আ’লীগ সরকারের সঙ্গে বাইডেন প্রশাসনের পুনঃসংযোগ স্থাপন

Seba Hot News : সেবা হট নিউজ
0

সেবা ডেস্ক: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু’র এবারের বাংলাদেশ সফরকে আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে বাইডেন প্রশাসনের পুনঃসংযোগ স্থাপন হিসাবে অভিহিত করেছেন কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা। 

আ’লীগ সরকারের সঙ্গে বাইডেন প্রশাসনের পুনঃসংযোগ স্থাপন



তারা বলছেন, বাস্তবতার নিরিখে এই সফর খুবই স্বাভাবিক ঘটনা। ঢাকা-ওয়াশিংটন সম্পর্ককে সামনের দিকে এগিয়ে নেওয়ার প্রশ্নে সফরটি খুবই ইতিবাচক।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক বিভাগের প্রধান হিসাবে ডোনাল্ড লু দক্ষিণ এশিয়া সফরের অংশ হিসাবে গত ১৪ মে তিন দিনের সফরে ঢাকায় আসেন। এবার ঢাকায় আসার আগে তিনি ভারত ও শ্রীলংকা সফর করেছেন। কলম্বো থেকে সরাসরি ঢাকায় আসার পর সরকার ও বেসরকারি পর্যায়ে বিভিন্নস্তরের ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
(ads1)
ররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরীর সঙ্গেও লু’র আলাদা আলোচনা হয়েছে। পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন মার্কিন এই কর্মকর্তাকে মধ্যাহ্নভোজে আপ্যায়িত করেন। নাগরিক সমাজের কয়েকজন প্রতিনিধির সঙ্গে ডোনাল্ড লু চা-চক্রে মিলিত হয়েছিলেন।

জানতে চাইলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ড. ইফতেখার আহমদ চৌধুরী বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বলেন, ‘এটা তার (ডোনাল্ড লু) রুটিন সফর। এটা যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশে নতুন সরকারের সঙ্গে কাজ করার আগ্রহ জানানোর সফর। এটা পুনঃসংযোগ স্থাপনের সফর। অভিন্ন স্বার্থে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ ঘটেছে এই সফরের মাধ্যমে। ফলে এই সফরের কারণে অবাক হওয়ার কিছু নাই। বরং এই ধরনের সফর না হলেই অবাক হতাম’।
(ads2)
বিগত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বাইডেন প্রশাসনের তরফে বাংলাদেশের ওপর চাপ সৃষ্টি করে। তারা অবাধ, সুষ্ঠু ও অহিংস নির্বাচন অনুষ্ঠানে কেউ বাধা সৃষ্টি করলে তার বিরুদ্ধে ভিসানীতি প্রয়োগ করা হবে বলেও ঘোষণা দেয়। এসব কারণে বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন মহল যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ক্ষুব্ধ হয়। বিশেষ করে ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের ভূমিকা পক্ষপাতদুষ্ট বলেও আওয়ামী লীগ ও ক্ষমতাসীন জোটের তরফে প্রকাশ্যেই বলা হয়েছিল। ভিসানীতির পর বাইডেন প্রশাসন আরও কঠিন পদক্ষেপ নিতে পারে বলেও বিভিন্ন ধরনের কথা চাউর হয়। নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি বলে যুক্তরাষ্ট্র মতামত প্রকাশ করলেও প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন চিঠি দিয়ে শেখ হাসিনার সঙ্গে বিভিন্ন ইস্যুতে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেন। ডোনাল্ড লু’র সফর সেই ধারাবাহিকতার অংশ।

লু বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র আস্থা ও বিশ্বাস স্থাপনে আগ্রহী। নির্বাচন ঘিরে যে টেনশন হয়েছিল সেটাকে অতীত হিসাবে অভিহিত করে সামনে তাকাতে বলেছেন। দুর্নীতিরোধ করাসহ বিভিন্ন বিষয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে একত্রে কাজ করার আগ্রহ ব্যক্ত করেছেন।

কী কারণে বাইডেন প্রশাসনের অবস্থানে এই পরিবর্তন জানতে চাইলে ড. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘আমেরিকানরা বাস্তবতায় বিশ্বাস করেন। তারা বাস্তবতা মেনে নিয়েছেন। বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতে এটা একটা নতুন সূচনা’। সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, সরকারের সঙ্গে আস্থার সম্পর্ক স্থাপনে স্পর্শকাতরতা বিবেচনায় নিয়ে বিএনপি কিংবা বিরোধী কোনো রাজনৈতিক পক্ষের সঙ্গে লু বৈঠক করেননি। তবে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে চা-চক্রে শ্রম ও মানবাধিকার, নির্বাচনপরবর্তী রাজনৈতিক পরিস্থিতি, দুর্নীতি, শাসনব্যবস্থার চিত্র প্রভৃতি বিষয়ে জানার চেষ্টা করেছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক আমেনা মহসিন বলেছেন, শ্রম ও মানবাধিকার, শাসন ব্যবস্থা, স্বচ্ছতা প্রভৃতি যেসব বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ আছে; ওই সব বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ থাকবে। পাশাপাশি, সরকারের সঙ্গেও কাজ করবে যুক্তরাষ্ট্র। এটাই এই সফরের বার্তা।

বিশ্লেষকরা মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন, গাজা ও ইউক্রেন পরিস্থিতি এবং এই অঞ্চলে চীনের উত্থান ঘটার কারণে বাইডেন প্রশাসনের নীতিতে কিছুটা পরিবর্তন এসেছে। চীনের প্রভাব মোকাবিলায় ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি বাস্তবায়নে বাংলাদেশকে পাশে চাইছে যুক্তরাষ্ট্র।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top