অতিরিক্ত ওজন-ক্যানসার প্রতিরোধে সাহায্য করে রোজা

Seba Hot News : সেবা হট নিউজ
0

সেবা ডেস্ক: এই মুহুর্তে যারা অতিরিক্ত ওজনের সমস্যাসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছেন, তাদের জন্য রমজান মাসের রোজা হতে পারে সেরা সময়। 

অতিরিক্ত ওজন-ক্যানসার প্রতিরোধে সাহায্য করে রোজা



এ সময় রোজা রেখে ও কিছু নিয়ম অনুসরণ করতে পারলে শারীরিক অনেক সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সহজ হবে।

গবেষণায় দেখা গেছে, রোজা রেখে বেশ কয়েকটি নিয়ম মানলে দ্রুত অতিরিক্ত ওজন ও ক্যানসার প্রতিরোধে সাহায্য করে রোজা ।

তো আর দেরি না করে জেনে নিন কীভাবে

বেশি বেশি পানি পান করা: এবারের রমজান পালিত হচ্ছে গরমের মধ্যে। আর গরমে দীর্ঘক্ষণ পানি না খাওয়ার ফলে সহজেই পানিশূন্যতার সৃষ্টি হয়। তাই সুস্থ থাকতে পর্যাপ্ত পানি পান করার বিকল্প নেই।

গবেষণায় দেখা গেছে, পর্যাপ্ত পানি পান করলে দ্রুত ওজন কমে। দিনে অন্তত ৮ গ্লাস পানি পান করা পানিশূন্যতা প্রতিরোধে সাহায্য করে। এতে চিনির লোভও নিয়ন্ত্রণে থাকে।

গবেষণায় আরো জানা যায়, গরমে পর্যাপ্ত পানি পান না করলে ডিহাইড্রেশন হতে পারে। যা মানসিক বিভ্রান্তি বা ক্লান্তির সৃষ্টি করে। রমজানে ওজন কমাতে চাইলে ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় যেমন কফি ও চা এড়িয়ে চলার চেষ্টা করতে হবে। কারণ এগুলো মূত্রবর্ধক, ফলে শরীর আরো বেশি পানি হারায়।

স্বাস্থ্যকর খাবার খান: সেহরির খাবার খুবেই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এ খাবারের ওপর নির্ভর করেই কিন্তু আপনাকে সারাদিন রোজা রাখতে হয়। তাই সেহরির খাবার স্বাস্থ্যকর হওয়া উচিত। যাতে রোজা রেখে সারাদিন পর্যাপ্ত শক্তি পাওয়া যায়।

এক্ষেত্রে সাদা রুটি, ভাত বা পনিরের বিকল্প হিসেবে পুরো শস্যজাতীয় কার্বোহাইড্রেটসহ একটি সুষম খাবার খান। এতে আপনি দীর্ঘ সময়ের জন্য পূর্ণ বোধ করবেন। আবার রক্তে একটি স্থিতিশীল গ্লুকোজের মাত্রাও নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

আর ভুলেও কখনো সেহরির খাবার পুরোপুরি এড়িয়ে যাবেন না। এতে আপনি অতিরিক্ত ক্ষুধার্ত হবেন ও সূর্যাস্তের পরে রোজা ভাঙার সময় অতিরিক্ত খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন।

লোভনীয় নয়, পুষ্টিকর খাবার খান: ইফতারে সবাই ক্ষুধার্ত থাকেন। তাই রোজা ভাঙতেই লোভনীয় সব খাবার মুখে পুড়েন আগে। তবে ওজন কমাতে চাইলে আপনাকে পেট ভরাতে হবে স্বাস্থ্যকর খাবার দিয়ে।

শর্করাযুক্ত উচ্চ ফাইবার খেজুর খেয়ে ধীরে ধীরে আপনার রোজা ভাঙুন। ম্যাগনেসিয়াম ও প্রোটিন সমৃদ্ধ হওয়ায় খেজুরের পুষ্টিগুণ বেশি। এরপর পানি পান করুন পর্যাপ্ত। তারপর ধীরে ধীরে সহজে হজমযোগ্য খাবার যেমন স্যুপ ও সালাদ খান।

