা প্রতীকের মনোনয়ন প্রত্যাশী হয়ে তিনি মাঠে ময়দানে কাজ করে যাচ্ছেন।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।