সবশেষে কার্বোহাইড্রেট ও প্রোটিনের সঙ্গে ভারসাম্যপূর্ণ খাবার গ্রহণ করুন। আর অবশ্যই পাতে শাকসবজি রাখুন। উচ্চ ক্যালরিযুক্ত ভাজাপোড়া বা চর্বিযুক্ত খাবার এড়িয়ে যেতে হবে।

লবণ ও চিনি এড়িয়ে যান: লবণ ও চিনি খাওয়া সীমিত করুন। গবেষণায় দেখা গেছে, খাদ্যতালিকায় লবণ সীমিত করলে দ্রুত ওজন কমানো সম্ভব। নোনতা খাবার যেমন- টিনজাত খাবার, লবণযুক্ত স্ন্যাকস ও মসলাদার খাবার এড়িয়ে চলুন। এটি দিনের বেলায় আপনার তৃষ্ণা আরো বাড়িয়ে দেবে।

রমজান অনেকের ঘরেই মিষ্টির বিভিন্ন পদ তৈরি হয়। এ সময় মিষ্টি খাবারের প্রতি আগ্রহও অনেক বেড়ে যায়। তবে ওজন কমাতে চাইলে মিষ্টিকে না বলতে হবে। মিষ্টি খাবার ও পানীয়তে প্রক্রিয়াজাত শর্করা থেকে দ্রুত ওজন বাড়িয়ে দেয়।

আপনি যখন চিনিযুক্ত খাবার খান, তখন শরীর সেগুলোকে ভেঙে ফেলে ও দ্রুত বিপাক করে। ফলে আপনি তাড়াতাড়ি ক্ষুধার্ত বোধ করবেন। মিষ্টি খাবারের চাহিদা মেটাতে ফল, শুকনো ফল ও মধুর মতো প্রাকৃতিক শর্করাযুক্ত খাবার বেছে নিন।

প্রক্রিয়াজাত ও ভাজাপোড়া খাবার খাবেন না: প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলুন। এতে চর্বি, লবণ, চিনি ও ক্যালোরি বেশি থাকে। গবেষণায় দেখা গেছে, প্রক্রিয়াজাত খাবার যেমন- ফাস্ট ফুড ও প্যাকেটজাত খাবার দ্রুত ওজন বাড়ায়।

এসবের পরিবর্তে শস্য, প্রোটিন, শাকসবজি, ফল, চর্বিহীন মাংস ও স্বাস্থ্যকর তেল রাখুন খাদ্যতালিকায়। প্রয়োজনে নিজে স্বাস্থ্যকর উপায়ে খাবার তৈরি করুন। ঘরের তৈরি খাবার খেলে দ্রুত ওজন কমাতে পারবেন।

শরীরচর্চা করুন: নিজেকে সক্রিয় রাখুন। ইফতারের কিছুক্ষণ আগে ব্যায়াম করলে আপনি অনেকটা ক্যালোরি বার্ন করতে পারবেন। এমন সময়ে ব্যায়াম করুন, যাতে শরীরচর্চা শেষ করেই ইফতারে বসতে পারেন। আবার তারাবির নামাজ পড়ার মধ্য দিয়েও অনেকটা ক্যালোরি বার্ন হয়। তাই নিয়মিত নামজ পড়ুন।

নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখুন: ধৈর্য ধরুন ও নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করুন। যেহেতু রমজান আত্মত্যাগের মাস, তাই এই মাসে যাবতীয় বদ অভ্যাস যেমন-ধূমপান, অস্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণসহ ইত্যাদি অভ্যাস থেকে দূরে থাকুন। এই মাস থেকেই নিজেকে বদলানো শুরু করুন। স্বাস্থ্যকর খাবার পরিমাপ করে খান ও সক্রিয় থাকুন।

বিরতিহীন রোজা রাখার উপকারিতা: গবেষণায় দেখা গেছে, এর মাধ্যমে ওজন কমানো সম্ভব, করোনারি ধমনী রোগ ও ডায়াবেটিসও নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। ফলে দীর্ঘায়ু বাড়াতে পারে রোজা।

অন্যান্য গবেষণায় দেখা যায়, বিরতিহীন উপবাস প্রদাহ কমাতে পারে। প্রাণীদের ওপর প্রাথমিক গবেষণায় জানা গেছে, রোজা ক্যানসার প্রতিরোধেও সাহায্য করে।
ট্যাগস

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top